নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০ জানুয়ারি ওয়াশিংটনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন। ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা। অনুষ্ঠানে প্রযুক্তি দুনিয়ার অনেক তারকাও অংশ নেবেন বলে জানা গেছে।

অভিষেক অনুষ্ঠানে মেটার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মার্ক জাকারবার্গ, ওপেনএআইয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্যাম অল্টম্যান, উবারের প্রধান নির্বাহী দারা খোসরোশাহীসহ বিভিন্ন প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তারা অংশ নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে মেটা ও অ্যামাজন উভয় প্রতিষ্ঠানই অভিষেক অনুষ্ঠানের বিশেষ তহবিলে ১০ লাখ মার্কিন ডলার অনুদান দিয়েছে। অন্যদিকে ওপেনএআইয়ের প্রধান স্যাম অল্টম্যান ব্যক্তিগতভাবে ১০ লাখ মার্কিন ডলার দিয়েছেন।

গত ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হন রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ট্রাম্প। এরপর গত কয়েক মাসে বেশ কয়েকজন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করেছেন। ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার আগে মার্ক জাকারবার্গ দুবার ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করেছেন। এরই মধ্যে ট্রাম্পের কারণে ফেসবুকের বেশ কিছু নীতিরও পরিবর্তন করেছে মেটা। গুগলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুন্দর পিচাই, অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা টিম কুক এবং অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোসও ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করেছেন। মূলত দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর ট্রাম্পের সঙ্গে দূরত্ব কাটানোর চেষ্টা করছেন প্রযুক্তি উদ্যোক্তারা।

আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রযুক্তি উদ্যোক্তারা কে কার পক্ষে ছিলেন০৬ নভেম্বর ২০২৪

ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানে ওপেনএআইয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্যাম অল্টম্যানের যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে প্রযুক্তি বিশ্বে বেশ জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে। এর কারণ, ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত টেসলা, স্পেসএক্স ও নিউরালিংকের প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্কের সঙ্গে স্যাম অল্টম্যানের শক্রতা। স্যাম অল্টম্যানের নেতৃত্বাধীন ওপেনএআইয়ের বিরুদ্ধে মামলাও করেছেন ইলন মাস্ক। আর তাই স্যাম অল্টম্যানও চেষ্টা করছেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের দলে ভিড়তে। প্রযুক্তি দুনিয়ার অন্যান্য ব্যক্তিদের মধ্যে ওপেনএআইয়ের প্রেসিডেন্ট গ্রেগ ব্রকম্যান ও প্রধান পণ্য কর্মকর্তা কেভিন ওয়েইল ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারেন।

আরও পড়ুনডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে প্রযুক্তি উদ্যোক্তারা কেন নৈশভোজ করছেন১৮ ডিসেম্বর ২০২৪

গুগলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুন্দর পিচাই, অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা টিম কুক এবং অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোসের মতো প্রযুক্তি দুনিয়ার অন্য তারকারা মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ের পর ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করলেও অভিষেক অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন কি না, তা এখনো জানা যায়নি।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মাইক্রোসফটের এআই–সেবায় হ্যাকিং

নিজেদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) সেবা অ্যাজিউর ওপেনএআইয়ে অবৈধভাবে প্রবেশ করে আপত্তিকর ও অবৈধ কনটেন্ট তৈরি করে, এমন একটি আন্তর্জাতিক সাইবার অপরাধী চক্রের সন্ধান পেয়েছে মাইক্রোসফট। এসব আধেয় বা কনটেন্টে ব্যহারকারীর সম্মতি ছাড়া তৈরি করা ব্যক্তিগত ও সংবেদনশীল ছবিও রয়েছে।

ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই সাইবার অপরাধী চক্রটি ‘স্টর্ম-২১৩৯’ নামে পরিচিত এবং চক্রের সদস্যরা ইরান, যুক্তরাজ্য, হংকং ও ভিয়েতনামসহ বিভিন্ন দেশে সক্রিয়। চুরি করা গ্রাহক লগইন তথ্য ব্যবহার করে তারা মাইক্রোসফটের এআই–সেবায় প্রবেশ করে। হ্যাকাররা এআই মাধ্যমগুলোর সুরক্ষাব্যবস্থা ফাঁকি দিয়ে অন্যান্য ক্ষতিকর গোষ্ঠীর কাছে এআই–সেবার প্রবেশাধিকার বিক্রি করেছে। এমনকি তারা ক্ষতিকর আধেয় তৈরির বিস্তারিত নির্দেশনাও সরবরাহ করেছে বলে জানা গেছে। মাইক্রোসফটের ডিজিটাল ক্রাইমস ইউনিটের সহকারী প্রধান আইন উপদেষ্টা স্টিভেন মাসাদা বলেন, ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপব্যবহারকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে। এমন অবৈধ কার্যক্রম ব্যবহারকারীদের জীবনে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলে।’

প্রতিষ্ঠানটি যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা এবং ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের দুজন ব্যক্তিকে শনাক্ত করলেও চলমান তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম প্রকাশ করা হয়নি। জেনারেটিভ এআই প্রযুক্তির সম্ভাব্য অপব্যবহার নিয়ে ইতিমধ্যেই বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ বাড়ছে। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, এ ধরনের প্রযুক্তির মাধ্যমে ব্যক্তিগত ছবি বিকৃত করা, ভুয়া ও আপত্তিকর ছবি তৈরি করা এবং এমনকি শিশুদের যৌন নির্যাতন–সম্পর্কিত আধেয় তৈরির মতো গুরুতর অপরাধও ঘটতে পারে।

মাইক্রোসফট এবং ওপেনএআইয়ের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের সেবায় সুরক্ষাব্যবস্থা জোরদার করলেও সাইবার অপরাধীরা সব সময়ই প্রযুক্তির ফাঁকফোকর খুঁজে বের করছে। মাইক্রোসফটের এই তদন্ত শুরু হয় গত বছরের ডিসেম্বর মাসে। তখন প্রতিষ্ঠানটি ভার্জিনিয়ার পূর্ব জেলা আদালতে অজ্ঞাতনামা ১০ ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করে। মামলার মূল উদ্দেশ্য ছিল হ্যাকারদের পরিচয় উদ্‌ঘাটন এবং তাদের কার্যক্রম ব্যাহত করা। স্টিভেন মাসাদা আরও বলেন, ‘কোনো সাইবার অপরাধী চক্রকে একদিনেই পুরোপুরি ধ্বংস করা সম্ভব নয়। ক্ষতিকর কার্যকলাপ প্রতিরোধে আমাদের অবিরাম সচেতনতা ও ধৈর্য ধরে কাজ চালিয়ে যেতে হবে।’

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ওপেনএআই কি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাপ আনছে, যা বললেন স্যাম অল্টম্যান
  • মাইক্রোসফটের এআই–সেবায় হ্যাকিং