নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বসতঘরে মালবাহী ট্রাক, প্রাণ গেল ঘুমন্ত নারীর
Published: 13th, January 2025 GMT
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় মালবাহী একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বসতবাড়িতে ঢুকে পড়েছে। এতে নুরী বেগম নামে এক ঘুমন্ত নারীর মৃত্যু হয়েছে। এসময় এক শিশু আহত হয়েছে।
সোমবার ভোরে হাতীবান্ধা উপজেলার পাটিকাপাড়া বটতলা এলাকায় বুড়িমারী-লালমনিরহাট মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। হাতীবান্ধা উপজেলার পাটিকাপাড়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মুজিবুল আলম সাদাত বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নিহত নুরী বেগমের ছেলে সাগর হোসেন স্ত্রীসহ ঢাকায় থাকেন। নিম্ন আয়ের সংসার তার। মহাসড়কের পাশে টিনের চালার ঘর বানিয়ে মা নুরি বেগম ও তিন বছর বয়সী ছেলে আবুদল্লাহকে গ্রামেই রাখতেন। সোমবার ভোরের দিকে একটি মালবাহী ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তাদের ঘরে ঢুকে পড়ে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মী ও স্থানীয়রা ঘটনা পৌঁছে। প্রায় দেড় ঘণ্টা উদ্ধার অভিযানের পর নাতী আবদুল্লাহকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তবে দাদী নুরি বেগমকে প্রায় ৪ ঘণ্টা পর মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। এ সময় লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়।
ফায়ার সার্ভিস ইনচার্জ ইমরান হোসেন জানান, লালমনিরহাট মহাসড়কের পাশেই একটি বাড়িতে সিমেন্ট বোঝাই একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাড়িত ভিতরে ঢুকে দেয়। এতে একজন নারীর মৃত্যু হয়। বাকি সদস্যদের আহতবস্থায় হাতীবান্ধা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হাতীবান্ধা থানার ওসি মাহমুদুন-নবী জানান, শিশু আবদুল্লাহকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হলেও নুরী বেগমকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। বর্তমানে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
খিচুড়ি রান্নার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, পরে ঘরে পাওয়া গেল গৃহবধূর লাশ
রান্নাঘরে চাল-ডাল ধুয়ে আজ সোমবার ঈদের দিন দুপুরে স্বামীর বাড়িতে খিচুড়ি রান্নার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন গৃহবধূ রুনা আক্তার (২১)। শেষ পর্যন্ত খিচুড়ি রান্না তো হলোই না, বেলা আড়াইটার দিকে বসতঘরের শয়নকক্ষে পাওয়া গেল তাঁর লাশ। খবর পেয়ে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করেছে। চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ঠেটালিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত রুনার বাবার বাড়ির স্বজনদের দাবি, রুনাকে হত্যা করে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়েছেন তাঁর স্বামী হাকিম মোল্লা ও তাঁর পরিবারের লোকজন। ঘটনার পর থেকে তাঁরা পালাতক।
নিহত রুনা আক্তার উপজেলার ঠেটালিয়া গ্রামের দোকানি হাকিম মোল্লার স্ত্রী। রুনার পৈতৃক বাড়ি উপজেলার রসুলপুর ঢাকুরকান্দি গ্রামে। ওই গ্রামের রফিক ভূঁইয়ার মেয়ে তিনি। কিছুদিন আগে হাকিম মোল্লার সঙ্গে রুনার বিয়ে হয়েছিল।
স্বজন, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কিছুদিন আগে পারিবারিকভাবে ঠেটালিয়া গ্রামের ব্যবসায়ী হাকিম মোল্লার সঙ্গে রুনা আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে নানা বিষয়ে রুনার সঙ্গে তাঁর স্বামীর বিবাদ চলে আসছিল। আজ সকালেও স্বামীর সঙ্গে তাঁর বাগ্বিতণ্ডা হয়েছে। দুপুরে স্বামীর পরিবারের লোকজনের জন্য চাল-ডাল ধুয়ে খিচুড়ি রান্নার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। পরে বেলা আড়াইটার দিকে বসতঘরের শয়নকক্ষে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় রুনার ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশটি উদ্ধার করে।
নিহত রুনা আক্তারের ভাই শরিফুল ইসলাম অভিযোগ করেন, তাঁর বোনকে পরিকল্পিতভাবে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন হত্যা করেছেন। এটি ঢাকার জন্য লাশ ঘরে ঝুলিয়ে ‘আত্মহত্যা’র নাটক সাজানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা করবেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি।
অভিযোগের বিষয়ে জানার জন্য নিহত রুনার স্বামী হাকিম মোল্লার মুঠোফোনে কল করা হলে নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রবিউল হক বলেন, নিহত গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এটি হত্যাকাণ্ড নাকি আত্মহত্যা তা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে। আপাতত এটি একটি রহস্যজনক মৃত্যু বলেই মনে হচ্ছে।