রাজবাড়ী ও কুষ্টিয়ার পরিবহনশ্রমিকদের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনার দুই দিন পর বাস চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। আজ সোমবার সকাল ছয়টা থেকে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া সড়কে বাস চলাচল পুরোদমে স্বাভাবিক হয়। গত শনিবার দুপুরে এ পথে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এতে ভোগান্তিতে পড়েছিলেন বিভিন্ন গন্তব্যের যাত্রীরা।

আজ সোমবার সকালে রাজবাড়ী জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক (লিটন) প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল বিকেলে রাজবাড়ী জেলার শেষ সীমানা পাংশার মাছপাড়ায় রাজবাড়ী ও কুষ্টিয়া পরিবহন মালিক গ্রুপ, মিনিবাস মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের সঙ্গে সমঝোতা বৈঠক হয়েছে। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আজ সোমবার সকাল থেকে পুরোদমে বাস চলাচল শুরু হয়েছে। তবে বৈঠকের পর গতকাল রাত থেকে কিছু বাস চলাচল করেছে।

রাজবাড়ী জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপ সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার দুপুরে রাজবাড়ী শহরের মুরগির ফার্ম এলাকায় রাজবাড়ী ও কুষ্টিয়া এই দুই জেলার পরিবহনশ্রমিকদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এর প্রতিবাদে ওই দিন দুপুরের পর থেকে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া পথে বাস চলাচল বন্ধ হয়। এতে রাজবাড়ী থেকে প্রায় ৫০টি আন্তজেলা ও ৩০টি দূরপাল্লার বাস সরাসরি চলাচল বন্ধ ছিল। আন্তজেলা বাসগুলো রাজবাড়ী জেলার সীমান্তবর্তী পাংশার শিয়ালডাঙ্গা পর্যন্ত গিয়ে যাত্রীদের নামিয়ে দেয়। অন্যদিকে কুষ্টিয়ার বাসগুলো জেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় এসে যাত্রী নামিয়ে দেয়। ফলে দুর্ভোগ পোহান যাত্রীরা।

রাজবাড়ীর সদ্য বিদায়ী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, গতকাল সন্ধ্যায় দুই জেলার পরিবহনশ্রমিক-মালিক নেতাদের সঙ্গে বসে সমস্যা সমাধান হওয়ার পর থেকে বাস চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।

আরও পড়ুনপরিবহনশ্রমিকদের হাতাহাতির ঘটনায় রাজবাড়ী-কুষ্টিয়ায় বাস বন্ধ, দুর্ভোগ২১ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

রাজউক চেয়ারম্যানসহ চারজনের প্রতি আদালত অবমাননার রুল

আদালতের আদেশ অনুসরণ না করে ‘মিলেনিয়াম সিটি’ প্রকল্পের মাটি ভরাট অব্যাহত রাখায় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যানসহ চারজনের প্রতি আদালত অবমাননার রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালত অবমাননার অভিযোগে করা এক আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার এ রুল দেন। অপর তিনজন হলেন পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ঢাকা জেলা প্রশাসক ও মিলেনিয়াম হাউজিং লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

আদালত অবমাননার অভিযোগে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) করা আবেদনের শুনানি নিয়ে এ আদেশ দেওয়া হয়। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ আশরাফ আলী। তাঁকে সহযোগিতা করেন আইনজীবী এস হাসানুল বান্না।

আদেশের বিষয়ে পরে আইনজীবী এস হাসানুল বান্না প্রথম আলোকে বলেন, মাটি ভরাটসহ মিলেনিয়াম সিটি প্রকল্পের কার্যক্রম থেকে বিরত রাখার দায়িত্ব রাজউক চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও ঢাকার জেলা প্রশাসকের। আদেশ অনুসারে তা প্রতিপালন না হওয়ায় চারজনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদনটি করা হয়। শুনানি নিয়ে আদালত রাজউক চেয়ারম্যানসহ চারজনের প্রতি আদালত অবমাননার রুল দিয়েছেন।

এর আগে ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ উপজেলার অন্তর্গত টোটাইল মৌজায় বিদ্যমান টোটাইল খাল, খাল–সংলগ্ন নিচু কৃষিজমি ও জলাশয়ে মাটি ভরাটের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা), মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ), অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি) ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) জনস্বার্থে গত বছর একটি রিট করে। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত বছরের ২২ জানুয়ারি হাইকোর্ট  টোটাইল খাল, খাল–সংলগ্ন নিচু কৃষিজমি ও জলাশয়ে মাটি ভরাট কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা দেন। একই সঙ্গে টোটাইল খাল ভরাট করে গড়ে ওঠা মিলেনিয়াম হাউজিং লিমিটেডের অননুমোদিত মিলেনিয়াম সিটি প্রকল্পের সব কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ দেন।

বেলা জানায়, হাইকোর্টের আদেশে টোটাইল খাল, খাল–সংলগ্ন নিচু কৃষিজমি ও জলাশয়ের বর্তমান অবস্থা তদন্ত, মিলেনিয়াম হাউজিং লিমিটেড কর্তৃক মাটি ভরাটের ফলে টোটাইল খালের যে ক্ষতি সাধিত হয়েছে, তা নিরূপণ এবং হাউজিং কোম্পানি কর্তৃক টোটাইল মৌজায় অবস্থিত জলাশয়, বন্যাপ্রবাহ অঞ্চল ও নিচু কৃষিজমির শ্রেণি পরিবর্তন প্রতিরোধ বিষয়ে রাজউক চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ঢাকার জেলা প্রশাসককে আদালতের আদেশ পাওয়ার দুই মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।

অন্তর্বর্তীকালীন ওই আদেশে স্থগিতাদেশ চেয়ে মিলেনিয়াম হাউজিং লিমিটেড আপিল বিভাগে আবেদন করে। বেলা জানায়, আপিল বিভাগ শুনানি নিয়ে গত বছরের ২৯ এপ্রিল পক্ষগুলো মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত মাটি ভরাটের সব কার্যক্রমের ওপর স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে নির্দেশ দেন। এর ফলে মিলেনিয়াম হাউজিং লিমিটেড অননুমোদিত মিলেনিয়াম সিটি প্রকল্পে নতুন করে মাটি ভরাটসহ কোনো ধরনের উন্নয়নমূলক কাজ করার সুযোগ নেই। আদালতের সুস্পষ্ট ও সুনির্দিষ্ট নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও তা লঙ্ঘন করে সম্প্রতি মিলেনিয়াম হাউজিং লিমিটেড কর্তৃক অননুমোদিত মিলেনিয়াম সিটি প্রকল্পে মাটি ভরাটসহ উন্নয়নমূলক কার্যক্রম চলমান রেখেছে এবং প্লট তৈরি করে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে চটকদার বিজ্ঞাপন রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে পোস্টার আকারে প্রচার করছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) আদালত অবমাননার অভিযোগে আবেদনটি করে।

আরও পড়ুনখাল ভরাট ও মিলেনিয়াম সিটি প্রকল্পের কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা২২ জানুয়ারি ২০২৪

সম্পর্কিত নিবন্ধ