চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে আবারও সচিবালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছেন পুলিশের ৪০তম ব্যাচের অব্যাহতিপ্রাপ্ত শিক্ষানবিশ উপ-পরিদর্শকরা (এসআই)। বিভিন্ন ধরনের প্ল্যাকার্ড হাতে তারা দাঁড়িয়ে আছেন। দাবি পূরণে কোনো আশ্বাস না পেলে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করবেন বলে জানিয়েছেন তারা।

সোমবার সকাল ১০টা থেকে আব্দুল গনি রোডে সচিবালয়ের ১ ও ২ নম্বর গেটের বিপরীত পাশে অবস্থান নিয়েছেন তারা।

অব্যাহতি পাওয়া এসআইরা বলেন, ট্রেনিং থেকে অন্যায়ভাবে অব্যাহতি দেওয়ার প্রতিবাদ ও চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে আমরা ৩২১ জন সাব-ইন্সপেক্টর গত ৫ ও ৬ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করি। আমাদের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে স্বরাষ্ট্র সচিব দেখা করে দাবির বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখতে না পাওয়ায় আবার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে।

অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া মিনহাজ নামে এক সদস্য বলেন, খুবই তুচ্ছ অভিযোগে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। পুলিশ একাডেমি সারদার ইতিহাসে একসঙ্গে এত মানুষের অব্যাহতি দেওয়ার ঘটনা নজিরবিহীন। অন্যায় করা হয়েছে। চাকরি ফিরিয়ে দেওয়া হোক। আজ বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন করা বলে জানান তিনি।

আরেক সদস্য বলেন, ২০২৩ সালের ৪ নভেম্বর ট্রেনিংয়ে অংশগ্রহণ করি। এক বছর ট্রেনিং শেষে ২০২৪ সালের ৪ নভেম্বর অব্যাহতি দেওয়া হয়। বলা হয়, আমি ক্লাসে অমনোযোগী এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী। কিন্তু আমি অর্ধ-বার্ষিক পরীক্ষায় ৮০৪ জনে ১০০ জনের মধ্যে ছিলাম। এক বছর অনেক ত্যাগ স্বীকার করে ট্রেনিং করেছি। যখন চাকরিতে নিয়মিত হবো তখনই বাদ দেওয়া হলো। এর থেকে কষ্টের আর কিছু হতে পারে না।

ডিএমপির সচিবালয়ের নিরাপত্তা বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন বলেন, সকাল থেকে অব্যাহতি পাওয়া পুলিশ সদস্যরা সচিবালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। এতে সচিবালয়ের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। যেকোনো ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য প্রস্তুতি রয়েছে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

চট্টগ্রামে এসআইর অত্যাচারে ৫ দিন বাড়িছাড়া দুই পরিবার

প্রতিবেশী পুলিশ কর্মকর্তার হুমকি-ধমকি ও অত্যাচারে পাঁচ দিন দুটি পরিবারের সদস্যরা বাড়ি যেতে পারছেন না বলে অভিযোগ করা হয়েছে। গতকাল বুধবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রামের চন্দনাইশের বরকল ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কানাইমাজারী মামুন খলিফা বাড়ির ভুক্তভোগীর পক্ষে আজিজুর রহমান এ অভিযোগ করেন।

অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তার নাম দস্তগীর হোসেন মানিক। তিনি ২০১৭ সালে এসআই (বিপি নম্বর- ৯২১৯২২৩৬৮১) পদে যোগদান করেন। বর্তমানে চট্টগ্রাম রেলওয়ে পুলিশে কর্মরত।

আজিজুর রহমান জানান, দুই বছর আগে তাদের দুই ভাইয়ের বসতবাড়ির মাঝামাঝি একটি বিরোধপূর্ণ জমি কিনে দোতলা বাড়ি করেন মানিক। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে তিনি তাদের বসতভিটাও দখলের চেষ্টা করেন। পুলিশের পোশাক পরে বাড়িতে গিয়ে বিভিন্ন সময় মিথ্যা মামলায় জড়ানোর হুমকি দিয়েছেন। এক পর্যায়ে আজিজুরের ভাই মোহাম্মদ শফি গত বছর ১৪ মে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মানিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন। পরে আদালতে আজিজুরের বড় ছেলে তারেক আজিজ মামলা করেন। আদালতের নির্দেশে গত ২০ ফেব্রুয়ারি উপজেলা ভূমি অফিসের একটি দল জমি পরিমাপে গেলে মানিকের নেতৃত্বে ১০-১৫ জন হামলা করে।

আজিজুর দাবি করেন, হামলায় আহত আমার চোখের পাশে ছয়টি সেলাই দিতে হয়েছে। আমার ভাই শফি মাথায় আঘাত পেয়েছেন। আমার মেজো ছেলে বোরহান আজিজের মাথায় আটটি সেলাই দিতে হয়েছে। সবাই যখন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কাতরাচ্ছে, তখন মানিক প্রভাব খাটিয়ে উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। তাঁর অত্যাচারে আমরা দুই ভাই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পাঁচ দিন বাড়ি যেতে পারছি না। আমরা এ ঘটনার সঠিক বিচার চাই।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন মোহাম্মদ শফি, মোহাম্মদ নাছির, মোহাম্মদ শিফাত, জোহরা বেগম, শিফা, শাহীন আকতার, শাফিন আকতার ও ছেনোয়ারা বেগম।
অভিযোগ বিষয়ে এসআই মানিকের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও রিসিভ হয়নি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চট্টগ্রামে এসআইর অত্যাচারে ৫ দিন বাড়িছাড়া দুই পরিবার