প্রতি বছর অন্তত দুটি এল ক্লাসিকো তো হয়ই। সেটা লা লিগায়। কোপা দেল রে, স্প্যানিশ সুপার কাপ যোগ হলে তা আরও বাড়ে। এই করে করে প্রথম দেখা থেকে শুরু করে গত ১২৩ বছরের মধ্যে রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনা অফিশিয়াল ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে মোট ২৫৯ বার। এত এত বেশি বার মুখোমুখি হওয়ায় রিয়াল–বার্সা ম্যাচে গোলবন্যাও অনেকবারই হওয়ার কথা।

তবে এমনটা যাঁরা ভাবছেন, তাঁরা পুরোপুরি সঠিক নন। বরং প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় বলে রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনার মুখোমুখি লড়াইয়ে গোল সচরাচর কমই হয়। যে অল্প কিছু ম্যাচে একের পর এক গোল দেখা গেছে, তার মধ্যে গতকাল রাতের স্প্যানিশ সুপার কাপ ফাইনাল একটি (৫–২)। আর যদি শুধু শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ বিবেচনায় নেওয়া হয়, তাহলে ৭ গোলের এল ক্লাসিকো ফাইনাল দেখা গেল এই প্রথম।

রিয়াল–বার্সার মুখোমুখি লড়াইয়ে এক ম্যাচে সর্বোচ্চ গোল হয়েছে ১২টি। তাও দুবার। প্রথমবার ১৯১৬ সালে, রিয়ালের মাঠে। সে বার কোপা দেল রে সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগ শেষ হয়েছিল ৬–৬ সমতায়। একই টুর্নামেন্টে ১৯৪৩ আসরের সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগও ছিল ১২ গোলের ম্যাচ।

সান্তিয়াগো বার্নাব্যুর সেই ম্যাচে ১১ গোলই ছিল রিয়াল মাদ্রিদের। বিধ্বস্ত হওয়ার ম্যাচে বার্সা শোধ করতে পেরেছিল মাত্র ১টি। এখন পর্যন্ত এল ক্লাসিকোয় সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয়–হারের ম্যাচও এটিই।

১২ গোলের মতো ১০ গোলের এল ক্লাসিকোও আছে দুটি। একটি ১৯৩৫ সালে, রিয়াল জিতেছিল ৮–২ গোলে। আরেকটি ১৯৪৩ সালে, ড্র হয়েছিল ৫–৫ গোলে। দুটি ম্যাচই ছিল লা লিগার।

তবে গত শতাব্দীর তুলনায় একবিংশ শতাব্দীতে এল ক্লাসিকোয় গোলবন্যা কমই দেখা গেছে। সবচেয়ে বেশি গোলের ম্যাচটি হয়েছে ২০০৯ সালের ২ মে লা লিগায়। সে দিন সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে লিওনেল মেসি ও থিয়েরি অঁরির জোড়া গোলে রিয়ালকে ৬–২ গোলে বিধ্বস্ত করেছিল বার্সেলোনা।

এর পর গত ১৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ৭ গোল দেখা গেছে ২০১৪ সালের মার্চে। বার্নাব্যুতে মেসির হ্যাটট্রিকে বার্সা জিতেছিল ৪–৩ গোলে। এক যুগ পর আবার ৭ গোল দেখা গেল নতুন বছরের শুরুতে, সৌদি আরবের জেদ্দায়। এবারও জয়ী দল সেই বার্সেলোনাই।

একটা জায়গায় লামিনে ইয়ামাল–রবার্ট লেভানডফস্কিদের এই জয় বিশেষ। এবারের আগে আর কোনো এল ক্লাসিকো ফাইনালে এত বেশি গোল হয়নি। সর্বোচ্চ ৫ গোল দেখা গেছে তিনবার। প্রতিবারই জিতেছে রিয়াল মাদ্রিদ। সর্বশেষটি গত বছরের স্প্যানিশ সুপার কাপ ফাইনালে, ৪–১ ব্যবধানে।

তবে চলতি ২০২৪–২৫ মৌসুমে টানা দুই ম্যাচেই বড় ব্যবধানে হারল রিয়াল। গত অক্টোবরে লা লিগার প্রথম লেগে হান্সি ফ্লিকের দল জিতেছিল ৪–০ ব্যবধানে। এল ক্লাসিকোর ইতিহাসে বার্সেলোনা টানা দুই ম্যাচে রিয়ালের জালে ৪ বা তার বেশি গোল দিতে পারল এই প্রথম। রিয়াল অবশ্য একই কীর্তি গড়েছে সেই ১৯৬৩ সালে (৫–১ ও ৪–০)।

অবশ্য দিন শেষে হাসি কিন্তু বার্সেলোনারই। এবারের আগে রিয়াল কোনো ফাইনালে ৫ গোল হজম করেছে মাত্র দুবার। প্রথমবার ১৯৬২ ইউরোপিয়ান কাপে (বর্তমানে চ্যাম্পিয়নস লিগ) ইউসেবিরও বেনফিকার কাছে, দ্বিতীয়বার ২০০৭ স্প্যানিশ সুপার কাপে সেভিয়ার কাছে। তৃতীয়বার ৫ গোল হজম করল চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনার কাছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

চ্যাম্পিয়নস লিগে ১৮ ম্যাচের মহারণ, দলগুলোর শেষ সমীকরণ

চ্যাম্পিয়নস লিগের চলমান আসর অনুষ্ঠিত হচ্ছে বদলি কাঠামোতে। সে কাঠামো অনুসারে গ্রুপ পর্বের শেষ রাউন্ড অনুষ্ঠিত হবে বুধবার (২৯ জানুয়ারি, ২০২৫) দিবাগত রাতে। যেখানে প্রথমবারের মতো একই সময়ে ১৮টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে চ্যাম্পিয়নস লিগের ইতিহাসে।

চ্যাম্পিয়নস লিগের সেরা ষোলোতে এবার সরাসরি খেলবে ৮টি দল। ৯তম থেকে ২৪তম দলগুলো নিজেদের মধ্যে প্লে-অফ খেলবে। দুই লেগ শেষে এগিয়ে থাকা সেরা ৮টি দল যাবে শেষ ষোলোতে। তবে শীর্ষ আট ইতিমধ্যে নিশ্চিত করে ফেলেছে লিভারপুল ও বার্সেলোনা। শীর্ষ আটে থেকে সরাসরি শেষ ষোলোতে যাবে আরও ছয়টি দল। সেই প্রোতিযোগিতায় এখনও টিকে আছে ৯টি দল; যার মাঝে আছে বেশ কিছ বড় নামও।

এখন পর্যন্ত ১৬টি দল প্লে-অফ নিশ্চিত করেছে। অন্যদিকে ৯টি দল ইতিমধ্যেই আসরের নকআউট থেকে ছিটকে গিয়েছে।

আরো পড়ুন:

আনচেলত্তির বিশ্বাস টাকাকে উপেক্ষা করে ‘গৌরব’ বেছে নিবেন ভিনিসিয়ুস

এমবাপের ‘প্রথম হ্যাটট্রিকে’ রিয়ালের শীর্ষ স্থান পোক্ত

এক নজরে দেখা যাক রাতে মুখোমুখি হতে যাওয়া দলগুলোর কার কি অবস্থাঃ          

ব্রেস্ত-রিয়াল মাদ্রিদ
দুই দলেরই প্লে-অফ নিশ্চিত। ১৩ পয়েন্ট নিয়ে ফরাসি ক্লাব ব্রেস্ত আছে ১৩ নম্বরে। ১২ পয়েন্ট নিয়ে ১৬ নম্বরে রিয়াল। যেই জিতুক সরাসরি শেষ ষোলোতে যাওয়াটা নির্ভর করবে অন্য ম্যাচের ফলের ওপর।

 

ম্যানচেস্টার সিটি-ক্লাব ব্রুগা
সাবেক চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটির বাঁচা–মরার ম্যাচ। সাত ম্যাচ শেষে ৮ পয়েন্ট নিয়ে ২৫ নম্বরে আছে সিটি। সেরা ২৪-এ থেকে প্লে-অফ খেলতে ব্রুগার বিপক্ষে জয়ের বিকল্প নেই পেপ গার্দিওলার দলের। অন্যদিকে প্লে-অফ নিশ্চিত করতে ড্র করলেই চলবে বেলজিয়াম ক্লাব ব্রুগার।

স্টুটগার্ট-পিএসজি
সমান ১০ পয়েন্ট সংগ্রহ করলেও গোল ব্যবধানে পিএসজি ২২ নম্বরে ও স্টুটগার্ট আছে ২৪ নম্বরে। জার্মান-ফরাসি লড়াইয়ে যারা জিতবে, তারা উঠে যাবে প্লে-অফে। তবে ম্যান সিটি ও দিনোমা জাগরেব পয়েন্ট হারালে এ ম্যাচ হেরেও পরের রাউন্ডে যেতে পারে দুই দল।

 

জুভেন্টাস-বেনফিকা
১২ পয়েন্ট নিয়ে ১৭ নম্বরে থাকা জুভেন্টাসের প্লে-অফ নিশ্চিত। জুভেন্টাসকে হারালে ১০ পয়েন্ট নিয়ে ২১ নম্বরে পড়ে থাকা বেনফিকাও নিশ্চিত করবে প্লে-অফ। ম্যান সিটি ও দিনোমা জাগরেব পয়েন্ট হারালে এই ম্যাচ হেরেও নকআউট পর্বে উঠতে পারে পর্তুগিজ ক্লাবটি।

স্পোর্টিং লিসবন-বোলোনিয়া
আগেই বিদায় নিশ্চিত হওয়া ইতালিয়ান ক্লাব বোলোনিয়াকে হারালেই প্লে-অফ নিশ্চিত হবে পর্তুগিজ ক্লাব স্পোর্টিং লিসবনের। সিটি ও দিনোমা পয়েন্ট হারালে এই ম্যাচ হেরেও নকআউট পর্বে উঠতে পারে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো-লুই ফিগোদের শৈশবের ক্লাব স্পোর্টিং।

পিএসভি আইন্দহফেন-লিভারপুল
সাত ম্যাচের সাতটিতে জিতে শেষ ষোলো নিশ্চিত করে ফেলা লিভারপুল এই ম্যাচে ১ পয়েন্ট পেলেই শীর্ষে থেকে শেষ করবে লিগ পর্ব। ১১ পয়েন্ট নিয়ে ১৯ নম্বরে থাকা ডাচ ক্লাব পিএসভি ১ পয়েন্ট পেলেই নিশ্চিত করবে প্লে-অফ।

বার্সালোনা-আতালান্তা
১৮ পয়েন্ট নিয়ে বার্সা নিশ্চিত করে ফেলেছে শেষ ষোলো। ১৪ পয়েন্ট নিয়ে সাতে থাকা আতালান্তা আজ বার্সাকে হারালে তো বটেই, ড্র করেও সরাসরি শেষ আটে উঠে যেতে পারে।

ইন্টার মিলান-এএস মোনাকো
ড্র করলেই শেষ ষোলো নিশ্চিত ১৬ পয়েন্ট নিয়ে চারে থাকা ইন্টারের। ফরাসি ক্লাব মোনোকোরও প্লে-অফ নিশ্চিত, ইন্টারকে হারালে উঠে যেতে পারে শেষ আটে।

বায়ার্ন মিউনিখ-ব্রাতিস্লাভা
বায়ার্নের প্লে-অফ খেলা নিশ্চিত। স্লোভাক ক্লাব ব্রাতিস্লাভাকে হারালে শীর্ষ আটে থেকে সরাসরি শেষ ষোলো খেলার সুযোগ আছে ১২ পয়েন্ট নিয়ে ১৫ নম্বরে থাকা পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নদের। ব্রাতিস্লাভা বিদায় নিয়েছে আগেই।

বরুশিয়া ডর্টমুন্ড-শাখতার দানেস্ক
১২ পয়েন্ট নিয়ে ১৪ নম্বরে থাকা ডর্টমুন্ডের প্লে-অফ খেলা নিশ্চিত। জিতে গেলে জার্মান ক্লাবটি সেরা আটে থেকে সরাসরি শেষ ষোলোতেও খেলতে পারে। ৭ পয়েন্ট নিয়ে ২৭ নম্বরে থাকা শাখতার এই ম্যাচ জিতেও বাদ পড়ে যেতে পারে।

লেভারকুসেন-স্পার্তা প্রাগ
স্পার্তা বাদ পড়েছে আগেই। ১৩ পয়েন্ট নিয়ে এরই মধ্যে প্লে-অফ নিশ্চিত করেছে লেভারকুসেন। জার্মান ক্লাবটি আজ জয় পেলে সরাসরি সেরা আটে উঠে যেতে পারে।

দিনামো জাগরেব-এসি মিলান
১৫ পয়েন্ট নিয়ে এসি মিলান আছে ছয়ে। আজ জিতলে সাতবারের চ্যাম্পিয়নরা সরাসরি শেষ ষোলোতে খেলা নিশ্চিত করবে। হেরে হেলেও সুযোগ থাকবে ইতালির ক্লাবটির। ক্রোয়েশিয়ার দিনামোর জয় ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।

 

সালজবুর্গ-অ্যাটলেতিকো মাদ্রিদ
মাত্র ৩ পয়েন্ট সংগ্রহে থাকা সালজবুর্গ ইতিমধ্যে বিদায় নিয়েছে। ১৫ পয়েন্ট নিয়ে পাঁচে থাকা অ্যাটলেতিকো জন্য ম্যাচটি শেষ আট নিশ্চিত করার। পয়েন্ট হারালেও সরাসরি শেষ ষোলোতে খেলতে পারে স্প্যানিশ ক্লাবটি।

লিল-ফেইনুর্ড
১৩ পয়েন্ট পাওয়া লিল ও ফেইনুর্ড দুই দলই নিশ্চিত করেছে প্লে-অফ। আজ যারা জিতবে, তারা সরাসরি শেষ ষোলোতে খেলার সুযোগ পেলেও পেতে পারে।

অ্যাস্টন ভিলা-সেল্টিক
দুই দলেরই অন্তত প্লে-অফ খেলা নিশ্চিত। ১৩ পয়েন্ট নিয়ে ৯ নম্বরে থাকা ভিলা জয় পেলে উঠে যেতে পারে শীর্ষ আটে। ১২ পয়েন্ট নিয়ে ১৮-তে থাকা সেল্টিকের সেই সম্ভাবনা একটু কম।

জিরোনা-আর্সেনাল
প্রথমবার চ্যাম্পিয়নস লিগ খেলা জিরোনার বিদায় নিশ্চিত। ১৬ পয়েন্ট নিয়ে তিনে থাকা আর্সেনালের জন্য ম্যাচটি সরাসরি শীর্ষ আট নিশ্চিত করার। পয়েন্ট হারালেও সরাসরি শেষ ষোলো খেলা সম্ভব ইংলিশ ক্লাবটির।

স্ট্রুম গ্রাৎস-লাইপজিগ
দুই দলেরই বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেছে।

ইয়াং বয়েজ-রেড স্টার
দুই দলেরই বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেছে।

ঢাকা/নাভিদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রথমবারের মতো বাকৃবিতে কৃষক দিবস পলিত
  • চ্যাম্পিয়নস লিগে ১৮ ম্যাচের মহারণ, দলগুলোর শেষ সমীকরণ
  • ভালোবাসা দিবসে বড় পর্দায় আসছেন নাঈম-মিথিলা
  • রাজশাহী-চট্টগ্রামের জন্যই কি এতো নিয়ম বিসিবির
  • বিপিএলে প্রথমবার লভ্যাংশ শেয়ার করার সিদ্ধান্ত 
  • দেশে প্রথমবারের মতো পালিত হবে কৃষক দিবস