সিরাজগঞ্জে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ
Published: 13th, January 2025 GMT
সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জুয়েল রানার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। রবিবার (১২ জানুয়ারি) এ ঘটনায় উপজেলা বিএনপির পক্ষ থেকে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এর আগে, গত শনিবার এ ঘটনা ঘটে।
চৌহালী উপজেলা বিএনপি সভাপতি জাহিদ মোল্লা বলেন, ‘‘অভিযুক্ত বিএনপির নেতাকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে কারণ দর্শানোর নেটিশ দেওয়া হয়েছে।’’
অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জুয়েল রানা বলেন, ‘‘আমাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। এ বিষয়ে পরে কথা বলব।’’
আরো পড়ুন:
চকরিয়ায় দলবদ্ধ ধর্ষণ: ৩ যুবক গ্রেপ্তার
কলাপাড়ায় শিশুকে ধর্ষণ
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার এক স্কুলছাত্রকে ধর্ষণ করেন জুয়েল রানা। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিশুর পরিবারের পক্ষ হতে থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গেলে স্থানীয় বিএনপি নেতারা উপযুক্ত বিচার দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে তাদের ফিরিয়ে দেন।
এ বিষয়ে চৌহালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জিয়াউর রহমান বলেন, ‘‘লোকমুখে বিষয়টি শুনেছি। তবে, এ ঘটনায় এখনো কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
ঢাকা/রাসেল/রাজীব
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
‘জুনেই’ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে চায় ফ্রান্স: ম্যাখোঁ
ফ্রান্স আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা করছে এবং আগামী জুনে নিউইয়র্কে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত নিরসনে জাতিসংঘ আয়োজিত এক সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ।
বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, এ সপ্তাহে মিসর সফর করা ম্যাখোঁ বুধবার ফ্রান্স ফাইভ টেলিভিশনে প্রচারিত এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমাদের স্বীকৃতির দিকে এগোতে হবে এবং আমরা তা আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই করব।’
তিনি আরও জানান, ‘জুনে সৌদি আরবের সঙ্গে যৌথভাবে আমরা এই সম্মেলনের আয়োজন করতে চাই, যেখানে একাধিক পক্ষের পারস্পরিক স্বীকৃতি চূড়ান্ত হতে পারে।’
ম্যাখোঁ বলেন, ‘আমি এই স্বীকৃতি দেব। কারণ, আমি মনে করি, কোনো এক সময় এটা করা উচিত হবে, এবং আমি এমন এক সম্মিলিত উদ্যোগেও অংশ নিতে চাই, এর মাধ্যমে যারা ফিলিস্তিনকে সমর্থন করে, তাদের ইসরাইলকেও স্বীকৃতি দেওয়ার সুযোগ তৈরি হবে।’
এই স্বীকৃতি ফ্রান্সকে ‘তাদের বিরুদ্ধে স্পষ্ট অবস্থান নিতে সাহায্য করবে, যারা ইসরাইলের অস্তিত্বের অধিকার অস্বীকার করে—যেমন ইরান এবং একইসঙ্গে অঞ্চলজুড়ে সম্মিলিত নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে সহায়তা করবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাতের সমাধানে ফ্রান্স দীর্ঘদিন ধরেই দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের পক্ষে অবস্থান নিয়ে আসছে, এমনকি ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের ইসরাইল আক্রমণের পরও।
তবে প্যারিসের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়া দেশটির নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন হবে এবং এটি ইসরাইলকে ক্ষুব্ধ করতে পারে। যারা বরাবরই বলে এসেছে—বিদেশি রাষ্ট্রগুলোর এমন পদক্ষেপ হবে খুবই আগাম।
‘এক পয়সাও বিনিয়োগ করবে না কেউ’
ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়া ফ্রান্সের পদক্ষেপ ‘ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার এবং দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানকে রক্ষা করার ক্ষেত্রে সঠিক দিকেই একটি পদক্ষেপ’ বলে মন্তব্য করেছেন ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্রবিষয়ক মন্ত্রী ভারসেন আঘাবেকিয়ান শাহিন।
প্রায় ১৫০টি দেশ ইতোমধ্যেই ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। ২০২৪ সালের মে মাসে আয়ারল্যান্ড, নরওয়ে ও স্পেন স্বীকৃতি দেয়, এরপর জুনে স্লোভেনিয়া। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামলার পর গাজায় ইসরাইলি বিমান হামলার নিন্দা থেকেই অনেকটা এই সিদ্ধান্তগুলো এসেছে।
তবে ফ্রান্স হবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইউরোপীয় শক্তি, যারা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে—এমন একটি সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরেই করে যার বিরোধিতা আসছে।
মিসর সফরে ম্যাখোঁ মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি ও জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ দ্বিতীয়ের সঙ্গে শীর্ষ বৈঠক করেছেন এবং গাজা কিংবা ইসরাইল-অধিকৃত পশ্চিম তীরে জনবসতিস্থাপন বা সংযুক্তিকরণের তীব্র বিরোধিতা করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজাকে ‘মধ্যপ্রাচ্যের রিভিয়েরা’তে পরিণত করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন এবং ফিলিস্তিনিদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার ইঙ্গিত দেন, যা তীব্র সমালোচনার জন্ম দেয়।
এ প্রসঙ্গে ম্যাখোঁ বলেন, ‘গাজা কোনো রিয়েল এস্টেট প্রকল্প নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘অতিরিক্ত সরল চিন্তাভাবনা কোনো কাজে আসে না।’ ট্রাম্পকে উদ্দেশ করে ম্যাখোঁ বলেন, ‘হতে পারে একদিন এটা অসাধারণভাবে গড়ে উঠবে, তবে এখন আমাদের দায়িত্ব হলো জীবন রক্ষা করা, শান্তি ফিরিয়ে আনা ও একটি রাজনৈতিক কাঠামো নিয়ে আলোচনা করা।’
‘যদি এই মৌলিক বিষয়গুলো না থাকে, তাহলে কেউই বিনিয়োগ করবে না। আজ গাজায় এক পয়সাও কেউ বিনিয়োগ করবে না,’ বলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট।
এদিকে জেরুজালেম থেকে এএফপি জানায়, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁর ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে জুনের মধ্যেই স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণার তীব্র সমালোচনা করেছেন ইসরাইলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদেওন সাআর। তিনি একে ‘সন্ত্রাসবাদকে পুরস্কৃত করার’ পদক্ষেপ বলে অভিহিত করেছেন।
বুধবার রাতে এক্স (সাবেক টুইটার)-এ দেওয়া এক পোস্টে গিদেওন সাআর বলেন, ‘আমরা সবাই যে বাস্তবতা জানি, সেই প্রেক্ষাপটে কোনো দেশ যদি কল্পিত ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে একতরফাভাবে স্বীকৃতি দেয়, তা হবে সন্ত্রাসবাদকে পুরস্কার দেওয়া এবং হামাসকে শক্তিশালী করার নামান্তর।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ ধরনের পদক্ষেপ আমাদের অঞ্চলে শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা এগিয়ে আনবে না—বরং আরও দূরে ঠেলে দেবে।’