জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীকে হস্তান্তরসহ তিন দফা দাবিতে গণঅনশনের পর ‘কমপ্লিট শাটডাউন’কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক, শহীদ সাজিদ অ্যাকাডেমিক ভবনসহ বিভিন্ন ভবনে তালা ঝুলিয়ে শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচি শুরু করেন।
প্রধান ফটকে তালা ঝোলানোর কারণে ক্যাম্পাসের মধ্যে কোনো প্রকার যানবাহন ঢুকতে পারছে না। তবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের চলাচলের জন্য পকেট গেট খোলা রাখা হয়েছে।
আজ সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে আসতে থাকেন বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। কিন্তু কোনো ক্লাস পরীক্ষায় বসেননি তারা।
অনশনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, “সকল ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করে আমরা শাটডাউন ঘোষণা করেছি। দাবি আদায় না হওয়া অবধি কোনো ক্লাস পরীক্ষা হবে না।” এখন পর্যন্ত উপর মহল থেকে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি বলেও জানান।
এর আগে রবিবার (১২ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে গণঅনশন করেন শিক্ষার্থীরা। অনশনে অসুস্থ হয়ে রাত পর্যন্ত ১৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হন। গতকাল রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে অনশনে বসেন উপাচার্য। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড.
যে তিন দফা দাবি শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন তা হলো, দ্বিতীয় ক্যাম্পাসে কাজ সেনাবাহিনীকে হস্তান্তর করা; শিক্ষার্থীদের অস্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা করা; অস্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত অন্তত ৭০ ভাগ শিক্ষার্থীকে আবাসন ভাতা প্রদান।
ঢাকা/লিমন/ইভা
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনার পরও অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সি আর আবরার কথা বলার পরও কোনো সুরাহা হয়নি। তিনি শিক্ষার্থীদের বারবার অনুরোধ করলেও ভিসির পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) সকাল পৌনে ১০টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত শিক্ষা উপদেষ্টা কুয়েট ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের পাশে ছিলেন।
এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের বলেন, ‘‘তাদের দাবি মেনে নেওয়ার জন্য মন্ত্রণালয় থেকে একটা কমিটি গঠন করা হয়েছে। অতি শিগগির কমিটি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলবে। তাড়াহুড়ো করে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ নেই, কারণ তা আদালতে টেকে না।’’
আরো পড়ুন:
কুয়েটে শিক্ষা উপদেষ্টা, কথা বলছেন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে
৪০ ঘণ্টা অনশনে, অসুস্থ কুয়েটের পাঁচ শিক্ষার্থী
শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা দুইমাস ধরে আন্দোলন করে আসছি। কিন্তু, আমাদের দাবি মানা হচ্ছে না। আমরা এই বিষয়ে আর সময় দিতে চাই না। আমরা লাশ হয়ে গেলেও ভিসির পদত্যাগ ছাড়া অনশন ভাঙব না।
এর আগে, গত সোমবার বিকেল ৪টা থেকে কুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদকে অপসারণের দাবিতে ক্যাম্পাসের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের বারান্দায় আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করেন ৩২ জন শিক্ষার্থী।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানো হলেও কুয়েট প্রশাসন নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এ ঘটনায় হামলাকারীদের নাম উল্লেখ না করে অজ্ঞাতপরিচয়ের কয়েকজনের বিরুদ্ধে শুধু দায়সারা একটি মামলা করেছে কর্তৃপক্ষ। সেই মামলায় এখনো কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। উল্টো হামলার ঘটনায় বহিরাগত একজন বাদী হয়ে ২২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
মামলায় ছাত্রদের ব্যক্তিগত পরিচয়, বিভাগ ও রোল নম্বর যেভাবে নিখুঁত বর্ণনা করা হয়েছে তা কুয়েট প্রশাসনের সহযোগিতা ছাড়া সম্ভব না। এরপর কর্তৃপক্ষ ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে। এর মধ্যে, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীও রয়েছে। উপাচার্যের কাছে বারবার দাবি জানালেও তিনি দাবিগুলো বাস্তবায়ন করেননি।
গত ১৩ এপ্রিল ক্যাম্পাসে ঢুকে হল খুলে দেওয়ার জন্য দাবি জানানো হয়। কিন্তু, কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের আহ্বানে সাড়া দেয়নি। দুই রাত খোলা আকাশের নিচে থাকার পর ১৫ এপ্রিল তালা ভেঙে হলে ঢোকেন তারা। কিন্তু হলে খাবার, পানি ও ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া হয়নি। এসব ঘটনায় উপাচার্যের অপসারণের দাবিতে অনশন কর্মসূচি পালন করছেন তারা।
ঢাকা/রাজীব