রাজধানীতে শীত সাধারণত দেরিতে পড়ে। শীতের অনুভূতিও এখানে কম থাকে। সেই তুলনায় দেশের উত্তর জনপদসহ বিভিন্ন স্থানে শীত পড়তে থাকে সেই আশ্বিনের শেষ দিক থেকেই। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। কিন্তু এ বছর এখন পর্যন্ত দেশের কোনো স্থানেই তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়নি। মাঝে একদিন শুধু তেঁতুলিয়ায় মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ হয়েছে। এ বছর এখন পর্যন্ত শীতের তীব্রতা তেমন নেই, এ কথা বলছেন আবহাওয়াবিদেরাই।

গত ডিসেম্বরের একেবারে শেষ দিকে শীতের তীব্রতা বাড়তে শুরু করে। কয়েক দিন থাকার পর তা আবার কমে আসে। মাঝে দিন তিনেক ঘন কুয়াশাও ছিল। এরপর শীত কমেছে আবার বেড়েছে। তিন দিন মাঝারি থেকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহের পর গতকাল রোববার থেকে তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করেছে। আবহাওয়া অফিস বলছে, আগামীকাল মঙ্গলবারও উত্তরের কিছু এলাকা বাদ দিয়ে তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। কিছু স্থানে তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

তবে আগামী বুধবার থেকে তাপমাত্রা আবার কমতে পারে। সেই দফায় অবশ্য তীব্র শৈত্যপ্রবাহের তেমন সম্ভাবনা নেই। আজ সকালে এ কথা বললেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো.

হাফিজুর রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলছিলেন, ‘আগামীকাল উত্তরের জনপদে তাপমাত্রা একটু কমতে পারে। তবে ঢাকাসহ বেশির ভাগ এলাকায় তাপমাত্রা খানিকটা বাড়তে পারে বা আজকের মতোই থাকতে পারে।’

আজ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা গতকালের চেয়ে বেড়েছে। তবে আজও দেশের বিভিন্ন স্থানে কুয়াশা পড়েছে। সকালের পর থেকে সেই কুয়াশা কেটেও গেছে।

আজ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে যশোরে, ১০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল কুড়িগ্রামের রাজারহাটে, ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ উত্তরের এই জনপদে তাপমাত্রা বেড়ে হয়েছে ১৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

দেশের ‘শীতের হটস্পট’ নামে পরিচিত এলাকাগুলোতেও গতকালের চেয়ে তাপমাত্রা বেড়েছে। আজ পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, গতকাল তা ছিল ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, গতকাল তা ছিল ১০ দশমিক ৩ ডিগ্রি। চায়ের দেশ মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে আজ সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হয়েছে ১২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল এর চেয়ে প্রায় ২ ডিগ্রি কম ছিল তাপমাত্রা।

আজ বেড়েছে রাজধানীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও। আবহাওয়ার বার্তা অনুযায়ী তা ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল ছিল ১৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

চলতি বছরে শীতের মধ্যেও টানা শৈত্যপ্রবাহ হয়নি। শীত বাড়ছে আবার কমছে। এ বছর দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বেশি থাকার জন্যই এমনটা হচ্ছে বলে জানান আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান। তিনি বলছিলেন, ‘দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা গতকাল রেকর্ড করা হয়েছিল ফেনীতে, ৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় তা ২৯ দশমিক ১ ডিগ্রি। শীতের দিন অনুযায়ী সর্বোচ্চ তাপমাত্রা আসলে কিছুটা বেশিই বলা যায়।’

শীতের শেষ হয়নি। তাই শীত যে আরও পড়বে না, তা কিন্তু বলছেন না আবহাওয়াবিদেরা। জানুয়ারি মাসের অর্ধেকটা পড়ে আছে। এখন দেশের বিভিন্ন স্থানের আকাশে মেঘ আছে। মেঘ কেটে গেলে শীত বাড়ে। তাই শীতের তীব্রতা বাড়ারও সম্ভাবনা রয়ে গেছে, বললেন হাফিজুর রহমান।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রাম্পের এই শুল্ক আরোপ বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ

আজ বিশ্ব দেখেছে ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাল্টা (রেসিপ্রোকাল) শুল্ক আরোপের মাধ্যমে বৈশ্বিক বাণিজ্য ব্যবস্থায় এক অভূতপূর্ব পরিবর্তন, যা দীর্ঘ দিন ধরে GATT/WTO কাঠামোর মূল স্তম্ভ হিসেবে থাকা ‘সর্বাধিক অনুকূল দেশ’ (MFN) নীতির সমাপ্তি বা অন্তত উল্লেখযোগ্য রূপান্তরের সংকেত বহন করছে। এই নীতির ভবিষ্যৎ এখন অন্ধকার, কারণ বিভিন্ন মার্কিন বাণিজ্যিক অংশীদারের ওপর ভিন্ন ভিন্ন পারস্পরিক শুল্ক হার আরোপিত হচ্ছে এবং নির্দিষ্ট পণ্যের ক্যাটেগরির ওপর শুল্কের হারও পরিবর্তিত হচ্ছে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রপ্তানিকারক দেশগুলোর মধ্যে বিজয়ী ও পরাজিত দেশ নির্ধারণ করা বেশ কঠিন হয়ে পড়ছে এবং বৈশ্বিক বাণিজ্য পরিবেশ আরও অস্থির ও অনিশ্চিত হয়ে যাচ্ছে।

বাংলাদেশসহ অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য এই পরিবর্তন একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিচ্ছে, কারণ তারা এমন এক অনিশ্চিত ব্যবস্থায় কঠিন অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে পারে। এই নতুন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে, বাংলাদেশকে তার অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য নীতি পুনর্বিবেচনা করতে হবে, বৈশ্বিক বাণিজ্য ব্যবস্থার সংস্কারে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে হবে এবং মূল বাণিজ্যিক অংশীদারদের সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক শক্তিশালী করতে হবে, যাতে বৈশ্বিক বাণিজ্য ব্যবস্থায় তার অবস্থান নিরাপদ থাকে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ