লেবাননে গতকাল রোববার বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। লেবাননের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সি এ তথ্য জানিয়ে বলেছে, দেশটির পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চলে এই হামলা চালানো হয়েছে।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা লেবাননে হিজবুল্লাহর বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে। এই লক্ষ্যবস্তুর মধ্যে সিরিয়া সীমান্ত বরাবর চোরাচালানের পথও আছে।

লেবাননের ইরানপন্থী রাজনৈতিক ও সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহর সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি গত ২৭ নভেম্বর কার্যকর হয়। ভঙ্গুর এই যুদ্ধবিরতিকে আরও নড়বড়ে করে তুলল ইসরায়েলের গতকালের বিমান হামলা।

ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সির খবরে বলা হয়, ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানগুলো লেবাননের পূর্ব বালবেক অঞ্চলের জান্তা শহরের উপকণ্ঠে হামলা চালিয়েছে। দক্ষিণের নাবাতিয়েহর কাছের এলাকাগুলোতেও হামলা হয়েছে।

ইসরায়েলের চালানো এসব হামলায় কেউ হতাহত হয়েছেন কি না, সে বিষয়ে কোনো তথ্য দেয়নি ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সি।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষকদের কাছে হুমকি হিসেবে উপস্থাপন করা বেশ কয়েকটি লক্ষ্যবস্তুতে তারা হামলা চালিয়েছে। হামলার লক্ষ্যবস্তুর মধ্যে আছে রকেট ছোড়ার একটি স্থান, একটি সামরিক ক্ষেত্র ও সিরিয়া-লেবানন সীমান্ত বরাবর চোরাচালানের পথ। হিজবুল্লাহর কাছে অস্ত্র পাচারের জন্য এই পথ ব্যবহার করা হয়।

আরও পড়ুনলেবাননে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর যুদ্ধবিরতি শুরু২৭ নভেম্বর ২০২৪

ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে গত নভেম্বরে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়। চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে ২৬ জানুয়ারি। এই সময়সীমার দুই সপ্তাহ আগে লেবাননে হিজবুল্লাহর লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাল ইসরায়েল। এদিকে চুক্তি হওয়ার পর থেকে উভয় পক্ষ পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছে। তারা পরস্পরের বিরুদ্ধে চুক্তির শর্ত লঙ্ঘনের অভিযোগ করছে।

নভেম্বরের চুক্তির শর্তে বলা হয়, হিজবুল্লাহ লেবাননের দক্ষিণে থাকা তাদের অবশিষ্ট সামরিক অবকাঠামো ভেঙে ফেলবে। সংগঠনটি তার বাহিনীকে সীমান্ত থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে লিটানি নদীর উত্তরে সরিয়ে নেবে।

আরও পড়ুনলেবাননে যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন নিয়ে হিজবুল্লাহ-ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ২৯ নভেম্বর ২০২৪.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ইউক্রেনে জেলেনস্কির বিকল্প নেতা খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র!

ইউক্রেনে শান্তিচুক্তির জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পদত্যাগ করা লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের একজন নেতা প্রয়োজন, তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। তিনি শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন এবং এই যুদ্ধ থামাতে পারবেন।’ খবর- সিএনএন

গণমাধ্যমের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডার পর এ কথা বললেন তিনি। বাগবিতণ্ডার এ ঘটনাটি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। ওই ঘটনার পর ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে ঐতিহাসিক চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, সেটিও বাতিল হয়ে যায়। আর এর পরই ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ কোন পথে, তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।

এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। শুক্রবারের ওই ঘটনায় সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গড়া ওয়াশিংটন-কিয়েভ সম্পর্ক ভেঙে পড়েছে। এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে। 

যদিও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আবারও এক টেবিলে বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া-দুই পক্ষই আলোচনায় না বসলে যুদ্ধ থামবে না। হোয়াইট হাউসে শুক্রবার ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডার পর থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আর কথা হয়নি। যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে হবে। তবে তাদের প্রতি বৈরী মনোভাব রাখলে, মস্কোকে আলোচনায় যুক্ত করা সম্ভব হবে না। কোনো চুক্তি করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই মনোভাবই দেখিয়ে আসছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সবকিছু আবার শুরু হতে পারে। আশা করি, তিনি (জেলেনস্কি) এটা বুঝতে পারবেন যে আমরা আসলে আরও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর আগে, তাঁর দেশকে সাহায্যের চেষ্টা করছি।’
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ