নতুন কোম্পানির কার্যক্রমে আদালতের স্থগিতাদেশ, ইজারাদারের হাতেই নৌ রুটের নিয়ন্ত্রণ
Published: 13th, January 2025 GMT
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের কুমিরা ও সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া (কুমিরা-গুপ্তছড়া) নৌপথে যাত্রী পরিবহনে অনুমতি পেয়েছিল ‘সন্দ্বীপ মেরিন সার্ভিস লিমিটেড’ নামের একটি কোম্পানি। তবে নতুন কোম্পানির কার্যক্রম আপাতত শুরু হচ্ছে না। ইজারাদারের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত বিআইডব্লিউটিএর এই অনুমতির ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছেন।
জানা গেছে, ১ জানুয়ারি সন্দ্বীপ মেরিন সার্ভিস লিমিটেডকে ছয়টি স্পিডবোটে যাত্রী পরিবহনের জন্য অনুমতি দেয় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। পাশাপাশি কুমিরা ঘাট এলাকায় অস্থায়ী টিকিট কাউন্টার করার মৌখিক অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু ওই কোম্পানিকে যাত্রী পরিবহনের জন্য টিকিটঘর নির্মাণে বাধা দেন ঘাটের বর্তমান ইজারাদার জগলুল হোসেনের লোকজন। এরপর রিটের পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত ৬ জানুয়ারি সন্দ্বীপ মেরিনের কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ দেন।
ইজারাদার জগলুল হোসেন জেলা পরিষদের পাশাপাশি বিআইডব্লিউটিএর কাছ থেকে সন্দ্বীপ-গুপ্তছড়া ঘাট ইজারা নিয়েছেন। এ জন্য জেলা পরিষদকে দৈনিক ১ লাখ টাকা ও বিআইডব্লিউটিএকে বছরে ৭৫ লাখ ৬২ হাজার ৫০০ টাকা দিতে হচ্ছে। নৌ রুটটিতে ইজারাদারের পরিচালিত নৌযান চলে। ভাড়াও ইজারাদার নির্ধারণ করেন। বিআইডব্লিউটিএর অনুমতি নিয়ে নতুন কোম্পানির নৌযান যাত্রী পরিবহন করলে এ ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা তৈরি হবে। পরিবহনভাড়াও যৌক্তিক হবে। তবে ইজারাদারের দাবি, অন্য কোনো কোম্পানির নৌযান যাত্রী পরিবহন করলে তাঁর বিনিয়োগ উঠে আসবে না।
ইজারাদার জগলুল হোসেন দাবি করেন, নৌ রুটে অন্য কোম্পানির নৌযান চললে তাঁর বিশাল অঙ্কের ক্ষতি হবে। বিনিয়োগ তুলে আনতে ইজারার মেয়াদ পর্যন্ত এককভাবে নৌযান চালাতে চান তিনি। এ জন্য সন্দ্বীপ মেরিন সার্ভিস লিমিটেড কোম্পানির কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে আদলতে রিট আবেদন করেছিলেন তিনি।
সন্দ্বীপের বাসিন্দা, বিআইডব্লিউটিএ ও ইজারাদারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সন্দ্বীপের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র পথ নৌপথ। সীতাকুণ্ডের সঙ্গে সন্দ্বীপের ছয়টি নৌপথের চারটিই চালু রয়েছে। তবে উভয় দিকে সড়কব্যবস্থার উন্নত হওয়ায় কুমিরা-গুপ্তছড়া নৌপথেই বেশি মানুষ যাতায়াত করে। এ কারণে এই নৌ রুট ইজারাদারের জন্য লাভজনক। নৌ রুটটিতে ইজারাদার এককভাবে নৌপথে যাত্রী পরিবহন করেন। ফলে যেমন ইচ্ছা ভাড়া আদায় করার অভিযোগ রয়েছে। সন্দ্বীপের মানুষের দাবির মুখে একাধিকবার স্পিডবোটসহ নৌযানের ভাড়া বাড়ানো কমানো হয়েছে। একসময় স্পিডবোটের ভাড়া ছিল ৫০০ টাকা। এরপর একাধিক দফায় তা কমানো হয়। ৫ আগস্ট দেশের প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের পর তা কমিয়ে ২৫০ টাকা করা হয়।
নতুন কোম্পানির কার্যক্রমের আদালতের নিষেধাজ্ঞার জারি নিয়ে ইজারাদারের ব্যানার.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
স্ত্রীর হাত কেটে ‘প্রতিশোধ’ স্বামীর
পরকীয়ার সন্দেহে গত বছরের ১৬ এপ্রিল স্বামীর পুরুষাঙ্গ কেটে ফেলেন স্ত্রী। চলতি বছরের ২৬ জানুয়ারি রাতে স্ত্রীর ডান হাত কেটে প্রতিশোধ নিয়েছেন স্বামী। এ ঘটনায় স্বামী ফিরোজ মিয়াকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ। তারা টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার বাসিন্দা।
স্বামী ফিরোজ মিয়া রাউৎবাড়ী গ্রামের মৃত শাহজাহান আলীর ছেলে এবং তার স্ত্রী জাকিয়া বেগম একই ইউনিয়নের পাশের জিগাতলা গ্রামের জামিলের মেয়ে।
গত বছর ১৬ এপ্রিল রাতে পরকীয়া সন্দেহে জাকিয়া তার স্বামী ফিরোজের পুরুষাঙ্গ ধারালো অস্ত্র দিয়ে কেটে ফেলেন। পরে ফিরোজের মা ফরিদা বেগম বাদী হয়ে জাকিয়ার বিরুদ্ধে ভূঞাপুর থানায় মামলা করেন। পরে পুলিশ জাকিয়াকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠায়। এরপর কিছুদিন পর জাকিয়া জামিন পেয়ে ঢাকার আশুলিয়া এলাকার একটি পোশাক কারখানায় চাকরি নেন। এদিকে স্ত্রীর চাকরির সংবাদ পেয়ে ফিরোজ মিয়া প্রতিশোধ নিতে তার সঙ্গে যোগাযোগ করে। চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে আশুলিয়া গাজীরচর এলাকার বাসা ভাড়া নিয়ে আবারও সংসার শুরু করেন তারা। এরপর সুযোগ বুঝে সোমবার রাতে জাকিয়ার ডান হাত কেটে বিচ্ছিন্ন করেন ফিরোজ মিয়া। এসময় স্ত্রী জাকিয়ার চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তার স্বামীকে আটক করে পুলিশকে খবর দেন এবং জাকিয়াকে উদ্ধার করে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে পাঠান। পরে পুলিশ এসে ফিরোজকে গ্রেপ্তার করে।
এ ব্যাপারে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর আলম সিদ্দিকী জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে ফিরোজকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এ ঘটনায় জাকিয়ার বাবা বাদী হয়ে ফিরোজের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছেন।