কলকাতার জনপ্রিয় বাংলা ব্যান্ড ফসিলসের প্রাক্তন গিটারিস্ট চন্দ্রমৌলির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। রবিবার (১২ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ৪৮ বছরের এই বাদ্যযন্ত্রশিল্পীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে স্থানীয় পুলিশ। হিন্দুস্তান টাইমস এ খবর প্রকাশ করেছে। 

২০০০ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত অর্থাৎ টানা ১৮ বছর ফসিলস ব্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন চন্দ্রমৌলি। সর্বশেষ ‘গোলক’ এবং ‘জম্বি কেজ কন্ট্রোল’ নামে দুই ব্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন চন্দ্রমৌলি। ‘গোলক’ ব্যান্ডের লিড ভোকালিস্ট মহুল চক্রবর্তী বলেন, “আজ (১২ জানুয়ারি) সকাল ১১টা থেকে আমি ওকে ফোন করছিলাম। কিন্তু কোনো জবাব পাইনি। চিন্তিত হয়ে এক বন্ধুকে নিয়ে ওর বাড়ি আসার সিদ্ধান্ত নিই। এসে দেখলাম ও আর নেই! এটা বাংলা মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির জন্য বিরাট ক্ষতি।”

মধ্য কলকাতার ইন্ডিয়ান মিরর স্ট্রিটে ভাড়া বাড়িতে থাকতেন চন্দ্রমৌলি। চন্দ্রমৌলির বাবা-মা একটি আমন্ত্রণে বাইরে গিয়েছিলেন, বাড়িতে একাই ছিলেন চন্দ্রমৌলি। এই গিটারিস্টের ঝুলন্ত দেহ প্রথম দেখতে পান তার বর্তমান ব্যান্ড সঙ্গী মহুল চক্রবর্তী। রবিবার চন্দ্রমৌলির বাড়িতে হাজির হয়েছিলেন মহুল। চন্দ্রমৌলির ঝুলন্ত দেহ দেখা মাত্রই স্থানীয় থানায় ফোন করেন তিনি। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে কলকাতা পুলিশ।

আরো পড়ুন:

‘আমি ভীষণভাবে বিয়েটা টিকিয়ে রাখতে চেয়েছি’

ঋতাভরীর বিয়ে!

ফসিলসের ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন দলটির লিড ভোকালিস্ট রূপম ইসলামের স্ত্রী রূপসা। তিনি বলেন, “কল্যাণীতে শো করতে যাওয়ার পথে আমাদের কাছে খবরটা আসে। ১৮ বছর ও আমাদের সঙ্গে পারফর্ম করেছে। শারীরিক অসুস্থতার কারণে ফসিলস ছেড়েছিল চন্দ্রমৌলি। ব্যান্ডের প্রত্যেক সদস্য ভেঙে পড়েছে, রূপম বিধ্বস্ত।”

প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন চন্দ্রমৌলি। গত কয়েক বছর ধরেই হাতে তেমন কাজ ছিল না। অর্থনৈতিক সংকটে ছিলেন। ডিপ্রেশনের জন্য চিকিৎসাও চলছিল। চন্দ্রমৌলির বন্ধু ও পরিজনরা পুলিশকে তেমনটাই জানিয়েছেন।

পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, চন্দ্রমৌলির ঘর থেকে সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাতে লেখা রয়েছে, “আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়।” সুইসাইড নোটের লেখার সঙ্গে চন্দ্রমৌলির আগের হাতের লেখা মিলিয়ে দেখছেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা।

১৯৭৬ সালের ৫ জুন জন্মগ্রহণ করেন চন্দ্রমৌলি। ইঞ্জিনিয়ারিং ক্যারিয়ার ছেড়ে সংগীতকেই পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন তিনি।

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

এছাড়াও পড়ুন:

সাতকানিয়ায় ‘ডাকাত সন্দেহে’ গণপিটুনিতে নিহত ২, গুলিবিদ্ধ ৪ বাসিন্দা

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় ‘ডাকাত সন্দেহে’ গণপিটুনিতে দুই যুবক নিহত হয়েছেন। এর আগে ওই যুবকদের গুলিতে স্থানীয় চার বাসিন্দা আহত হন। সোমবার রাতে সাতকানিয়ার এওচিয়া ইউনিয়নের ছনখোলা পশ্চিমপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত যুবকদের পরিচয় তাৎক্ষণিক নিশ্চিত করতে পারেননি পুলিশ। গুলিবিদ্দ স্থানীয় চার বাসিন্দা হলেন ওবায়দুল হক (২২), মামুনুর রশিদ (৪৫), নাসির উদ্দিন (৩৮) ও আব্বাস উদ্দিন (৩৮)। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, আটটি গুলির খোসা এবং একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা জব্দ করেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোমবার রাত সাড়ে নয়টা থেকে দশটার মধ্যে চারটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে একদল যুবক ছনখোলা পশ্চিমপাড়া এলাকায় গিয়ে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করতে থাকেন। এ সময় স্থানীয় মসজিদে ডাকাত পড়েছে এমন প্রচারের পর লোকজন জড়ো হয়ে অটোরিকশায় করে আসা দুই যুবককে আটক করে পিটুনি দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুই যুবক নিহত হন।

এক যুবকের লাশের পাশ থেকে একটি পিস্তল উদ্ধার করেছে পুলিশ। দুই যুবককে আটকের আগে গুলির ঘটনায় আহত চারজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) সাইফুল ইসলাম, সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিল্টন বিশ্বাস, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দলসহ সাতকানিয়া থানা পুলিশের সদস্যরা।

সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহেদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ডাকাত সন্দেহে মসজিদের মাইকে প্রচারের পর স্থানীয় বাসিন্দাদের পিটুনিতে দুই যুবক নিহত হয়েছেন। এখনো ওই দুই যুবকের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ