শিশু বলাৎকারের অভিযোগে বিএনপি নেতাকে শোকজ
Published: 13th, January 2025 GMT
১৩ বছর বয়সী এক শিশুকে বলাৎকারের অভিযোগে সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফকির জুয়েল রানাকে শোকজ করা হয়েছে। রোববার রাতে উপজেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত পত্রে এ তথ্য জানানো হয়।
পত্রে বলা হয়, ফকির জুয়েল রানার বিরুদ্ধে শিশু বলাৎকারের অভিযোগ উঠছে। যা রোববার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে দলের ভাবমূর্তি ব্যাপকভাবে ক্ষুণ্ণ হয়েছে। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে এ বিষয়ে কারণ দর্শাতে ব্যর্থ হলে জুয়েল রানার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ প্রসঙ্গে চৌহালী উপজেলা বিএনপির সভাপতি জাহিদ মোল্লা জানান, বিষয়টি জানার পরই অভিযুক্ত জুয়েল রানাকে শোকজ করা হয়েছে। পাশাপাশি ঘটনা তদন্তে দলের পক্ষ থেকে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে জুয়েল রানা জানান, আমাকে ফাঁসানোর জন্য আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। ওই শিশুকে শারীরিক পরীক্ষা করলেই তার প্রমাণ পাওয়া যাবে।
জানা গেছে, পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে শনিবার রাত ১১টার দিকে উপজেলা সদরের চর সলিমাবাদ বাজার এলাকায় ডেকে নিয়ে বিএনপি নেতা জুয়েল রানা ওই শিশুটিকে জোরপূর্বক বলাৎকার করেন। বাড়িতে ফিরে গিয়ে স্বজনদের জানানোর পর বিষয়টি জানাজানি হয়। এরপর ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। নির্যাতনের শিকার ১৩ বছর বয়সী ওই শিশুটি স্থানীয় একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র।
চৌহালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউর রহমান বলেন, শিশু বলাৎকারের বিষয়টি আমরা লোকমুখে শুনেছি। তবে এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে, এ ঘটনায় ভিক্টিমের পক্ষ বা তার পরিবার থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত থানায় মামলা হয়নি। তবে, ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে স্থানীয়ভাবে দফায় দফায় মীমাংসার চেষ্টা চলছে। স্থানীয় কিছু বিএনপির নেতাকর্মী শুরু থেকেই বিষয়টি মীমাংসায় দৌঁড়ঝাপ চালু রেখেছেন বলেও তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বগুড়ায় নারী হাজতখানায় পরিবারের সঙ্গে পুরুষ আসামির সাক্ষাৎ
বগুড়ায় আলোচিত ১৭ মামলার আসামি তুফান সরকারকে আদালতের নারী হাজতখানায় পরিবারের পাঁচ সদস্যের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ করে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে আদালত পুলিশের ২ সদস্যকে প্রত্যাহার ও ৫ সাক্ষাত প্রার্থীকে ৫৪ ধারায় চালান দেওয়া হয়েছে।
সোমবার বিকেলে বগুড়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যাহার করা পুলিশের ২ সদস্য হলেন- সহকারী টাউন উপ-পরিদর্শক (এটিএসআই) জয়নাল আবেদিন ও নারী কনস্টেবল ইকসানা খাতুন।
জানা যায়, তুফান সরকার বগুড়া শহর যুব শ্রমিকলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তিনি বগুড়া শহরের চকসুত্রাপুর এলাকার মজিবর সরকারের ছেলে। তিনি হত্যা, মাদক, ধর্ষণ, ছিনতাইসহ ১৭ মামলার আসামি।
জানা যায়, সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের দ্বিতীয় তলায় নারী হাজতখানার দরজা কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। ভেতরে তুফান সরকার, তার স্ত্রী, ছোট বোন, শাশুড়ি, স্ত্রীর বড় বোন এবং একজন আইনজীবীর সহকারী মিলে গল্প করছিলেন। পরে নারী হাজতখানায় পুরুষ আসামি ঢুকার বিষয়টি জানাজানি হলে আদালত চত্বরে হৈ চৈ পড়ে যায়। পরে দ্রুত তুফান সরকারকে প্রিজন ভ্যানে কারাগারে পাঠানো হয়।
এসময় তুফান সরকারের সঙ্গে দেখা করতে আসা নারী হাজত খানা থেকে ওই ৫ জন সরে যান। পরে তাদের আদালত চত্বর থেকে আটক করে ৫৪ ধারায় চালান দেওয়া হয়।
আটক ৫ জন হলেন, তুফানের শাশুড়ি তাসলিমা বেগম, তুফান সরকারের স্ত্রী আশা বেগম, শ্যালিকা ফেরদৌসি বেগম, শ্যালক নয়ন, তুফানের আইনজীবীর সহকারী হারুনুর রশিদ।
বগুড়া আদালত পুলিশের পরিদর্শক মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, সকালে তুফান সরকারকে বিদ্যুৎ সংক্রান্ত একটি মামলায় আদালতে হাজিরার জন্য কারাগার থেকে আনা হয়। কারাগার থেকে আনা অন্য সব হাজতিকে দুপুরের মধ্যেই প্রিজন ভ্যানে পাঠিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু বাদ পড়ে তুফান সরকার। হাজতখানার চাবি এটিএসআই জয়নাল আবেদিনের কাছে থাকে। তুফান সরকারকে কারাগারে না পাঠিয়ে তাকে নারী হাজতখানায় পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাত করার সুযোগ করে দেয় জয়নাল আবেদিন। আদালতের সবার অগোচরে ঘটনাটি ঘটে।
বগুড়ার পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা বলেন, পুরুষ আসামিকে নারী হাজত খানায় পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগে এটিএসআই জয়নাল আবেদিন ও এক নারী কনস্টেবলকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পুলিশের আরও যাদের গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে এক কলেজ ছাত্রীকে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ উঠে তুফান সরকারের বিরুদ্ধে। পরে শালিস ডেকে ভুক্তভোগী নারী ও তার মা'কে দোষী উল্লেখ করে মারধর করে এবং মা-মেয়ের মাথা ন্যাড়া করে দেয় তুফান সরকার। সেই ঘটনায় দেশ জুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হলে তুফান সরকার গ্রেপ্তার হয়।