Prothomalo:
2025-03-03@17:54:57 GMT

সড়কে বন্যার ক্ষত, ভোগান্তি

Published: 13th, January 2025 GMT

নোয়াখালীর সেনবাগ-সোনাইমুড়ী সড়কের সেনবাগ রাস্তার মাথা এলাকা থেকে সোনাইমুড়ী পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার সড়কে ছোট–বড় অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় উঠে গেছে পিচঢালাই। একই অবস্থা জেলার সোনাপুর-কোম্পানীগঞ্জ-জোরালগঞ্জ সড়কেরও। সোনাপুর থেকে কবিরহাট উপজেলার ধানশালিক এলাকা পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার এলাকার পুরো অংশে খানাখন্দ।

নোয়াখালীতে গত বছরের বন্যায় জেলার বিধ্বস্ত সড়কগুলো একরকম চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। সংস্কারে ধীরগতির কারণে খানাখন্দে ভরা সড়কে যানবাহন ও যাত্রীদের ভোগান্তি দিন দিন বাড়ছে। সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ বলছে, সড়ক সংস্কারে যে পরিমাণ বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে, তা পাওয়া যায়নি। তবু প্রাপ্ত বরাদ্দ দিয়ে যতটুকু সম্ভব সড়ক সংস্কার করা হয়েছে।

সেনবাগ উপজেলার উত্তর সাহাপুর খালেকের দোকান এলাকার বাসিন্দা সহিদুল ইসলাম বলেন, গত বন্যায় সেনবাগ রাস্তার মাথা থেকে সোনাইমুড়ী পর্যন্ত এই সড়কটি দুই ফুট পানির নিচে তলিয়ে ছিল প্রায় দুই সপ্তাহ। শুরুর দিকে বন্যার পানির তোড়ে সড়কজুড়ে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়, যা ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে। গর্তের ওপর দিয়ে হালকা ও ভারী যানবাহন ও পণ্যবাহী গাড়ি চলাচলের কারণে সড়কের অবস্থা দিন দিন আরও খারাপ হচ্ছে।

পণ্যবাহী ট্রাকের চালক মো.

জসিম বলেন, বন্যার পানি নামার পরপর যদি সড়কের সংস্কার করা হতো, তাহলে এত খারাপ অবস্থা হতো না। সংস্কারে বিলম্বের কারণে বর্তমানে সড়কের সেনবাগ উপজেলার মহিদীপুর থেকে ডাকবাংলো এলাকা ও ছাতারপাইয়া এলাকা বেশি খারাপ হয়ে গেছে। গর্তে গাড়ি চালাতে গিয়ে প্রায় প্রতিদিনই গাড়ি মেরামত করতে হয়। যানবাহন চলে ধীরগতিতে হেলেদুলে।

গত বছরের জুলাই-আগস্টের বন্যায় নোয়াখালীতে সওজের প্রায় ২০০ কিলোমিটার সড়কের ক্ষতি হয়েছে বলে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নোয়াখালী কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো সংস্কারের জন্য মন্ত্রণালয়ের কাছে বরাদ্দ চাওয়া হয় ২০ কোটি টাকা। বরাদ্দ পাওয়া গেছে প্রায় ১৬ কোটি টাকা। বরাদ্দ করা অর্থে এরই মধ্যে কিছু সড়কের সংস্কার করা হয়েছে। কিছু সড়কের সংস্কারে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। আর কিছু সড়ক সংস্কারে দরপত্র আহ্বানের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। চাহিদা অনুযায়ী পুরো অর্থ বরাদ্দ পাওয়া গেলে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সব সড়কের সংস্কার শেষ করা সম্ভব হবে বলে জানানো হয়।

সোনাপুর-কোম্পানীগঞ্জ-জোরালগঞ্জ সড়কে চলাচলকারী কোহিনুর আক্তার বলেন, তিনি একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি করেন। সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন অটোরিকশাযোগে যাতায়াত করেন। খানাখন্দের কারণে গাড়ির ঝাঁকুনিতে অবস্থা কাহিল হয়ে যায়। তবুও বাধ্য হয়ে চলতে হয়। দিন যত যাচ্ছে, সড়কের অবস্থাও তত খারাপ হচ্ছে।

সড়কের সংস্কারে ধীরগতির বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের নোয়াখালী কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী সৌম্য তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলোর মধ্যে সেনবাগ-চন্দেরহাট সড়কসহ কয়েকটি সড়কের সংস্কারকাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। এ ছাড়া সেনবাগ-সোনাইমুড়ী সড়কের সংস্কারে এরই মধ্যে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। অন্যান্য সড়কের সংস্কারে দরপত্র আহ্বানসহ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সায়েদাবাদ পানি শোধনাগার বাস্তবায়নে প্রকল্প, ব্যয় হবে ৫০৩৩ কোটি টাকা

ঢাকা ওয়াসায় ‘সায়েদাবাদ পানি শোধনাগার নির্মাণ প্রকল্পের ফেজ-৩’ এর আওতায় সায়দাবাদ ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (ফেজ-৩) প্রকল্পের সংগ্রহ- কম্পোনেন্ট ১- ইনটেক, কাঁচা জল পাম্পিং স্টেশন (আরডব্লিউপিএস) এবং কাঁচা জলের পাইপলাইন (আরডব্লিউপি) কাজের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নিয়োগের উদ্যোগ নিয়েছে স্থানীয় সরকার, পল্লীউন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়। প্রকল্পে মোট ব্যয় হবে ৫০৩৩ কোটি ৫৮ লাখ ৬৪ হাজার ৪২১ টাকা।

সূত্র জানায়, ঢাকা ওয়াসা কর্তৃক ঢাকা শহরে বসবাসকারী প্রায় দুই কোটি জনসাধারণের জন্য পানি সরবরাহ সেবা প্রদান করা হচ্ছে। ঢাকা শহরে মোট পানি সরবরাহের প্রায় ৭০ শতাংশ ভূ-গর্ভস্থ উৎস থেকে এবং প্রায় ৩০ শতাংশ ভূ-উপরিস্থ উৎস থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে ভূ-গর্ভস্থ পানি ব্যবহারের ফলে পানির স্তর প্রতিবছর প্রায় ২-৩ মিটার নিচে নেমে যাচ্ছে; যা টেকসই উন্নয়নের সাথে সাংঘর্ষিক। 

২০৩০ সালের মধ্যে ভূ-উপরিস্থ উৎস থেকে পানি সরবরাহের পরিমাণ ৭০ শতাংশে উন্নীত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এ উদ্দেশ্যে ইতোমধ্যেই ঢাকা ওয়াসা কর্তৃক সায়েদাবাদ পানি শোধনাগার ফেজ-১ ও ফেজ-২, পদ্মা পানি শোধনাগার প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে এবং গন্ধর্বপুর পানি শোধনাগার প্রকল্প বাস্তবায়বানাধীন রয়েছে।

এরই ধারাবাহিকতায়, ঢাকা মহানগরীতে বসবাসকারী জনসাধারণের জন্য একটি টেকসই ও পরিবেশবান্ধব পানি সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে ‘সায়েদাবাদ পানি শোধনাগার প্রকল্প (ফেজ-৩)’ বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এই প্রকল্পের প্যাকেজ-১ এর আওতায় ইনটেক, দৈনিক ৯৫.০০ কোটি লিটার উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন পাম্পিং স্টেশন এবং ২৭ কি. মি. দীর্ঘ ২টি অপরিশোধিত পানির পরিচালন লাইন নির্মাণ করা হবে। এছাড়া, প্যাকেজ-২ এর আওতায় দৈনিক ৪৫ কোটি লিটার পরিশোধন ক্ষমতা সম্পন্ন পানি শোধনাগার ও স্লাজ শোধনাগার এবং প্যাকেজ-৩ এর আওতায় ৩৫০ মিমি হতে ২০০০ মিমি ব্যাসের প্রায় ৫৪ কিলোমিটার পরিশোধিত পানির বিতরণ নেটওয়ার্ক নির্মাণ করা হবে।

প্রকল্পের মূল ডিপিপি'তে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৪৫৯৭.৩৬০৫ কোটি এবং ১ম সংশোধনীতে প্রকল্প ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৭৫১৮.০২৭৫ কোটি টাকা; যার মধ্যে জিওবি খাতে ২৬২৫.২৩ কোটি টাকা, প্রকল্প সাহায্য খাতে ৪৮৬২.৭৯ কোটি টাকা ও ঢাকা ওয়াসার নিজস্ব তহবিল খাতে ৩০.০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে।

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) কর্তৃক ২০১৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর তারিখে প্রকল্পটির অনুমোদন এবং স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক ২০১৫ সালের ৪ অক্টোবর তারিখে প্রকল্পটির প্রশাসনিক অনুমোদন দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ২০২০ সালের ২৫ অক্টোবর তারিখে প্রকল্পটির ১ম সংশোধনী একনেক কর্তৃক অনুমোদিত হয় এবং ২০২১ সালের ২৯ নভেম্বর তারিখে স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে প্রকল্পটির প্রশাসনিক আদেশ জারী করা হয়।

প্রকল্পের অর্থায়নের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ সরকার ও ফ্রেন্স উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা এজেন্সিজ ফ্রান্সাইজ ডি ডেভেলপমেন্ট (এএফডি) এর সঙ্গে ২০১৮ তারিখে ১৬ মে তারিখে ১১৫ মিলিয়ন ইউরোর, ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (ইআইবি) এর সঙ্গে ২০১৮ সালের ৪ জুন তারিখে ৪০ মিলিয়ন ইউরোর, জার্মান উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা কেআইডব্লিউ এর সঙ্গে ২০১৮ সালের ১৭ অক্টোবর তারিখে ৯০ মিলিয়ন ইউরোর ঋণচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এর পাশাপাশি ডানিডা সাসটেইনাবল ইন্ফ্রাস্ট্রাকচার ফ্যাইন্যান্স (ডিএসআইএফ) এর সঙ্গে ২০১৯ ০৩ অক্টোবর তারিখে ১৮৮ মিলিয়ন ইউরোর জি টু জি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। প্রকল্প ব্যয় বৃদ্ধির কারণে ঋণচুক্তিগুলোর অতিরিক্ত আরও ২০০ মিলিয়ন ইউরো এএফডি থেকে, ৯০ মিলিয়ন ইউরো ইবিআই থেকে, ৭০ মিলিয়ন ইউরো কেএফডব্লিউ থেকে এবং ১১২ মিলিয়ন ইউরো ডিএসআইপি থেকে ঋণ সহায়তার প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। উল্লেখ্য যে, প্যাকেজ-১ এর ব্যয়ভার এএফডি,ইবিআই, কেআইডব্লি  প্রদত্ত ঋণ সহায়তা থেকে নির্বাহ করা হবে।

ঋণ চুক্তির শর্ত অনুযায়ী এএফডি’র প্রকিউরমেন্ট গাইড লাইন প্যাকেজ-১ এর ঠিকাদার নিয়োগের জন্য প্রণীত প্রিকোয়ালিফিকেশন ডকুমেন্টের উপর এএফডি’র অনাপত্তি ভিত্তিতে ২০২২ সালের ১৮ মার্চ তারিখে প্রিকোলিফিকেশন বিড আহবান করা হয়। দরপত্র প্রক্রিয়াকরণ, মুল্যায়ন ও বাস্তবায়নের জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠান মুট ম্যাকডোনাল্ড লিমিটেডকে প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট কনসালট্যান্ট (পিএমসি) হিসেবে নিয়োগ করা হয় এবং স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে দরপত্র উন্মুক্তকরণ কমিটি এবং দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি গঠন করা হয়)।

বর্ণিত প্যাকেজের প্রিকোয়ালিফিকেশন বিডের  বিপরীতে মোট ১৭ টি প্রতিষ্ঠান প্রয়োজনীয় দলিলাদি দাখিলের শেষ সময় ছিল ২০২২ সালের ৩০ জুন। এ সময়ের মধ্যে ৬টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান প্রিকোয়ালিফিকেশন বিড দাখিল করে। এরমধ্যে ৩টি প্রতিষ্ঠান নন-রেসপন্সিভ হয়। বাকি ৩টি প্রতিষ্ঠানকে রেসপন্সিভ ঘোষণা করা হয়।

প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ধাপ সম্পন্ন করে সংক্ষিপ্ত তালিকা থেকে যৌথভাবে সিএমইসি-ওয়াইআরইসি-এসএমইডিআইকে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য সুপারিশ করেছে দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি। প্রকল্পে ভ্যাট ও এআইটিসহ মোট ব্যয় হবে ৫০৩৩ কোটি ৫৮ লাখ ৬৪ হাজার ৪২১ টাকা।

এ সংক্রান্ত একটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির পরবর্তী সভায় উপস্থাপন করা হবে বলে সূত্র জানিয়েছে।

ঢাকা/টিপু

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সায়েদাবাদ পানি শোধনাগার বাস্তবায়নে প্রকল্প, ব্যয় হবে ৫০৩৩ কোটি টাকা
  • বর্ধিত সভায় উপস্থিত না হয়ে ‘দরপত্র জমা দিতে’ যাওয়া শ্রীপুর বিএনপির সভাপতিকে শোকজ