ঢাকার বায়ু ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’, রাজধানীর ৩ স্থানে দূষণ মারাত্মক
Published: 13th, January 2025 GMT
বিশ্বের ১২৪ নগরীর মধ্যে আজ সোমবার সকালে বায়ুদূষণে দ্বিতীয় স্থানে আছে ঢাকা। আজ সকাল সাড়ে আটটার দিকে আইকিউ এয়ারের মানসূচকে ঢাকার বায়ুর মান ২৫২। বায়ুর এই মানকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আজ বিশ্বে বায়ুদূষণে ২৫৫ স্কোর নিয়ে প্রথম অবস্থানে আছে মঙ্গোলিয়ার রাজধানী উলানবাটোর।
বায়ুদূষণের পরিস্থিতি নিয়মিত তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার। বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা এই লাইভ বা তাৎক্ষণিক সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটা নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় ও সতর্ক করে। সেই সতর্কবার্তায় নগরবাসীর উদ্দেশে আইকিউ এয়ারের পরামর্শ, বাইরে বের হলে সুস্বাস্থ্যের জন্য অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে।
দেশের অন্যান্য বিভাগীয় শহরের মধ্যে চট্টগ্রামের বায়ুর মান ৯৮, রাজশাহীতে ১৮৪ আর খুলনায় ১৭৫। ঢাকা ও আশপাশের তিন সর্বোচ্চ দূষিত এলাকার মধ্যে আছে ঢাকার মার্কিন দূতাবাস (৫৯৯) গোড়ান (৪৯৫), কল্যাণপুর (৩০৮)।
যদি কোনো অঞ্চলে পরপর ৩ দিন ৩ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বাই রোমান ৩০০-এর বেশি থাকে বা দুর্যোগপূর্ণ থাকে, তবে সেই অঞ্চলে স্বাস্থ্যগত জরুরি অবস্থা জারি করা দরকার বলে মনে করেন পরিবেশবিদেরা।
ঢাকার বায়ুদূষণের প্রধান উপাদান হলো বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা বা পিএম ২.
বায়ুদূষণের যে অবস্থা, তা থেকে রক্ষা পেতে আইকিউ এয়ারের পরামর্শ, ঘরের বাইরে গেলে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। খোলা স্থানে ব্যায়াম করা যাবে না। আরও একটি পরামর্শ, ঘরের জানালা বন্ধ রাখতে হবে।
গত ডিসেম্বরের একটি দিনও নির্মল বায়ু পায়নি রাজধানীবাসী। দূষণসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে গবেষণাকারী প্রতিষ্ঠান ক্যাপসের এক জরিপে দেখা গেছে, ডিসেম্বরে যত বায়ুদূষণ ছিল, তা গত ৯ বছরে সর্বোচ্চ।
ক্যাপসের গবেষণায় দেখা গেছে, গত বছরের ডিসেম্বরে বায়ুর গড় মান ছিল ২৮৮। ২০১৬ সালের থেকে এত খারাপ কখনোই হয়নি। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে বায়ুর মান ছিল ১৯৫। গত ৯ বছরে ডিসেম্বরে ঢাকার বায়ুর মান ছিল ২১৯ দশমিক ৫৪। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে এই মান ৩১ ভাগের বেশি বেড়ে গেছে। আর ২০২৩ সালের তুলনায় বেড়েছে ২৬ ভাগের বেশি।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ফের রপ্তানি হতে পারে সুগন্ধি চাল
ফের সুগন্ধি চাল রপ্তানির অনুমতি দেওয়ার কথা ভাবছে সরকার। প্রতিবছর নির্দিষ্ট পরিমাণ সুগন্ধি চাল রপ্তানির অনুমতি দিতে পারে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে অনুষ্ঠিত খাদ্য পরিকল্পনা ও পর্যবেক্ষণ কমিটির সভায় এ বিষয়ে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছে। আরও পর্যালোচনা শেষে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে সরকার।
জানা গেছে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি সাপেক্ষে স্থানীয় উৎপাদন ও চাহিদা পর্যালোচনার ভিত্তিতে সুগন্ধি চাল রপ্তানি হয়ে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২১ সালের জুলাইয়ে ২৮টি প্রতিষ্ঠানকে ২৫ হাজার টন সুগন্ধি চাল রপ্তানির অনুমতি দেয় সরকার। কিন্তু ২০২২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি খাদ্য মন্ত্রণালয় স্থানীয় চালের মজুত বিবেচনায় সুগন্ধিসহ সব ধরনের চাল রপ্তানিতে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করে। সে পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ২৯ জুন সুগন্ধি চাল রপ্তানি সাময়িক স্থগিত করা হয়।
এরপর রপ্তানিকারকদের অনুরোধে ২০২৩ সালের ১৩ জুলাই পুনরায় সুগন্ধি চাল রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়। একই সঙ্গে আগে অনুমোদন পাওয়া ২৮ প্রতিষ্ঠানকে ১৮ হাজার ২৪৪ টন সুগন্ধি চাল ২০২৪ সালের ৩০ জুনের মধ্যে রপ্তানি করার অনুমতি দেওয়া হয়। এরপর তিন মাস না যেতেই কৃষি মন্ত্রণালয়ের সুপারিশে ২০২৩ সালের ১৭ অক্টোবর আবার সুগন্ধি চাল রপ্তানি ফের বন্ধ করা হয়।
রপ্তানি আদেশ বাতিল হওয়ায় চাল রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোকে চালসহ খাদ্যপণ্যবাহী ট্রাক ও কন্টেইনার বন্দর থেকে ফেরত আনতে হয়। যার ফলে বিপুল পরিমাণ অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক ক্ষতির সম্মুখীন হন তারা। রপ্তানিকারকরা বলে আসছেন, অভ্যন্তরীণ চাহিদার ভারসাম্যের ক্ষেত্রে একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ ছাড়াই হঠাৎ করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্বে আসার পর সুগন্ধি চাল আবার রপ্তানি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। সম্প্রতি বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন সুগন্ধি চাল রপ্তানির বিষয়ে সুপারিশ করে। কমিশন জানায়, গত কয়েক বছর ধরে সুগন্ধি চালের উৎপাদন চাহিদার তুলনায় বেশি হওয়ায় রপ্তানি বহুমুখীকরণের স্বার্থে দেশীয় চাহিদার অতিরিক্ত চাল ‘কেস টু কেস’ ভিত্তিতে কঠোর মনিটরিংয়ের আওতায় অনুমতি দেওয়া যেতে পারে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মইনুল খান সমকালকে বলেন, পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সুগন্ধি চালের সঙ্গে খাদ্যনিরাপত্তার তেমন একটা সম্পর্ক নেই। উৎসব-পার্বণে এই চাল ব্যবহার করা হয়। এক কেজি সুগন্ধি চাল রপ্তানি করে যে অর্থ পাওয়া যাবে, তা দিয়ে চার কেজি মোটা চাল আমদানি করা যাবে। মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছে এ চালের চাহিদা রয়েছে।