স্বাস্থ্য খাতে অনেক অবকাঠামো তৈরি করে ফেলে রাখা হয়েছে। কিছুদিন পরপরই এমন অবকাঠামো খবরের শিরোনাম হয়। রাজশাহীতে ২০০ শয্যার একটি শিশু হাসপাতালের কাজ শেষ হয়েছে দেড় বছর আগে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ সে হাসপাতাল বুঝে নিচ্ছে না। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরকে বারবার জানানোর পরও তারা কোনো সাড়া দিচ্ছে না। বিষয়টি এমন কেন হবে? মন্ত্রণালয় বা অধিদপ্তর কি মনে করছে অবকাঠামো বানিয়েই উন্নয়ন শেষ?

রাজশাহী নগরের টিবিপুকুর এলাকায় ৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে হাসপাতালটির নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৬ সালে। মূল কাজ তিন বছরেই শেষ হয়ে যায়। এরপর আরও কিছু বাড়তি কাজ দেওয়া হয়েছিল। সেগুলোও ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে শেষ করে প্রতিষ্ঠানটি। সরকারি কোনো কর্তৃপক্ষ হাসপাতাল বুঝে না নেওয়ায় সেবা কার্যক্রমও শুরু করা যাচ্ছে না।

এমন পরিস্থিতিতে ঠিকাদার নিজেদের লোক দিয়ে প্রায় চার বছর ধরে হাসপাতালটি পাহারা দিচ্ছেন। যদিও সেই পাহারা খুব একটা জোরালো নয়। সম্প্রতি সেই হাসপাতাল ঘুরে আসেন রাজশাহীর প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক। সেখানে গিয়ে তিনি দেখেন, হাসপাতালের ভেতরে শুধু ঠিকাদারের একজন কর্মচারী পাহারায় আছেন। ওই কর্মচারী বলেন, ‘বাইরের সব ফিটিংস রাতের বেলা চুরি হয়ে যাচ্ছে। কতক্ষণ এভাবে পাহারা দিয়ে রাখা যায়!’

হাসপাতাল বুঝে না নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে রাজশাহী গণপূর্ত বিভাগের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, ‘সমস্যা আমাদের নয়। সমস্যা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। হাসপাতালের পক্ষে কে বুঝে নেবে, এটা নিয়েই জটিলতা। আমরা তো কাজ শেষ করে দিয়েছি।’ রাজশাহীর সিভিল সার্জন বলছেন, তাঁরা হাসপাতাল বুঝে নেওয়ার জন্য কয়েক দফা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরে চিঠি দিয়েছেন। সেখান থেকে সাড়া না পাওয়ায় হাসপাতাল হস্তান্তরে জটিলতা দেখা দিয়েছে।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে রোগীর চাপ সামলানো কঠিন হয়ে যায়। মানবেতরভাবে চিকিৎসা নিতে হয় শিশুদের। ২০০ শয্যার হাসপাতালটি চালু হলে রাজশাহীর শিশু রোগীদের চিকিৎসাসুবিধা নিঃসন্দেহে আরও বাড়ত। কিন্তু কোটি কোটি টাকা খরচ করে বানানো হাসপাতালটি ফেলে রাখা হয়েছে। এটি কোনোভাবে মানা যায় না। হাসপাতালটির দায়িত্ব বুঝে নিতে মন্ত্রণালয় বা অধিদপ্তরের সমস্যাটা কোথায়? আমরা আশা করব, এ ব্যাপারে তাঁরা সদুত্তর দেবেন এবং হাসপাতালটি দ্রুত চালুর উদ্যোগ নেবেন।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

এই কঠিন সময়ে ঐক্য ধরে রাখা প্রয়োজন: ঢাবি উপাচার্য

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে জাতির ঐক্য রক্ষার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান।

উপাচার্য বলেন, ‘আমরা একটি কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করছি। এক অর্থে জাতির জন্য এটি একটি ক্রান্তিকাল। এই সময়ে আমাদের ঐক্য ধরে রাখা একান্তই প্রয়োজন।’

আজ রোববার সকালে রাজধানীর মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের কাছে নিয়াজ আহমেদ খান এ কথা বলেন।

ঢাবি উপাচার্য বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস জাতির জন্য পরম শ্রদ্ধা, কৃতজ্ঞতা ও মমতার দিন। এক গভীর ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, চিন্তাবিদ ও বুদ্ধিজীবীরা নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন। তাঁদের সেই চূড়ান্ত আত্মত্যাগ ইতিহাসে চিরভাস্বর হয়ে আছে।

নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, যুগে যুগে ও প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ এ জাতিকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করতে ঐক্যবদ্ধ করেছে এবং সাহস জুগিয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় জাতি ১৯৯০ ও ২০২৪ সালের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয়েছে।

উপাচার্য আরও বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ আজও জাতির ঐক্য ধরে রাখার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোকবর্তিকা। একই সঙ্গে ১৯৫২, ১৯৬৮, ১৯৬৯, মহান মুক্তিযুদ্ধসহ প্রতিটি আন্দোলন–সংগ্রামে যাঁরা রক্ত ও জীবন দিয়ে দেশের স্বাধীনতা ও মর্যাদা রক্ষা করেছেন, তাঁদের সবার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা।

নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, ১৯৫২ থেকে ২০২৪—এর প্রতিটি দিন ও ঘটনাপ্রবাহ জাতির মৌলিক পরিচয়ের মাইলফলক। এর কোনো অংশ বাদ দেওয়ার সুযোগ নেই। এ ইতিহাসই যুগে যুগে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রেখেছে, আর বর্তমান সময়ে সেই ঐক্য ধরে রাখাই সবচেয়ে বড় প্রয়োজন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ