বলিউডের দাপুটে অভিনেতা ইরফান খান। দীর্ঘদিন নিউরোন্ডোক্রেইন রোগে ভোগে ২০২০ সালের ২৯ এপ্রিল মারা যান তিনি। মাত্র ৫৩ বছর বয়সে তার জীবনপ্রদীপ নিভে যায়।

অভিনয় ক্যারিয়ারে অনেক প্রশংসিত সিনেমা উপহার দিয়েছেন ইরফান খান। তাই তো মৃত্যুর পরও একবিংশ শতাব্দীর সেরা ষাটজন অভিনয়শিল্পীয় পেয়েছেন ইরফান। যে তালিকায় বিশ্বের তাবড় তাবড় অভিনয়শিল্পীরা রয়েছেন। কিছুদিন আগে এ তালিকা প্রকাশ করে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট। ইরফান খান যশ-খ্যাতির পাশাপাশি অর্থনৈতিকভাবেও প্রতিষ্ঠা পেয়েছিলেন।

ব্যক্তিগত জীবনে প্রযোজক-লেখক সুতপা সিকদারের সঙ্গে ঘর বেঁধেছিলেন ইরফান খান। এ সংসারে তাদের দুটো পুত্রসন্তান রয়েছে। বড় ছেলের নাম বাবিল খান। এরই মধ্যে বলিউডে অভিষেক ঘটেছে তারা। স্ত্রী-পুত্রদের জন্য কত টাকার সম্পত্তি রেখে গেছেন ইরফান খান?

আরো পড়ুন:

আকাশ থেকে তুষারপাতের মতো ছাই পড়ছে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রীতি

উর্বশীর নাচের ভঙ্গি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা

ইন্ডিয়া টাইমসের তথ্য অনুসারে, মঞ্চনাটকের মাধ্যমে অভিনয় ক্যারিয়ার শুরু করেন ইরফান খান। পরবর্তীতে বিজ্ঞাপন ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। সিনেমায় অভিনয়ের জন্য পারিশ্রমিক যেমন নিতেন, তেমনি লভ্যাংশও পেতেন এই অভিনেতা। প্রতি সিনেমার জন্য ১৫ কোটি রুপি পারিশ্রমিক নিতেন ইরফান খান। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য ভালো অঙ্কের অর্থ নিতেন। পাশাপাশি প্রতি বিজ্ঞাপনের জন্য ৪-৫ কোটি রুপি পারিশ্রমিক নিতেন। এছাড়াও ১১০ কোটি রুপি ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছিলেন তিনি।

মুম্বাইয়ে ইরফান খানের বিলাসবহুল বাড়ি রয়েছে, জুহুতে তার একটি ফ্ল্যাটও আছে। অন্য তারকাদের মতো ইরফান খানের গাড়ির প্রতি আলাদা ভালোবাসা ছিল। তার সংগ্রহে ছিল টয়োটা সেলিকা, বিএমডব্লিউ, মাসরাতি কোয়াট্রোপোর্টে, ওডি ব্র্যান্ডের গাড়ি। এসব গাড়ির মোট মূল্য ৩-৫ কোটি রুপি। যাহোক, ইরফান খানের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৩২১ কোটি রুপি (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪৫৬ কোটি ৫০ লাখ টাকার বেশি)।

গত ৭ জানুয়ারি ছিল ইরফান খানের জন্মদিন। এ উপলক্ষে ভারতীয় সংবাদ সংস্থা আইএএনএস-কে সাক্ষাৎকার দেন ইরফান খানের স্ত্রী সুতপা সিকদার। এ আলাপচারিতায় তিনি জানান, ইরফান খান মহারাষ্ট্রে একটি আমের বাগান প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন। তা ছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে ফলের বাগান গড়ারও পরিকল্পনা ছিল তার। কৃষকদের আধুনিকভাবে গড়ে তোলার ইচ্ছা ছিল ইরফানের।    

১৯৮৮ সালে ‘সালাম বম্বে’ সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে অভিষেক ঘটে ইরফান খানের। মীরা নায়ার পরিচালিত এই সিনেমা একাডেমি পুরস্কারে মনোনীত হয়েছিল। ৩২ বছরের চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারে দেশ-বিদেশের ৯৪টি সিনেমায় অভিনয় করেন ইফরান খান।

ইরফান খানের বিচরণ শুধু বলিউডে সীমাবদ্ধ ছিল না, সমসাময়িক বিশ্ব চলচ্চিত্রের প্রিয় মুখও ছিলেন তিনি। ‘স্লামডক মিলিয়নিয়র’, ‘লাইফ অব পাই’, ‘সালাম বম্বে’, ‘মকবুল’, ‘লাঞ্চবক্স’, ‘পিকু’, ‘জুরাসিক ওয়ার্ল্ড’, ‘অ্যামেজিং স্পাইডার ম্যান’-এর মতো কালজয়ী সিনেমা উপহার দেন তিনি। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পুরস্কারের পাশাপাশি ২০১৩ সালে ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও লাভ করেন ইরফান।

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

এছাড়াও পড়ুন:

ইউক্রেনে জেলেনস্কির বিকল্প নেতা খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র!

ইউক্রেনে শান্তিচুক্তির জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পদত্যাগ করা লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের একজন নেতা প্রয়োজন, তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। তিনি শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন এবং এই যুদ্ধ থামাতে পারবেন।’ খবর- সিএনএন

গণমাধ্যমের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডার পর এ কথা বললেন তিনি। বাগবিতণ্ডার এ ঘটনাটি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। ওই ঘটনার পর ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে ঐতিহাসিক চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, সেটিও বাতিল হয়ে যায়। আর এর পরই ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ কোন পথে, তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।

এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। শুক্রবারের ওই ঘটনায় সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গড়া ওয়াশিংটন-কিয়েভ সম্পর্ক ভেঙে পড়েছে। এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে। 

যদিও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আবারও এক টেবিলে বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া-দুই পক্ষই আলোচনায় না বসলে যুদ্ধ থামবে না। হোয়াইট হাউসে শুক্রবার ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডার পর থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আর কথা হয়নি। যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে হবে। তবে তাদের প্রতি বৈরী মনোভাব রাখলে, মস্কোকে আলোচনায় যুক্ত করা সম্ভব হবে না। কোনো চুক্তি করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই মনোভাবই দেখিয়ে আসছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সবকিছু আবার শুরু হতে পারে। আশা করি, তিনি (জেলেনস্কি) এটা বুঝতে পারবেন যে আমরা আসলে আরও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর আগে, তাঁর দেশকে সাহায্যের চেষ্টা করছি।’
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ