মিয়ানমারের কাচিন রাজ্যে জান্তা বাহিনীর বিমান হামলায় অন্তত ১৫ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও ১০ জন। শনিবার (১১ জানুয়ারি) সকালে রাজ্যটির তানাইং শহরের একটি মার্কেটে এ হামলার ঘটনা ঘটে। খবর এএফপির

রোববার এ তথ্য জানায় রাজ্যটির সশস্ত্র জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠী কাচিন ইনডিপেনডেন্স আর্মি (কেআইএ)।

কেআইএর মুখপাত্র কর্নেল নাও বু আজ এএফপিকে বলেন, ‘শনিবার বেলা ১১টার দিকে বিমান হামলার এ ঘটনা ঘটে। হামলায় নিহত ব্যক্তিদের সবাই বেসামরিক নাগরিক। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে সোনার খনিতে কাজ করা শ্রমিক, স্থানীয় দোকানদারও রয়েছেন।’ 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, আহত ১০ জনের মধ্যে পরে ৩ জন মারা গেছেন।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত ছবি ও ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, যেখানে হামলা হয়েছে, সেখানে একটি বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। বোমার আঘাতে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে আশপাশের এলাকা।

যেখানে হামলা হয়েছে, সেই এলাকা এখন কেআইএর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সশস্ত্র এই গোষ্ঠীর সদস্য রয়েছেন প্রায় সাত হাজার। স্বায়ত্তশাসন ও কাচিনের খনিজ সম্পদের নিয়ন্ত্রণের দাবিতে কয়েক দশক ধরে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে লড়ছে তারা। রাজ্যটিতে রত্নপাথরের বড় বড় খনির পাশাপাশি খনিজ সম্পদের বিপুল মজুত রয়েছে, যার বেশির ভাগই চীনে রপ্তানি হয়।

২০২১ সালে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এক অভ্যুত্থানে ক্ষমতা দখলের পর অন্যান্য রাজ্যের মতো কাচিনেও জান্তা বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের তুমুল লড়াই শুরু হয়। অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত অং সান সু চির সরকার জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়তে পিপলস ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ) নামে একটি সশস্ত্র প্রতিরোধ বাহিনী গড়ে তুলেছে। জান্তার অভিযোগ, এই বাহিনীকে অস্ত্র সরবরাহ করে কেআইএ।

এর আগে গত ৯ জানুয়ারি পশ্চিম রাখাইন প্রদেশে জান্তাবাহিনীর বিমান হামলায় অন্তত ৪০ জন নিহত হন। আহত হয়েছিলেন আরও ৫২ জন আহত হয়েছেন।

গত সপ্তাহে জাতিসংঘ বলেছে, মিয়ানমারে চলমান সংঘাতে ৩৫ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন, যা গত বছরের তুলনায় ১৫ লাখ বেশি। চলতি বছর দেশটিতে এই সংকট আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছে সংস্থাটি। জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সমন্বয়বিষয়ক কার্যালয় (ওসিএইচএ) বলছে, ২০২৫ সালে দেশটির এক কোটি ৯৯ লাখ জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশেরও বেশি মানুষের সহায়তার প্রয়োজন হতে পারে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

কাশ্মীরে হামলাকারীদের খুঁজতে ভারতের নিরাপত্তা বাহিনীর জোরালো অভিযান

ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত বন্দুকধারীদের খুঁজতে আজ বুধবার বড় ধরনের অভিযান চালাচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনী। এ ঘটনাকে ২০০০ সালের পর ওই অঞ্চলে হওয়া সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে কাশ্মীরের পেহেলগামে এ হামলা হয়। বন্দুকধারীরা জঙ্গল থেকে বের হয়ে পর্যটকদের ওপর গুলি চালাতে থাকেন। হামলায় ঠিক কতজন নিহত হয়েছেন, তা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি। তবে নিরাপত্তা বাহিনীর সূত্র এএফপিকে বলেছে, নিহতের সংখ্যা অন্তত ২৬।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এ হামলাকে একটি ‘জঘন্য কাজ’ হিসেবে উল্লেখ করে এর নিন্দা জানিয়েছেন। হামলাকারীদের বিচারের মুখোমুখি করার অঙ্গীকার করেছেন তিনি।

মোদি সৌদি আরব সফরে ছিলেন। কাশ্মীরে হামলা হওয়ার পর তিনি সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফিরেছেন। সরকারি এক কর্মকর্তা সূত্রে জানা গেছে, দেশে ফেরামাত্রই মোদি ভারতের শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।

কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ বলেছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেসামরিক লোকজনকে লক্ষ্য করে যতগুলো হামলা হয়েছে, সেগুলোর চেয়ে এটা আরও বড়।

এখন পর্যন্ত কেউ হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে মুসলিম–অধ্যুষিত অঞ্চলটিতে বিদ্রোহীরা ১৯৮৯ সাল থেকে সক্রিয় আছে। তারা স্বাধীনতা চাইছে অথবা পাকিস্তানের সঙ্গে একীভূত হতে চাইছে। পাকিস্তানও কাশ্মীর অঞ্চলের একটি অংশ নিয়ন্ত্রণ করে এবং ভারতের মতোই এটির সম্পূর্ণ মালিকানা দাবি করে।

পেহেলগাম গ্রীষ্মকালে ঘোরার জন্য পর্যটকদের কাছে বেশ জনপ্রিয় একটি জায়গা। শ্রীনগর শহর থেকে সড়কপথে এর দূরত্ব প্রায় ৯০ কিলোমিটার।

পেহেলগামে হামলাস্থলের কাছে অবস্থানকারী এএফপির সাংবাদিকেরা বলেছেন, ওই এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
কাশ্মীরে নিযুক্ত থাকা ভারতীয় সেনা দল চিনার কোরের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বর্তমানে তল্লাশি অভিযান চলছে। হামলাকারীদের বিচারের মুখোমুখি করার লক্ষ্য নিয়ে সব তৎপরতা চলছে।’

পেহেলগাম গ্রীষ্মকালে ঘোরার জন্য পর্যটকদের কাছে বেশ জনপ্রিয় একটি জায়গা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কাশ্মীরে হামলাকারীদের খুঁজতে ভারতের নিরাপত্তা বাহিনীর জোরালো অভিযান