বহুজাতিক কোম্পানির দামি এবং দেশি সস্তা সিগারেটে সমান কর আরোপকে বৈষম্যমূলক আখ্যা দিয়েছে ন্যাশনাল সিগারেট ম্যানুফ্যাকচারার অ্যাসোসিয়েশন (এনসিএমএ)। রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটি অভিযোগ করেছে, বহুজাতিক কোম্পানির প্ররোচনায় সরকার সম্পূরক শুল্ক অস্বাভাবিক বাড়িয়েছে।

শতাধিক পণ্যে শুল্ক এবং ভ্যাট বাড়িয়ে গত বৃহস্পতিবার দুটি পৃথক অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। এতে বিদেশি কোম্পানির উৎপাদিত অতি উচ্চ, উচ্চ এবং মধ্যম স্তরের সিগারেটে সম্পূরক শুল্ক ২ শতাংশ, অর্থাৎ সাড়ে ৬৫ থেকে বাড়িয়ে ৬৭ শতাংশ করা হয়েছে। আর দেশি নিম্ন স্তরের সিগারেটে সম্পূরক শুল্ক ৭ শতাংশ, অর্থাৎ ৬০ থেকে বাড়িয়ে ৬৭ শতাংশ করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে এনসিএমএ সাধারণ সম্পাদক নাজমুন নাহার লাকি লিখিত বক্তব্যে বলেন, অভ্যন্তরীণ রাজস্বের সিংহভাগ আসে ভ্যাট থেকে। সিগারেট খাতে দেশীয় শিল্প উদ্যোক্তারা প্রণোদনা ও স্বার্থ সংরক্ষণ নীতি সহায়তা চাইলেও বারবার বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দেশে সিগারেটের বাজার প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এ খাত থেকে সরকার ৩৮ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব পেয়েছে। এই খাতের ৮৫ ভাগ ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো (বিএটি)। ১০ বছর আগে প্রতিষ্ঠানটির মুনাফা ছিল ২০০ কোটি। এখন তা ২ হাজার কোটি টাকা। কোম্পানির ৮৫ শতাংশ বিদেশি মালিকানাধীন শেয়ারের লভ্যাংশ হিসাবে বছরে ১ হাজার ৭০০ কোটি টাকা বৈদেশিক মুদ্রাই বিদেশ চলে যাচ্ছে। আরেক বহুজাতিক কোম্পানি জাপান টোব্যাকোও সুবিধা পেয়ে আসছে। বহুজাতিক কোম্পানিগুলো মুনাফা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে না। দেশীয় কোম্পানির লাভ দেশে থাকে। বিনিয়োগের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়। বহুজাতিক কোম্পানির একচেটিয়া আধিপত্যে সর্বস্বান্ত হয়ে ব্যবসা বন্ধের পথে দেশীয়দের।

সংবাদ সম্মেলনে তিন দফা দাবিতে বলা হয়, নিম্ন স্তরের সিগারেটে ৬০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বহাল রাখতে হবে। বহুজাতিক কোম্পানির জন্য ঘোষিত ৬৭ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন হেরিটেজ টোব্যাকোর প্রতিনিধি আরিফ আলম, এস এম টোব্যাকোর রফিকুল ইসলাম নয়ন প্রমুখ।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ইতালির কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে দুইজনকে গুলি করে হত্যা

ইতালির কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে ফরিদপুরের দুই যুবককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এমনকি হত্যার পর পরিবারের সদস্যদের হোয়াটসঅ্যাপে তাদের ছবি পাঠানো হয়। 

নিহত দুই যুবক হলেন- ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের কুমারখালী গ্রামের মিন্টু হাওলাদারের ছেলে হৃদয় হাওলাদার (২৪) ও মজিবর হাওলাদারের ছেলে রাসেল হাওলাদার (২৬)। 
 
হৃদয়ের বাবা মিন্টু হাওলাদার বলেন, দু’মাস আগে স্থানীয় আবু তারা মাতুব্বর, আলমাছ ও আনোয়ারের মাধ্যমে ১৬ লাখ টাকা দিয়ে ছেলেকে বিদেশ পাঠাই। ছেলেকে প্রথমে দুবাই সেখান থেকে সৌদি আরব তারপর লিবিয়া নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে হৃদয়কে হত্যা করা হয়েছে।

হৃদয়ের বড় ভাই মোখলেছুর রহমান বলেন, ৪/৫ দিন ধরে হৃদয়ের কোন খোঁজ পাচ্ছিলাম না। দালালরা শুক্রবার দুপুরে আমার ভাইয়ের লাশের ছবি পাঠিয়েছে। ১৬ লাখ টাকা দেওয়ার পরও বিদেশ থেকে ফোন করে আরও টাকা দাবি করছিল পাচারচক্র। টাকা না দেওয়ায় ওরা আমার ভাইকে খুন করেছে। 

একই গ্রামের ফয়সাল হোসেন বলেন, রাসেল নামের আরও একজনকেও লিবিয়াতে হত্যা করা হয়েছে। ওরা একই গ্রামের বাসিন্দা। ওই মানবপাচার চক্র এভাবে মানুষকে জিম্মি করে টাকা আদায় করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছে। টাকা না দিলেই তাদের সাথে খারাপ কিছু ঘটানো হয়। কখনও নির্যাতন করে আবার কখনও হত্যা করে।

ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানার ওসি মো. মোকসেদুর রহমান বলেন, ভাঙ্গার দুটি ছেলেকে লিবিয়ায় গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে শুনেছি। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় এখনও লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়নি। ওই পরিবারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করছি। তাদের সঙ্গে  আলোচনা করে দালালচক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ