মোবাইল ইন্টারনেট প্যাকেজ সংখ্যা ও মেয়াদের শর্ত শিথিল করল টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। গ্রাহকের চাহিদা অনুসারে অপারেটররা এখন এক ঘণ্টা থেকে আনলিমিটেড মেয়াদের ইন্টারনেট প্যাকেজ দিতে পারবে। রোববার ডেটা ও ডেটাসংশ্লিষ্ট প্যাকেজ নিয়ে নতুন নির্দেশিকায় এ সুযোগ দিয়েছে সংস্থাটি। 

বিটিআরসি ২০২৩ সালের অক্টোবরে সর্বশেষ নির্দেশিকায় মোবাইল ইন্টারনেট প্যাকেজ সংখ্যা কমিয়ে ৪০টি করেছিল। পাশাপাশি তিন দিন ও ১৫ দিনের প্যাকেজ বাতিল করে শুধু সাত দিন, ৩০ দিন ও আনলিমিটেড মেয়াদের প্যাকেজ করার নির্দেশনা দিয়েছিল; যা নিয়ে গ্রাহক ও অপারেটরদের মধ্যে অসন্তুষ্টি ছিল।

নতুন নির্দেশিকায় অপারেটররা তিন ধরনের প্যাকেজ দিতে পারবে। সেগুলো হলো নিয়মিত প্যাকেজ, নির্দিষ্ট ক্যাটেগরির গ্রাহকের জন্য বিশেষ প্যাকেজ এবং বাজার যাচাই করতে গবেষণা ও উন্নয়ন প্যাকেজ। নিয়মিত প্যাকেজের মেয়াদ সর্বনিম্ন ১৫ দিন, গ্রাহককেন্দ্রিক বিশেষ প্যাকেজের মেয়াদ সর্বনিম্ন তিন দিন এবং গবেষণা ও উন্নয়ন প্যাকেজ সর্বনিম্ন সাত দিন মেয়াদের হবে।

গ্রাহকের স্বার্থ বিবেচনায় অপারেটররা নিজস্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী প্যাকেজ নির্ধারণ করতে পারবে। এটা ঘণ্টাভিত্তিক এবং ১-৩ দিন মেয়াদি হবে। প্রতি ঘণ্টার জন্য সর্বোচ্চ ২০০ এমবি (মেগাবাইট), এক দিনের জন্য সর্বোচ্চ তিন জিবি (গিগাবাইট), দুদিনের জন্য সর্বোচ্চ পাঁচ জিবি এবং তিন দিনের জন্য সর্বোচ্চ আট জিবি প্যাকেজ দিতে পারবে অপারেটররা।

গ্রাহকদের সুবিধা অনুযায়ী প্যাকেজ গ্রহণের জন্য ‘ফ্লেক্সিবল প্ল্যান’ পাকেজ থাকবে। এ ছাড়া মেয়াদবিহীন প্যাকেজও থাকবে। সে ক্ষেত্রে সময়সীমা নির্ধারণ করে দিতে হবে। যে কোনো প্যাকেজের মেয়াদ শেষ হওয়ার এক দিন আগে গ্রাহককে এসএমএসের মাধ্যমে জানিয়ে দিতে হবে। মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই যদি গ্রাহক একই প্যাকেজ আবার কেনেন, তাহলে পরের প্যাকেজে অব্যবহৃত ডেটা ব্যবহার করা যাবে। অবশ্য রাত ১২টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত ঘণ্টা বা মিনিটভিত্তিক কোনো প্যাকেজ দেওয়া যাবে না। অপারেটরদের তিন সপ্তাহ আগে থেকেই পরীক্ষামূলক নতুন নির্দেশিকা অনুসারে প্যাকেজ বিক্রির অনুমতি দিয়েছিল বিটিআরসি।

রবি আজিয়াটার চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম বলেন, বিটিআরসি প্রকাশিত ডেটা নির্দেশিকাকে আমরা স্বাগত জানাই। ডেটানির্ভর ডিজিটাল সমাজের ক্ষেত্রে এটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ। এর মাধ্যমে ডিজিটাল সেবা ব্যবহারকারী গ্রাহকদের পুঞ্জীভূত ক্ষোভ অনেকটাই প্রশমিত হবে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

দেড় ঘণ্টায় শেষ সুলভ মূল্যের ডিম-দুধ, পাননি অনেকেই

নির্ধারিত এলাকায় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের গাড়ি পৌঁছায় সকাল সাড়ে ১০টার দিকে। এরপর শুরু হয় সুলভ মূল্যে দুধ, ডিম ও গরুর মাংস বিক্রি। দুপুর ১২টার কিছুক্ষণ পরেই দেখা গেল গাড়িতে ডিম ও দুধ নেই। কেবল ১৬ কেজি গরুর মাংস অবশিষ্ট রয়েছে। অর্থাৎ মাত্র দেড় ঘণ্টায় শেষ হয়ে গেছে সুলভ মূল্যে বিক্রির জন্য আনা দুধ ও ডিম।

আজ সোমবার চট্টগ্রাম নগরের পাহাড়তলী ওয়্যারলেস এলাকায় দেখা গেছে এমন চিত্র। এদিন নগরের ওয়্যারলেস ও টেক্সটাইল এলাকায় এ কার্যক্রম পরিচালনা করেছে জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর। এই কর্মসূচির আওতায় পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে গরুর মাংসের দাম প্রতি কেজি ৭০০ টাকা, দুধ প্রতি লিটার ৮০ টাকা ও ডিম প্রতি ডজন ১১০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।

প্রাণিসম্পদ দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, আজ প্রতিটি গাড়িতে ২০০ লিটার দুধ, ১ হাজার ৫০০ পিস ডিম ও ৭৫ কেজি করে মাংস ছিল। সে হিসেবে মাত্র দেড় ঘণ্টায় ২০০ লিটার দুধ ও ১২৫ ডজন ডিম বিক্রি শেষ হয়ে গেছে। তবে দুপুর ১২টার দিকে তেমন ভিড় দেখা যায়নি সেখানে। স্থানীয় লোকজন বলছেন, তাঁরা অনেকে আগে এসেও পণ্য পাননি।

এদিন অন্তত ১০ ক্রেতা দুধ-ডিম না পেয়ে ফেরত গেছেন। ডিম কিনতে আসা ক্রেতা আবুল হোসেন বলেন, ‘আমি দুপুর ১২টার দিকে এসে ডিম পাই নাই। বাসা থেকে আসতে আসতেই দেখি সব শেষ। তাঁরা নাকি দেড় হাজার ডিম আনছে। তাহলে আমরা পাই নাই কেন?’

গাড়ি থেকে এসব পণ্য কেনার জন্য প্রথমে টাকা দিয়ে স্লিপ নিতে হয়। কর্মকর্তারা জানান, একজন সর্বোচ্চ এক ডজন ডিম, এক বা দুই লিটার দুধ ও এক কেজি মাংস কিনতে পারেন। কেউ চাইলে শুধু ডিম, দুধ অথবা মাংস কিনতে পারবেন। তবে মাংসের চাহিদা তুলনামূলক কম।

দ্রুত শেষ হয়ে যাওয়া নিয়ে কর্মকর্তারা বলেন, ঢাকায় ফ্রিজার ট্রাক রয়েছে। ফলে তারা দীর্ঘ সময়ের জন্য পণ্য নিয়ে আসতে পারে। কিন্তু চট্টগ্রামে সে সুযোগ নেই। তাই পরিমাণ কম। আবার দ্রুত ক্রেতাদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়।

জানতে চাইলে দায়িত্বে থাকা বোয়ালখালী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা রুমন তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, যাঁরা এসেছেন, তাঁদের সবাইকে পণ্য দেওয়া হয়েছে। মাংসের চাহিদা কম থাকায় কিছু মাংস থেকে গেছে। ডিমের চাহিদা বেশি ছিল। দেড় থেকে দুই ঘণ্টায় শেষ হয়ে গেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ