‘বিগত সরকারের দোসর’ ও ‘সুবিধাভোগী’ ট্যাগ কারা দেয়
Published: 12th, January 2025 GMT
অমর একুশে বইমেলা ২০২৫–এ প্যাভিলিয়ন ও স্টল বরাদ্দ প্রসঙ্গে বাংলা একাডেমির কাছে ১০টি দাবি জানিয়েছেন সুবিচারপ্রত্যাশী প্রকাশকেরা। রোববার বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম ও মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্যসচিব সরকার আমিনের কাছে এসব দাবি উপস্থাপন করেন তাঁরা।
প্রকাশকদের একাংশের দাবির মধ্যে আছে প্যাভিলিয়ন/স্টল অবনমনকৃত প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলোর বরাদ্দ আগের বছরের মতো করে পুনর্বহাল, অভিযোগ যাচাইয়ের জন্য নিরপেক্ষ কমিটি গঠন, বইমেলা প্রাঙ্গণে অন্যায়ভাবে অভিযুক্ত প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলোর জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
তবে ‘সুবিচারপ্রত্যাশী প্রকাশকবৃন্দ’ প্ল্যাটফর্মের প্রকাশকেরা বলছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আনা বিগত সরকারের ‘দোসর’ ও ‘সুবিধাভোগী’ এই ট্যাগিং নিয়ে সরাসরি বাংলা একাডেমির কাছ থেকে তাঁরা উত্তর শুনতে চান। বাংলা একাডেমিকে ঘোষণা দিতে হবে, এই ট্যাগিং একাডেমির দেওয়া নয়।
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের কাছে দাবি নিয়ে যাওয়া সুবিচারপ্রত্যাশী প্রকাশকবৃন্দের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন আগামী প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ওসমান গনি, অন্যপ্রকাশের স্বত্বাধিকারী মাজহারুল ইসলাম, সময় প্রকাশনের ফরিদ আহমেদসহ ১৫ থেকে ১৬ জন প্রকাশক।
প্রকাশকদের একাংশের ১০ দাবির মধ্যে আরও আছে—যদি কোনো প্রকাশকের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকে, তবে তাঁকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হবে। তারপর কোনো যৌক্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। অনিবন্ধিত সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিদের বইমেলা পরিচালনা কমিটি থেকে বাদ দিতে হবে।
সুবিচারপ্রত্যাশী প্রকাশকবৃন্দের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়েছে, ‘পত্রিকার সংবাদ থেকে আমরা জানতে পেরেছি, গুটি কয়েক প্রকাশক বেশ কিছু প্রকাশককে বিগত সরকারের “দোসর এবং সুবিধাভোগী” হিসেবে অভিযোগ করেছে। আমরা মনে করি, ব্যবসায়িক ও ব্যক্তিগত হিংসার বশবর্তী হয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এ অভিযোগ। আমাদের মনে হয়েছে, কাউকে কাউকে বিশেষভাবে হেয় করতেই এই অভিযোগ। অথচ বাংলা একাডেমি এসব অভিযোগের সত্যতা যাচাই করার জন্য কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল বলে আমাদের জানা নেই। এমনকি অভিযুক্ত প্রকাশকদের এ বিষয়ে জবাবদিহি করার কোনোরকম সুযোগ দেওয়া হয়নি। উপরন্তু অভিযোগকারী প্রকাশকদের নিয়েই সাবকমিটি গঠন করা হয়েছে, যে সাবকমিটি অভিযুক্ত প্রকাশকদের বরাদ্দ বাতিল এবং অবনমন করেছে। এখানে দেখা যাচ্ছে, বাদী নিজেই বিচারক হয়ে বিচারের রায় প্রদান করছে, যা নজিরবিহীন।’
এ বিষয়ে অন্যপ্রকাশের মাজহারুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘গুটিকয় প্রকাশকের অভিযোগের ভিত্তিতে তথ্যপ্রমাণ ছাড়া যাচাই–বাছাই না করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এভাবে কাউকে ট্যাগ করে দেওয়া যায় না। বিগত সরকারের দোসর, সুবিধাভোগী এসব ট্যাগ বাংলা একাডেমির দেওয়া না, এটা তাদের বলতে হবে। অন্য সব দাবির সঙ্গে আমরা বাংলা একাডেমির কাছে সে দাবিও জানিয়েছি।’
বাংলাদেশের সৃজনশীল প্রকাশকদের একাংশের দেওয়া এসব দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম প্রথম আলোকে বলেন, ট্যাগিং বাংলা একাডেমি করেনি ঘোষণা দেওয়ার দাবিসহ সব দাবি মেলা পরিচালনা কমিটির কাছে দেওয়া হয়েছে। কমিটি আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ইউক্রেনে জেলেনস্কির বিকল্প নেতা খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র!
ইউক্রেনে শান্তিচুক্তির জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পদত্যাগ করা লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের একজন নেতা প্রয়োজন, তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। তিনি শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন এবং এই যুদ্ধ থামাতে পারবেন।’ খবর- সিএনএন
গণমাধ্যমের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডার পর এ কথা বললেন তিনি। বাগবিতণ্ডার এ ঘটনাটি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। ওই ঘটনার পর ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে ঐতিহাসিক চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, সেটিও বাতিল হয়ে যায়। আর এর পরই ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ কোন পথে, তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।
এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। শুক্রবারের ওই ঘটনায় সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গড়া ওয়াশিংটন-কিয়েভ সম্পর্ক ভেঙে পড়েছে। এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
যদিও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আবারও এক টেবিলে বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া-দুই পক্ষই আলোচনায় না বসলে যুদ্ধ থামবে না। হোয়াইট হাউসে শুক্রবার ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডার পর থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আর কথা হয়নি। যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে হবে। তবে তাদের প্রতি বৈরী মনোভাব রাখলে, মস্কোকে আলোচনায় যুক্ত করা সম্ভব হবে না। কোনো চুক্তি করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই মনোভাবই দেখিয়ে আসছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সবকিছু আবার শুরু হতে পারে। আশা করি, তিনি (জেলেনস্কি) এটা বুঝতে পারবেন যে আমরা আসলে আরও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর আগে, তাঁর দেশকে সাহায্যের চেষ্টা করছি।’