লস অ্যাঞ্জেলেসে দাবানল: বাড়ছে বাতাস, নতুন শঙ্কা
Published: 12th, January 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে ভয়াবহ দাবানলে পুড়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। এই দাবানল ছড়িয়ে পড়ার পেছনে বড় কারণ সান্তা আনা নামের ঝোড়ো বাতাস। সম্প্রতি বাতাসের গতি কিছুটা কমায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আশার আলো দেখা গিয়েছিল। তবে গতি আবার বাড়তে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এতে দাবানল আরও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস পূর্বাভাস দিয়েছে, লস অ্যাঞ্জেলেস ও ভেঞ্চুরা কাউন্টিতে স্থানীয় সময় শনিবার রাত থেকে রোববার সকাল পর্যন্ত বাতাসের গতি বাড়তে পারে। একই আশঙ্কা রয়েছে সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্তও। ঘণ্টায় ৩০ মাইল গতিতে বয়ে যাওয়া বাতাস এ সময় ৭০ মাইলে পৌঁছাতে পারে।
লস অ্যাঞ্জেলেসে দাবানল শুরু হয় গত মঙ্গলবার। ছয় দিন পেরিয়ে গেলেও তা নিয়ন্ত্রণে আসেনি। দাবানলের শুরুর দিকে বাতাসের গতি ১৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত উঠছিল। শুক্রবার তা অনেকটা কমে আসে। ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিসের আবহাওয়াবিদ রোজ শোনফেল্ড বলেন, বুধবার পর্যন্ত আবহাওয়া পরিস্থিতি খারাপ থাকবে। বৃহস্পতিবার থেকে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতে পারে।
বর্তমানে লস অ্যাঞ্জেলেসে চারটি দাবানল সক্রিয় রয়েছে। এর মধ্যে প্যালিসেইডস দাবানল আরও এক হাজার একর এলাকায় ছড়িয়েছে। আগেই এই দাবানলে পুড়েছে ২২ হাজার একর এলাকা। ক্যালিফোর্নিয়ার ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত প্যালিসেইডস দাবানল মাত্র ১১ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে আনা গেছে।
নতুন করে এই আগুন বৃদ্ধি পাওয়ার আগে ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা প্যালিসেইডস দাবানল ও লস অ্যাঞ্জেলেসের পূর্বাঞ্চলে এটন দাবানল নিয়ন্ত্রণে অগ্রগতির কথা জানিয়েছিলেন। এ দুই দাবানলকে সবচেয়ে ভয়াবহ বলা হচ্ছে। দুই দাবানলে একত্রে ১৪৫ বর্গকিলোমিটার এলাকা পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ভৌগোলিক হিসাবে এই আয়তন নিউইয়র্কের ম্যানহাটান এলাকার চেয়ে আড়াই গুণ বেশি।
লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টির স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাতে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের খবর অনুযায়ী, দাবানলে শনিবার রাত পর্যন্ত অন্তত ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া অন্তত ১৩ জন নিখোঁজ রয়েছেন। তবে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘরে ঘরে গিয়ে তল্লাশি অভিযান শুরু করলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুনপুড়ে গেছে সৈকত শহর মালিবুর এক–তৃতীয়াংশ, লস অ্যাঞ্জেলেসে দাবানলে প্রাণহানি বেড়ে ১৬৯ ঘণ্টা আগেগত ছয় দিনের বিপর্যয়ে লস অ্যাঞ্জেলেস ১২ হাজার অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে। স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা রবার্ট লুনার দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, সেখানে আরও ৫৭ হাজার অবকাঠামো ঝুঁকির মুখে রয়েছে। প্রাণ বাঁচাতে এলাকা ছেড়ে যেতে বলা হয়েছে ১ লাখ ৫৩ হাজার মানুষকে। এর বাইরে আরও ১ লাখ ৬৬ হাজার বাসিন্দাকে বলা হয়েছে, প্রয়োজন পড়লে তাঁদের এলাকা ত্যাগ করা লাগতে পারে।
আরও পড়ুনলস অ্যাঞ্জেলেসে দাবানলের বিপজ্জনক ধোঁয়া থেকে বাঁচতে ঘরে থাকার পরামর্শ১২ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
টেকনাফে মুরগির টাকা নিয়ে বিরোধ, হামলায় ক্রেতা নিহত
কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার মুরগি বিক্রির বকেয়া টাকা আদায়কে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় এক ক্রেতা নিহত হয়েছেন।
সোমবার (৩ মার্চ) দুপুরে উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের মনিরঘোনা মসজিদের সামনে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন।
নিহত দিলদার মিয়া (৪৮) টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের মনিরঘোনা এলাকার আব্দুস সোবহানের ছেলে। তিনি মনিরঘোনা স্টেশনে মুরগির ব্যবসা করতেন।
আরো পড়ুন:
খাগড়াছড়িতে আঞ্চলিক দলের মধ্যে গোলাগুলি, গৃহবধূ নিহত
গাইবান্ধায় ট্রেনে কাটা পড়ে নিহত নারীর পরিচয় মিলেছে
নিহতের স্বজন ও স্থানীয়দের বরাতে ওসি গিয়াস উদ্দিন জানান, কিছুদিন আগে একই এলাকার আবুল হাশেমের ছেলে আব্দুল হাকিম দিলদার মিয়ার দোকান থেকে বাকিতে মুরগি কেনেন। দিলদার মিয়া পাওনা টাকা আদায়ের জন্য কয়েকবার তাগাদা দিলেও আব্দুল হাকিম টাকা পরিশোধ করেননি।
সোমবার দুপুরে মনিরঘোনা মসজিদের সামনে আবারো পাওনা চাওয়াকে কেন্দ্র করে দিলদার মিয়া ও আব্দুল হাকিমের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে আব্দুল হাকিম ও তার সঙ্গে থাকা লোকজন মিলে দিলদার মিয়াকে মারধর শুরু করেন। এতে তিনি গুরুতর আহত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উখিয়ার পালংখালী স্টেশনের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওসি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন আরো জানান, ঘটনার পর থেকে আব্দুল হাকিমসহ অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে। নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
ঢাকা/তারেকুর/বকুল