‘তনুশ্রী হত্যা’য় জড়িত ব্যক্তিদের ফাঁসি দাবি
Published: 12th, January 2025 GMT
মানিকগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী তনুশ্রী রায়কে হত্যার অভিযোগ করেছেন তাঁর সহপাঠীরা। এতে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা। গতকাল রোববার সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনে এমন বক্তব্য দেওয়া হয়। এ সময় তনুশ্রী হত্যাকারীদের ফাঁসির এক দফা দাবি তুলে ধরে স্লোগান দেন তারা।
তনুশ্রী রায় (২১) মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ চৈল্লা গ্রামের
দীনবন্ধু রায়ের ছোট মেয়ে। গত ৩ অক্টোবর পারিবারিকভাবে তাঁর বিয়ে হয় পৌর এলাকার বনগ্রাম এলাকার অটল বিশ্বাসের ছেলে অতনুর সঙ্গে। বনগ্রাম এলাকার এবি ভিলা নামের ভবনে শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন তনুশ্রী। সেখান থেকে গত বৃহস্পতিবার রাতে তাঁকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। দ্রুত সময়ের মধ্যে মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে গেলে তনুশ্রীকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। এ ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলায় স্বামী অতনু বিশ্বাস (৩০), শ্বশুর অটল বিশ্বাস ও শাশুড়ি আরতি বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মামলায় বাদী দীনবন্ধু রায় অভিযোগ করেন, বিয়ের পর থেকে নানা বিষয়ে তাঁর মেয়ের সঙ্গে শ্বশুরবাড়ির লোকজন দুর্ব্যবহার করে আসছিল। গালাগালসহ প্রতিনিয়ত মানসিক নির্যাতন চালাত তারা। এতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিলেন তনুশ্রী।
স্বজনরা জানিয়েছেন, তনুশ্রী এইচএসসি পরীক্ষায় পাসের পর নার্সিংয়ে ভর্তি হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সামর্থ্য না থাকায় পরিবারের কেউ রাজি হয়নি। এক বছর পর মানিকগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজে বাংলা বিভাগে ভর্তি হন। পড়াশোনা শেষে শিক্ষক হতে চেয়েছিলেন তিনি।
রোববার মানববন্ধন শেষে মানিকগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা তনুশ্রী হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সাত দফা দাবি লিখে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেন। এর পর বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে তারা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে যান। বিক্ষোভ শেষে পুলিশ সুপারকেও স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
মানিকগঞ্জ সদর থানার ওসি এস এম আমান উল্লাহ বলেন, তনুশ্রীর মৃত্যুর ঘটনায় তাঁর বাবা আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে থানায় মামলা করেছেন। ইতোমধ্যে পুলিশ ওই তরুণীর স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়িকে গ্রেপ্তারের পর কারাগারে পাঠিয়েছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
মাগুরা মেডিকেল কলেজ বন্ধের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ
মাগুরা মেডিকেল কলেজ বন্ধের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ ও দ্রুত স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থী ও স্থানীয় জনগণ। আজ রোববার দুপুর ১২টার দিকে শহরের ভায়না মোড়ে ঢাকা যশোর মহাসড়ক অবরোধ করে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় প্রায় আধা ঘণ্টা মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া বক্তারা বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, মাগুরাসহ নতুন ছয়টি মেডিকেল কলেজ বন্ধের ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। মাগুরা মেডিকেল কলেজ অস্থায়ী ক্যাম্পাস প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ। একটি মেডিকেল কলেজে যেসব স্থাপনা ও সুযোগ-সুবিধা থাকার কথা, তার প্রায় শতভাগ এখানে রয়েছে। তাই মাগুরার জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা বিবেচনা করে অবিলম্বে মাগুরা মেডিকেল কলেজের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ করতে হবে।’
মাগুরা মেডিকেল কলেজের পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী প্রিয়া ধর বলেন, ‘আমাদের মাগুরা মেডিকেল কলেজে বড় মেডিকেল কলেজগুলোর মতো প্রায় সব সুবিধা থাকার পরও শুধু স্থায়ী ক্যাম্পাস না থাকার কারণে এটি বন্ধের অনেক অপচেষ্টা চলছে। যে কারণে আমাদের প্রতিষ্ঠান রক্ষা করতে এবং মাগুরার মানুষের জনস্বার্থে এখানে আমরা আজ অবরোধ করেছি, যাতে এই মেডিকেল কলেজের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বন্ধ হয়।’
মানববন্ধনের কারণে প্রায় আধা ঘণ্টা ঢাকা-যশোর ও ঢাকা-ঝিনাইদহ মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। মানববন্ধনে অংশ নেওয়া জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আমিনুর রহমান খান বলেন, ‘মেডিকেল কলেজ মাগুরার মানুষের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা প্রতিষ্ঠান। এটা কোনোভাবেই বন্ধ হতে দেওয়া যাবে না। প্রয়োজনে সামনে আরও কঠোর আন্দোলন করা হবে।’
জানতে চাইলে মাগুরা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ কামরুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের মেডিকেল কলেজ বন্ধ করা হবে, এমন আনুষ্ঠানিক চিঠি বা নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। নতুন মেডিকেল কলেজগুলো নিয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের নানা বক্তব্যে হয়তো শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। শুনেছি, শিক্ষার্থীরা সেই উদ্বেগের জায়গা থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে মিলে মানববন্ধনের আয়োজন করেছে।’