বাণিজ্য বাড়াতে সহজে ভিসা ও সরাসরি বিমান যোগাযোগ চান পাকিস্তানের ব্যবসায়ীরা
Published: 12th, January 2025 GMT
পাকিস্তানের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে তাঁদের ব্যবসা–বাণিজ্য বাড়াতে চান। তবে ভিসা জটিলতা ও সরাসরি ফ্লাইট না থাকায় সেটি কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে বিদ্যমান এসব জটিলতা নিরসনের জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির শীর্ষ ব্যবসায়ীরা।
আজ রোববার বিকেলে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সঙ্গে বৈঠকে এসব বিষয় তুলে ধরেন বাংলাদেশ সফররত পাকিস্তানের একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল। ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমদ মারুফও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
পাকিস্তানের ওই ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ফেডারেশন অব পাকিস্তান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফপিসিসিআই) সভাপতি আতিফ ইকরাম শেখ। বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের আমন্ত্রণে তাঁরা ঢাকা সফরে এসেছেন।
বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য, ভিসা সহজীকরণ, সরাসরি বিমান চলাচল ও ভবিষ্যৎ বিনিয়োগ সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়। এ সময় বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন জানান, দুই দেশের জনসংখ্যার আকার বিবেচনায় বাণিজ্যের পরিমাণ খুব কম। উভয় দেশেরই সুযোগ রয়েছে বাণিজ্য বাড়ানোর। পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক টেকসই করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান উপদেষ্টা।
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে পাকিস্তানের ব্যবসায়ীদের আরও বেশি আলোচনা হওয়া দরকার। নিজেদের মধ্যে সহযোগিতা বাড়লে দুই দেশই লাভবান হতে পারবে।’
বৈঠকে এফপিসিসিআই সভাপতি আতিফ ইকরাম শেখ জানান, ভিসা জটিলতা ও সরাসরি ফ্লাইট না থাকায় পাকিস্তানের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় তাদের ব্যবসা–বাণিজ্য বাড়াতে পারছে না। এ জন্য বিদ্যমান জটিলতাগুলো নিরসন করা দরকার।
পাকিস্তানের প্রতিনিধিদলটি বাংলাদেশে কৃষিজাত দ্রব্য উৎপাদন ও বিপণন, শিক্ষা, পর্যটন ও সিরামিক খাতে বিনিয়োগের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন। তাঁরা জানান, পাকিস্তান সরকার এক্সপোর্ট ফ্যাসিলিটেশন স্কিম চালু করেছে। এ স্কিমের আওতায় বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা পাকিস্তানে বিনিয়োগ করতে পারেন। এ সময় তাঁরা বাংলাদেশে ট্রেড এক্সপো আয়োজনের বিষয়েও আগ্রহ প্রকাশ করেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বগুড়ায় প্রথম ধাপে বিএনপি-জামায়াতের ২৪১টি ‘রাজনৈতিক’ মামলা প্রত্যাহার
বগুড়ায় বিগত সরকারের আমলে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে করা ‘রাজনৈতিক’ মামলা প্রত্যাহার শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রথম ধাপে আদালতে বিচারাধীন ২৪১টি মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ ছাড়া দ্বিতীয় ধাপে ৩২৮টি মামলা প্রত্যাহারের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের আইন শাখা-১ প্রথম ধাপে ২৪১টি মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত দিয়ে ৭ এপ্রিল গেজেট প্রকাশ করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার গেজেটের চিঠি বগুড়ায় আসে বলে জানিয়েছেন বগুড়া জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আবদুল বাছেদ।
পিপি আবদুল বাছেদ প্রথম আলোকে বলেন, ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে করা হয়রানিমূলক ৭৬৬টি মামলা আদালতে এখনো বিচারাধীন। মামলাগুলো প্রত্যাহারের সুপারিশ করে আইন ও বিচার মন্ত্রণালয়ের সলিসিটর অনুবিভাগের উপসলিসিটরের কাছে পাঠানো হয়। সেখান থেকে যাচাই-বাছাই শেষে মামলা প্রত্যাহারের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এরপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের আইন শাখা-১ প্রথম ধাপে ২৪১টি মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়ে ৭ এপ্রিল গেজেট প্রকাশ করে। দ্বিতীয় ধাপে ২০ এপ্রিল সচিবালয়ে আইন উপদেষ্টার সভাপতিত্বে রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে গঠিত কমিটির ১১তম সভায় বগুড়ার আরও ৩২৮টি মামলা প্রত্যাহারের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে।
আদালত সূত্র জানায়, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগের সরকার গঠনের পর থেকে গত বছরের আগস্ট পর্যন্ত সরকারবিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বগুড়ায় বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে এক হাজারের বেশি মামলা হয়। এর মধ্যে বেশ কিছু মামলার রায়ে অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় খালাস পেয়েছেন নেতা-কর্মীরা। আদালতে বিচারাধীন ছিল ৭৬৬টি মামলা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে একটি চিঠি পাঠানো হয়। এতে রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহারে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে সভাপতি ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে সদস্যসচিব করে পুলিশ সুপার ও সরকারি কৌঁসুলিকে (পিপি) সদস্য করে একটি কমিটি করা হয়। কমিটি ওই ৭৬৬টি মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করেছে।
তবে এক–এগারো সরকারের সময় ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি থেকে ২০০৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন পর্যন্ত দায়ের হওয়া সব মামলা রাজনৈতিক হয়রানিমূলক বিবেচনায় প্রত্যাহারের দাবি করেছেন বগুড়ার বিএনপির নেতা-কর্মীরা। তবে এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়নি।