মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলীয় কাচিন রাজ্যে জান্তা বাহিনীর বিমান হামলায় অন্তত ১৫ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১০ জন। গতকাল শনিবার সকালে রাজ্যটির তানাইং শহরের একটি মার্কেটে এ হামলার ঘটনা ঘটে। আজ রোববার এ তথ্য জানায় রাজ্যটির সশস্ত্র জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠী কাচিন ইনডিপেনডেন্স আর্মি (কেআইএ)।

কেআইএর মুখপাত্র কর্নেল নাও বু আজ এএফপিকে বলেন, ‘শনিবার বেলা ১১টার দিকে বিমান হামলার এ ঘটনা ঘটে। হামলায় নিহত ব্যক্তিদের সবাই বেসামরিক নাগরিক। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে সোনার খনিতে কাজ করা শ্রমিক যেমন আছেন, তেমনি স্থানীয় দোকানদারও রয়েছেন।’ নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, আহত ১০ জনের মধ্যে পরে ৩ জন মারা গেছেন।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত ছবি ও ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, যেখানে হামলা হয়েছে, সেখানে একটি বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। বোমার আঘাতে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে আশপাশের এলাকা।

যেখানে হামলা হয়েছে, সেই এলাকা এখন কেআইএর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সশস্ত্র এই গোষ্ঠীর সদস্য রয়েছেন প্রায় সাত হাজার। স্বায়ত্তশাসন ও কাচিনের খনিজ সম্পদের নিয়ন্ত্রণের দাবিতে কয়েক দশক ধরে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে লড়ছে তারা। রাজ্যটিতে রত্নপাথরের বড় বড় খনির পাশাপাশি খনিজ সম্পদের বিপুল মজুত রয়েছে, যার বেশির ভাগই চীনে রপ্তানি হয়।

খ্রিষ্টান–অধ্যুষিত কাচিন রাজ্যের বড় অংশই এখন কেআইএর নিয়ন্ত্রণে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় রত্নপাথরের খনি রয়েছে সেখানে।

২০২১ সালে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এক অভ্যুত্থানে ক্ষমতা দখলের পর অন্যান্য রাজ্যের মতো কাচিনেও জান্তা বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের তুমুল লড়াই শুরু হয়। অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত অং সান সু চির সরকার জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়তে পিপলস ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ) নামে একটি সশস্ত্র প্রতিরোধ বাহিনী গড়ে তুলেছে। জান্তার অভিযোগ, এই বাহিনীকে অস্ত্র সরবরাহ করে কেআইএ।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহালের দাবি

হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার এবং চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানকে স্মারকলিপি দিয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা–কর্মচারী। 

বৃহস্পতিবার ২৮ হাজার ৩০৭ কর্মীর সই করা এক হাজার ৪২৮ পৃষ্ঠার এই স্মারকলিপি উপদেষ্টার দপ্তরে জমা দেওয়া হয়। 

এতে বলা হয়, সংস্কার দাবির কারণে মাঠপর্যায়ে কোনো কর্মসূচি না থাকা সত্ত্বেও গত ১৬ অক্টোবর পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) ১০ জন কর্মকর্তাকে বিনা নোটিশে চাকরিচ্যুত করে। একই দিন তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। পরদিন সকাল থেকে শুরু হয় কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার এবং আরও ১৪ জনকে চাকরিচ্যুত করা হয়। এই ঘটনায় সমিতির কর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশার জন্ম দেয়, যার ফলে কিছু এলাকায় সাময়িক বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটে।

স্মারকলিপি আরও বলা হয়, আরইবি এখনও মামলা, চাকরিচ্যুতি, বদলি, সাসপেন্ড বিভিন্ন হয়রানিমূলক পদক্ষেপ অব্যাহত রেখেছে। শুধু স্মারকলিপিতে সই দেওয়ার কারণেও সম্প্রতি মাদারীপুর ও রাজশাহীর কর্মকর্তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। প্রায় অর্ধশতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সংযুক্ত করে তদন্তের নামে হয়রানি ও শাস্তি দেওয়ার চেষ্টা চলছে। চাকরি হারিয়ে, মামলা ও জেল-জুলুমের শিকার হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো খুবই মানবেতর জীবনযাপন করছে। এমনকি ক্ষতিগ্রস্তদের ছেলেমেয়ের পড়াশোনাও চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। এর আগে গত ২৫ জানুয়ারি সমিতির ৩০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর সই করা স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। 

স্মারকলিপিতে মামলা প্রত্যাহার ও চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহালের দাবি জানানো হয়েছে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ