তত্ত্বাবধায়ককে জিম্মি করে লাঞ্ছিত করার চেষ্টার অভিযোগ, অ্যাম্বুলেন্সচালক আটক
Published: 12th, January 2025 GMT
ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ককে জিম্মি করে লাঞ্ছিত করার চেষ্টার অভিযোগে অ্যাম্বুলেন্সচালক শাহাদাৎ হোসেনকে আটক করেছে পুলিশ। আজ রোববার দুপুরে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, অ্যাম্বুলেন্সচালক শাহাদাৎ হোসেনকে সম্প্রতি চাকরিচ্যুত করা হয়। আজ রোববার সকালে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক শামীম আহম্মেদ এক চিঠিতে অ্যাম্বুলেন্সচালককে গত দুই মাসের রোগী পরিবহনের টাকা হাসপাতালের হিসাব বিভাগে জমা দিতে নির্দেশ প্রদান করেন। একই চিঠিতে অবৈধভাবে শাহাদাতের দখলে রাখা হাসপাতালের কোয়ার্টার ছেড়ে দিতে বলা হয়।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে অ্যাম্বুলেন্সচালক হাতে লাঠি নিয়ে তত্ত্বাবধায়ককে হাসপাতালের সভাকক্ষে নিয়ে তালাবদ্ধ করে লাঞ্ছিত করার চেষ্টা করেন। পরে হাসপাতালের কর্মচারী ও রোগীর স্বজনেরা অবরুদ্ধ তত্ত্বাবধায়ককে উদ্ধার করে অ্যাম্বুলেন্সচালক শাহাদাৎ হোসেনকে ধোলাই দেন। এ সময় হাসপাতালে রোগীদের মধ্যে ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ খবর পেয়ে এসে শাহাদাৎ হোসেনকে আটক করে। এদিকে অ্যাম্বুলেন্স–সেবা বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন রোগীরা।
ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ নার্স মনিন্দ্র নাথ বলেন, ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে মানুষের জরুরি সেবায় জন্য দুটি সরকারি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে। মহসিন নামের একজন চালক অনিয়মের দায়ে বদলি হয়ে অন্যত্র চলে যান। এর পর থেকে অ্যাম্বুলেন্সচালকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন শাহাদাৎ। গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর রাত ৮টার দিকে হাসপাতালের গ্যারেজে থাকা অ্যাম্বুলেন্সের টুল বক্স থেকে ৩৫ পিস ইয়াবা উদ্ধার করে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
এ বিষয়ে অ্যাম্বুলেন্সচালক শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ‘আমাকে অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। আমাকে দীর্ঘ দুই বছর পর্যন্ত মানসিক নির্যাতন করে আসছেন তত্ত্বাবধায়ক।’
ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক শামীম আহম্মেদ বলেন, ‘মাদকাসক্ত অ্যাম্বুলেন্সচালক শাহাদাৎ হোসেনকে সম্প্রতি চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। গত দুই মাসের রোগী পরিবহনের টাকা হাসপাতালের হিসাব বিভাগে জমা দিতে বলায় সে ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে লাঞ্ছিত করার চেষ্টা করে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ইতালির কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে দুইজনকে গুলি করে হত্যা
ইতালির কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে ফরিদপুরের দুই যুবককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এমনকি হত্যার পর পরিবারের সদস্যদের হোয়াটসঅ্যাপে তাদের ছবি পাঠানো হয়।
নিহত দুই যুবক হলেন- ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের কুমারখালী গ্রামের মিন্টু হাওলাদারের ছেলে হৃদয় হাওলাদার (২৪) ও মজিবর হাওলাদারের ছেলে রাসেল হাওলাদার (২৬)।
হৃদয়ের বাবা মিন্টু হাওলাদার বলেন, দু’মাস আগে স্থানীয় আবু তারা মাতুব্বর, আলমাছ ও আনোয়ারের মাধ্যমে ১৬ লাখ টাকা দিয়ে ছেলেকে বিদেশ পাঠাই। ছেলেকে প্রথমে দুবাই সেখান থেকে সৌদি আরব তারপর লিবিয়া নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে হৃদয়কে হত্যা করা হয়েছে।
হৃদয়ের বড় ভাই মোখলেছুর রহমান বলেন, ৪/৫ দিন ধরে হৃদয়ের কোন খোঁজ পাচ্ছিলাম না। দালালরা শুক্রবার দুপুরে আমার ভাইয়ের লাশের ছবি পাঠিয়েছে। ১৬ লাখ টাকা দেওয়ার পরও বিদেশ থেকে ফোন করে আরও টাকা দাবি করছিল পাচারচক্র। টাকা না দেওয়ায় ওরা আমার ভাইকে খুন করেছে।
একই গ্রামের ফয়সাল হোসেন বলেন, রাসেল নামের আরও একজনকেও লিবিয়াতে হত্যা করা হয়েছে। ওরা একই গ্রামের বাসিন্দা। ওই মানবপাচার চক্র এভাবে মানুষকে জিম্মি করে টাকা আদায় করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছে। টাকা না দিলেই তাদের সাথে খারাপ কিছু ঘটানো হয়। কখনও নির্যাতন করে আবার কখনও হত্যা করে।
ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানার ওসি মো. মোকসেদুর রহমান বলেন, ভাঙ্গার দুটি ছেলেকে লিবিয়ায় গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে শুনেছি। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় এখনও লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়নি। ওই পরিবারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করছি। তাদের সঙ্গে আলোচনা করে দালালচক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।