ছাত্রলীগ কর্মীকে প্রক্টরের দপ্তর থেকে বের করে মারধরের পর পুলিশে সোপর্দ
Published: 12th, January 2025 GMT
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের এক কর্মীকে প্রক্টরের দপ্তর থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে মারধরের পর পুলিশে সোপর্দ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। রোববার বিকেল পাঁচটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে তাঁকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।
মারধরের শিকার অর্ণব সিংহ রায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের স্নাতকোত্তর ২০২২-২৩ বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি বলে জানিয়েছে পুলিশ। সন্ধ্যায় তাঁকে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করেছে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানার পুলিশ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, আন্দোলন চলাকালে অর্ণব সিংহ রায় সরাসরি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় অংশ নিয়েছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, অর্ণব সিংহ রায় রোববার সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা দিতে আসেন। পরীক্ষা শেষে বের হতেই অপেক্ষারত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা তাঁকে আটক করেন। পরে তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের উপস্থিতিতে প্রক্টর কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। একপর্যায়ে প্রক্টর কার্যালয় থেকে ছাত্রলীগের ওই কর্মীকে টেনেহিঁচড়ে বের করেন ছাত্র আন্দোলনের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী। এরপর তাঁকে মারধর করতে করতে নিয়ে যাওয়া হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকে। সেখানে অবস্থানরত পুলিশ সদস্যদের কাছে সোপর্দ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিশ্ববিদ্যালয় সমন্বয়কেরা।
ছাত্র আন্দোলন চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় শিক্ষার্থীদের ওপর সশস্ত্র সন্ত্রাসী হামলা, ককটেল বিস্ফোরণসহ বিভিন্ন অভিযোগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানায় বাদী হয়ে একটি মামলা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী মো.
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানার কোটবাড়ী পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক মো. বোরহান উদ্দিন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়কদের মধ্য থেকে একজন বিকেলে ফোন করে জানান, এক আসামিকে আটকে রাখা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে যাচাই করে দেখা যায় তিনি ওই মামলার ১২ নম্বর আসামি। পরে তাঁকে ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুমিল্লা মহানগরের আহ্বায়ক মো. আবু রায়হান প্রথম আলোকে বলেন, অর্ণব সিংহ রায় ছাত্রলীগের নেতা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছেন তিনি। মেয়েদের ওপরও হামলা চালিয়েছিলেন অর্ণব। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেশবিরোধী বিভিন্ন গুজব ছড়াচ্ছেন। এ জন্য শিক্ষার্থীরা তাঁকে আটক করে পুলিশে দিয়েছেন। অর্ণব মামলার আসামি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মো. আবদুল হাকিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের অফিসে ডেকে তার (অর্ণব) সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলাম। এমন সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা তাকে টেনে নিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। তার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার মামলা আছে। তবে এমন ঘটনা অপ্রত্যাশিত। আমরা ভিডিও দেখে যারা তাকে এভাবে টেনে নিয়ে গেছে, তাদের কাছ থেকে ব্যাখ্যা চাইব। তবে মারধরের বিষয়টি আমি জানি না।’
কুমিল্লা জেলা ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাজ্জাদ করিম খান প্রথম আলাকে বলেন, ডিবির দায়িত্বে থাকা আন্দোলনে হামলার ঘটনায় হওয়া একটি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি অর্ণব সিংহ রায়। তিনি এখন ডিবি হেফাজতে আছেন। সোমবার তাঁকে কুমিল্লার আদালতে পাঠানো হবে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সামারিক শক্তিতে মিয়ানমারের চেয়ে ২ ধাপ এগিয়ে বাংলাদেশ
চলতি বছর সামরিক শক্তির দিক থেকে মিয়ানমারের চেয়ে দুই ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ। চলতি সপ্তাহে সামরিক শক্তি পর্যবেক্ষক প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার প্রকাশিত সূচকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংস্থাটি তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এই র্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের সামরিক বাজেট। সেনাবাহিনীর আকার, নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনীর শক্তিকেও বিবেচনা করা হয়েছে সমীক্ষায়।
গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ারের সূচক অনুযায়ী, বিশ্বে সামরিক শক্তির ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, এরপরে পরে রয়েছে রাশিয়া, চীন, ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়া। পরমাণু শক্তিধর হলেও পাকিস্তানের অবস্থান ১২ নম্বরে। তালিকায় বাংলাদেশ রয়েছে ৩৫তম অবস্থানে। বাংলাদেশের আগে রয়েছে উত্তর কোরিয়া ও আর্জেন্টিনা। আর বাংলাদেশের প্রতিবেশী মিয়ানমার রয়েছে ৩৭তম অবস্থানে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটির বেশি। এর মধ্যে প্রায় ৬ কোটি ৬১ লাখ মানুষ সামরিক বাহিনীতে যুক্ত হওয়ার যোগ্য। বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীতে মোট সেনা সংখ্যা ১ লাখ ৬৩ হাজার। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে রয়েছে ১৭ হাজার ৪০০ সদস্য এবং নৌবাহিনীতে রয়েছে ২৫ হাজার ১০০ সেনা।
অন্যদিকে, মিয়ানমারের মোট জনসংখ্যা ৫ কোটি ৭৫ লাখ। এর মধ্যে প্রায় ২ কোটি ২০ লাখ মানুষ সামরিক বাহিনীতে যুক্ত হওয়ার যোগ্য। মিয়ানমারের সক্রিয় সৈন্য সংখ্যা ১ লাখ ৫০ হাজার। মিয়ানমারের রিজার্ভ সৈন্য রয়েছে ২০ হাজার। দেশটির বিমানবাহিনীতে রয়েছে ১৫ হাজার সদস্য এবং নৌবাহিনীতে রয়েছে ১৬ হাজার সেনা।
ঢাকা/শাহেদ