কুষ্টিয়ার মিরপুরে একটি বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি নির্বাচন নিয়ে বিএনপি-জামায়াতের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। রোববার বিকেলে মিটন বুরাপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে মিরপুর থানার ওসি মমিনুল ইসলাম জানান, বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি নির্বাচন নিয়ে আমলা ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মকলেসুর রহমান মুকুল ও স্থানীয় বিএনপি নেতা রাশেদ মাহমুদ নাসিরের  মধ্যে বিরোধ চলছিল। এরই জেরে রোববার দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। আহতদের মধ্যে ১২ জনকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল ও ছয়জনকে মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

ওসি আরও বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। নতুন করে সংঘর্ষ এড়াতে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জামায়াত নেতাদের অভিযোগ, নির্বাচন থেকে নাম প্রত্যাহারের জন্য শনিবার রাতে মুকুলকে হুমকি দেন নাসির। এর প্রতিবাদে রোববার বিকেল ৩টার দিকে বিদ্যালয় মাঠে প্রতিবাদ সভা করে জামায়াত। এ সময় নাসিরের নেতৃত্বে তার সমর্থকরা লাঠিসোটা ও দেশী অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়।

তবে উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব রহমত আলী রব্বান বলেন, ‘জামায়াত নেতাকর্মীর সঙ্গে একটু ঝামেলা হয়েছে। বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। ঝামেলা যাতে আর না বাড়ে সেটা দেখা হচ্ছে।’

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

কৃষকের ৮ টাকার লেবু কয়েক হাত বদলের পর বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়

দেশের উত্তরাঞ্চলে সবজির অন্যতম বড় পাইকারি মোকাম বগুড়ার মহাস্থান হাট। পাইকারি এ বাজারে আজ সোমবার বাগানের বড় আকারের একটি লেবু বিক্রি করে চাষি দাম পেয়েছেন ৮ টাকা। ব্যাপারীর একহাত ঘুরে এই লেবু আড়তদারের গুদামে পৌঁছার পর দাম বেড়ে খরচ পড়ে ১০ টাকা। আড়ত থেকে পাইকারদের হাত ঘুরে খুচরা ব্যবসায়ীদের দোকানের পসরা পর্যন্ত যেতে এই লেবুর দাম বেড়ে হয় ১২ থেকে ১৩ টাকা।

পাঁচ হাত বদলের পর ১২ কিলোমিটার দূরে বগুড়ার শহরের ফতেহ আলী ও রাজাবাজারে এই লেবু খুচরা পর্যায়ে ক্রেতাদের কিনতে হয়েছে প্রতিটি ২০ টাকা দরে। সেই হিসাবে প্রতিটি লেবুতে মধ্যস্বত্বভোগীরা লাভ করছেন ১২ টাকা।

বগুড়ার মহাস্থান ও রাজাবাজারে লেবু বিক্রি করতে আসা কৃষক, ব্যাপারী, আড়তদার, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ী-ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে লেবুর উৎপাদক পর্যায়ে থেকে শুরু করে খুচরা পর্যায় পর্যন্ত ধাপে ধাপে দাম বৃদ্ধির এই চিত্র পাওয়া গেছে।

মহাস্থান হাটে আজ সকালে গিয়ে দেখা যায়, বাগান থেকে লেবু তুলে বস্তায় ভরে হাটে বিক্রি করতে এসেছেন চাষিরা। ব্যাপারীরা চাষিদের কাছ থেকে দরদাম করে এই লেবু কিনছেন।

হাটে আসা পাইকার রিফাত হাসান বলেন, স্বাভাবিক সময়ে হাটে ১ লাখ লেবুর সরবরাহ হয়। রোজা উপলক্ষে লেবুর চাহিদা কয়েকগুণ বেড়েছে। কিন্তু এখন লেবুর মৌসুম না হওয়ায় সরবরাহ আগের মতোই আছে। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম হওয়ায় লেবুর দাম এখন ঊর্ধ্বমুখী।

সদর উপজেলার কাজী নুরইল গ্রামের কৃষক ও লেবুচাষি আসহানুল কবির বলেন, তিনি এ বছর ৩ হাজার ৫০০ গাছের লেবুবাগান গড়েছেন। এক মাস পর বাগানের লেবু পুরোদমে বিক্রি করা সম্ভব হবে। এবার লেবুর ফলন খুব কম। ইতিমধ্যে বাগানের কিছু লেবু বাজারে বিক্রিও করেছেন। এবার বাগান থেকে প্রতিটি লেবু বিক্রি করে গড়ে আট টাকা দাম পেয়েছেন।

নন্দীগ্রাম উপজেলার চাকলমা গ্রামের লেবুচাষি শাহনাজ বেগম বলেন, রোজার আগে বাগানের লেবু বিক্রি করে দাম পেয়েছেন গড়ে দুই থেকে আড়াই টাকা। এখন বাগানে নতুন করে ফুল এসেছে। দেড় মাস পর বাগান থেকে লেবু বিক্রি করা শুরু হবে। এখন বাজার থেকে ১৫ থেকে ২০ টাকা দরে লেবু কিনতে হচ্ছে।

মহাস্থান হাটের আড়তদার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, চাষি ও পাইকারদের হাত ঘুরে আড়ত পর্যন্ত আসার পর একটি লেবুর খরচ পড়ে ১২ টাকা। আড়ত থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা এই লেবু কিনে নিয়ে আরও ২ থেকে ৩ টাকা লাভ করেন। আরও এক হাত বদলের পর খুচরা ব্যবসায়ীরা এই লেবু প্রতিটি ১৫ থেকে ২০ টাকায় বিক্রি করছেন।

প্রতিটি লেবুতে মধ্যস্বত্বভোগীরা লাভ করছেন ১২ টাকা। আজ সোমবার বিকেলে বগুড়া সার্কিট হাউসের সামনের সড়কে

সম্পর্কিত নিবন্ধ