জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) দ্বিতীয় ক্যাম্পাস সেনাবাহিনীর হাতে হস্তান্তরসহ তিন দফা দাবিতে গণ অনশনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে অনশনে বসেছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড.রেজাউল করিম। পরে অনশন ভাঙার কথা বললে উপাচার্যকে ফেরত পাঠিয়ে দাবি আদায়ে অটল রয়েছেন তারা।

এদিকে, অনশন চলাকালে ১২ জন শিক্ষার্থীর অসুস্থ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

রবিবার (১২ জানুয়ারি) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে অনশনে বসেন উপাচার্য। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড.

সাবিনা শরমীন, প্রক্টর অধ্যাপক ড. তাজামুল হক, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দীন, অধ্যাপক ড. বেলাল হোসেন অনশনে বসেন।

এর আগে, সকাল সাড়ে ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে তিন দফা দাবিতে অনশন শুরু করে শিক্ষার্থীরা।

তাদের দাবিগুলো হলো-  সেনাবাহিনীর কাছে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ হস্তান্তরের চুক্তি অনতিবিলম্বে স্বাক্ষর করতে হবে; পুরান ঢাকার বাণী ভবন ও ড. হাবিবুর রহমান হলের স্টিল বেইজড ভবনের কাজ দ্রুত শুরু এবং শেষ করতে হবে; আবাসন ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত ৭০% শিক্ষার্থীর আবাসন ভাতা নিশ্চিত করতে হবে।

এ বিষয়ে জবি গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি কেএম রাকিব বলেন, “আমরা তিন দাবিতে গণ অনশনে বসেছি। দ্বিতীয় ক্যাম্পাস সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তরের জন্য যে বড় একটা আন্দোলন হলো এবং সেখানে মন্ত্রণালয় স্পষ্ট করে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চাইলে কাজ সেনাবাহিনীকে হস্তান্তর করতে পারে। কিন্তু আমরা প্রশাসনের এ ব্যাপারে কাজের কোনো অগ্রগতি দেখতে পায়নি। তাই আমরা গণ অনশন কর্মসুচি ঘোষণা করেছি।”

অনশনে বসে উপাচার্য অধ্যাপক ড.রেজাউল করিম বলেন, “তোমরা যে দাবি-দাওয়া করছো, সে দাবি আমারো। তার ব্যাপারে আজ মন্ত্রণালয়ে চিঠি গেছে। আমরা আজ সারাদিন তোমাদের খোঁজ রাখছি। প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। আমরা আমাদের এ আন্দোলনের ফলাফল পাব। আমরা দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়েছে। কথা দিচ্ছি, আমরা তোমাদের দাবি অনুযায়ী কাজ করব। ছাত্র প্রতিনিধি নিয়ে আমরা একটা কমিটি গঠন করে সকল বিষয় জানাব এবং সিদ্ধান্ত নিব।

এদিকে, তিন দফা দাবিতে সকাল থেকে চলমান অনশনে বসা এখন পর্যন্ত ১২ শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়েছেন। 

তারা হলেন, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান তানজিল, দর্শন বিভাগের ১৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী তাওহীদুল ইসলাম, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ১৫ ব্যাচের ফয়সাল মুরাদ, ১৩ ব্যাচের উদ্ভিদবিজ্ঞানের বিভাগ একেএম রাকিব, ১৮ ব্যাচের ইসলামি আন্দোলনের আশিকুর রহমানসহ আরো সাত জন।

জানা গেছে, রাত ৯টার দিকে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তানজিল। তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। এর পরই অসুস্থ হয়ে পড়েন তাওহীদুল ইসলাম ও ফয়সাল মুরাদ। ধারাবাহিকভাবে ধীরে ধীরে সবাই অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের আম্বুলেন্সে করে বিভিন্ন মেডিকেলে স্থানান্তর করা হয়।

এ বিষয়ে মেডিকেল সেন্টারের সিনিয়র অফিসার মো. রাকিব হোসেন বলেন, “তানজিলের ব্লাড প্রেসার কমে গিয়েছে। দুপুরের পর থেকে প্রস্রাবও হয়নি। অসুস্থ হয়ে পড়া শিক্ষার্থীর শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিয়েছে। এ মুহূর্তে তার প্রাথমিক চিকিৎসা চলছে।”

মেডিকেল অফিসার রাকিব আরও বলেন, “তাওহীদের ব্লাড প্রেসার বেড়ে গেছে, আপাতত এখন স্যালাইন দেব না। আর ফয়সালের চোখ ঢেবে গিয়েছে, স্যালাইন দিতে হবে।”

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

উৎস: Risingbd

এছাড়াও পড়ুন:

তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে সড়ক অবরোধ

সরকারি তিতুমীর কলেজকে একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরসহ সাত দফা দাবিতে সড়ক অবরোধ করেছেন কলেজের শিক্ষার্থীরা। এর আগে আমরণ অনশন শুরু করে কলেজের শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার দুপুরে কলেজের সামনের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন তারা। 

ঢাকার বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাসেল সারোয়ার বলেন, তিতুমীর কলেজের সামনে রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে অবরোধ করছে কলেজের শিক্ষার্থীরা। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা মোকাবিলায় এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সেখানে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

এর আগে গতকাল বুধবার বিকেল ৫টার পর থেকে ‘তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবিতে আমরণ অনশন’ ব্যানারে তারা আমরণ অনশন শুরু করেন। এসময় শিক্ষার্থীরা ৭ দফা দাবি জানান।

আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম ‘তিতুমীর ঐক্য’ এর সাত দফা দাবিগুলো হলো- তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ। তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠন করে ২০২৪-২০২৫ সেশনের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করা। শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ নতুবা অনতিবিলম্বে শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসিক খরচ বহন ও ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ন্যূনতম দুটি বিষয় ল এবং জার্নালিজম সাবজেক্ট সংযোজন।

সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে বিগত ২৮ বছর ধরে আন্দোলন করছেন কলেজটির শিক্ষার্থীরা। সেই ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের সরকারের পটপরিবর্তনের পর শিক্ষার্থীরা আবারও নতুন করে তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টাসহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে উপস্থাপন করেন তারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুমার নামাজের পর তিতুমীরের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ 
  • তিতুমীরের শিক্ষার্থীদের অনশন চলছে
  • অনশনে শিক্ষার্থীরা, তিতুমীরের কর্মকর্তারা
  • শেখ হাসিনার ফাঁসির দাবিতে চট্টগ্রামে অনশনে বৈষম্যবিরোধীরা
  • অনশন: তিতুমীরের ৩ শিক্ষার্থী হাসপাতালে 
  • বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে অনশনে তিতুমীরের শিক্ষার্থীরা, রাস্তা অবরোধ
  • তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে সড়ক অবরোধ
  • আমরণ অনশনে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা
  • ৭ দফা দাবিতে তিতুমীর কলেজ শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশন
  • ৭ দফা দাবিতে আমরণ অনশন শুরু তিতুমীরের শিক্ষার্থীদের