টাঙ্গাইলের সখীপুরে ৭৫ বছর ধরে চলা ‘ফাইলা পাগলার মেলা’ বন্ধ ঘোষণা করেছে উপজেলা প্রশাসন। আজ রোববার বিকেল চারটায় উপজেলার দাড়িয়াপুরে অবস্থিত ফাইলা পাগলার মাজারে যৌথ বাহিনীর অভিযান চালিয়ে মেলা বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে ব্যবসায়ীদের অনুরোধ বিবেচনায় নিয়ে আগামী তিন দিন শুধু দিনের বেলা মেলার দোকানপাট খোলা রাখার অনুমতি দিয়েছে প্রশাসন।

উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার দাড়িয়াপুরে দিন দশেক আগে মাসব্যাপী ফাইলা পাগলার মেলা শুরু হয়। রোববার বিকেলে মেলায় যৌথ বাহিনী বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় ব্যবসায়ী ও আগত দর্শনার্থীদের মেলাস্থল ত্যাগ করতে ১৫ মিনিট সময় বেঁধে দেওয়া হয়। পরে দোকানপাট সরিয়ে নিতে ব্যবসায়ীদের দুই ঘণ্টা সময় দেয় যৌথ বাহিনী। অভিযানে নেতৃত্ব দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল্লাহ আল রনি।

জানা গেছে, ঐতিহ্যবাহী ফাইলা পাগলার মেলা প্রায় ৭৫ বছর ধরে উদ্‌যাপিত হয়ে আসছে। হিজরি রজব মাসের প্রথম দিন থেকে মেলা শুরু হয়ে মাসব্যাপী চলে এর কার্যক্রম। পূর্ণিমার রাতে হয় বড় মেলা। তবে মানতকারী ভক্ত–দর্শনার্থীদের আনাগোনা থাকে সারা মাস। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের হাজার হাজার লোকজন মানত করা মোরগ, খাসি, গরু নিয়ে এসে লালমাটির পাহাড়ি অঞ্চল দাড়িয়াপুরকে এক মিলনকেন্দ্রে পরিণত করে। মাজারের চারপাশের প্রায় এক কিলোমিটার দূর পর্যন্ত লোকজন মোরগ, গরু-খাসি জবাই করে মানত পূরণ করে।

আরও পড়ুনসখীপুরে ফাইলা পাগলার মেলা চলছে১১ জানুয়ারি ২০১৭

তবে অভিযোগ রয়েছে, মাজার ঘেঁষেই পাগল ভক্তদের বসার আস্তানা। সেখানে প্রকাশ্যে গাঁজা সেবন করা হয়। এই সুযোগে দূরদূরান্ত থেকে আসা যুবকেরা অনেকটা প্রকাশ্যেই মাদক গ্রহণ করেন। এ ছাড়া মেলাকে কেন্দ্র করে অশ্লীল নৃত্য, জুয়ার আসরের আয়োজন করা হয় বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল্লাহ আল রনি প্রথম আলোকে বলেন, মেলার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কিছু অভিযোগ ছিল। অভিযানে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতাও পেয়েছেন। এ কারণে মেলাটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

মেলা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলার দারিয়াপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কবির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, মেলা বন্ধ করে দেওয়ায় ভক্ত ও ব্যবসায়ীরা খুবই দুঃখ পেয়েছে। তবে ব্যবসায়ীদের অনুরোধে মাদক ও জুয়া বন্ধ করার শর্তে শুধু দিনের বেলায় আগামী তিন দিন মেলা চলার অনুমতি আনা হয়েছে।

আয়োজকদের সূত্রে জানা গেছে, ২০০৩ সালের ১৭ জানুয়ারি রাত নয়টায় এ মেলায় জেএমবি বোমা বিস্ফোরণ ঘটালে মাজারের খাদেম আবদুল গণিসহ আটজন নিহত ও ১৫ জন আহত হন। ওই সময় কয়েক বছর মেলায় লোকসমাগম কম ঘটলেও পরে মেলায় আগের পরিবেশ ফিরে আসে।

আরও পড়ুনফাইলা পাগলার মেলায় বোমা হামলার ১৩ বছর১৯ জানুয়ারি ২০১৬.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সাতক্ষীরায় সাংবাদিককে সাজা দেওয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন

সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় কালের কণ্ঠ পত্রিকার সাংবাদিক টিপু সুলতানকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ‘অন্যায়ভাবে’ সাজা দেওয়া হয়েছে অভিযোগ করে এর প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন জেলার সাংবাদিকেরা। আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে সাতক্ষীরার সাংবাদিক সমাজের ব্যানারে এ মানববন্ধন হয়।

ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি মো. আবুল কাশেমের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন মানবাধিকারকর্মী মাধব দত্ত, চ্যানেল আইয়ের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি আবুল কালাম আজাদ, সময় টিভির প্রতিনিধি মমতাজ আহমেদ, আরটিভির প্রতিনিধি রামকৃষ্ণ চক্রবর্তী, বাসসের প্রতিনিধি আসাদুজ্জামান, দেশ টিভির প্রতিনিধি শরিফুল্লাহ কায়সার, ডিবিসি টেলিভিশনের প্রতিনিধি বেলাল হোসেন, দীপ্ত টিভির প্রতিনিধি রঘুনাথ খাঁ, মানবজমিনের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি এস এম বিপ্লব হোসেন। সভাপতিত্ব করেন প্রথম আলোর সাতক্ষীরার নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ ব্যানার্জি।

বক্তারা বলেন, সরকারি নির্মাণকাজের অনিয়মের অনুসন্ধান করতে গিয়ে কালের কণ্ঠ পত্রিকার তালা উপজেলা প্রতিনিধি টিপু সুলতানকে উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী এম এম মামুন আলম ছাতা দিয়ে মারধর করেন। বিষয়টি টিপু তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ রাসেলের কাছে অভিযোগ করেন। অভিযোগ শুনে ইউএনও ঘটনাস্থলে গিয়ে একতরফাভাবে তাঁদের নিজস্ব লোকজনের সাক্ষী নিয়ে সাংবাদিক টিপুকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ১০ দিনের দণ্ডাদেশ দেন। অথচ উপসহকারী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

আরও পড়ুনতালায় প্রকৌশলীকে মারধরের অভিযোগে সাংবাদিককে দণ্ড, প্রতিবাদ২১ ঘণ্টা আগে

বক্তারা বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালত সাজা দিতে গেলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও সংশ্লিষ্ট নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে অপরাধ সংঘটিত হতে হবে। অথচ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও নির্বাহী কর্মকর্তা সেখানে ছিলেন না। তিনি সাংবাদিক টিপুর অভিযোগ শুনে সেখানে গিয়ে একতরফাভাবে সাজা প্রদান করেছেন। ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বক্তারা আরও বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে টিপুকে দেওয়া সাজা ও অভিযোগ প্রত্যাহার করতে হবে। পাশাপাশি নির্বাহী কর্মকর্তা স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থী কাজ করে সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ করার অপচেষ্টায় নেমেছেন। ওই নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপসহকারী প্রকৌশলীকে প্রত্যাহার করে ঘটনার তদন্ত করার দাবি জানানো হয়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে টিপুর বিরুদ্ধে দেওয়া সাজা ও অভিযোগ প্রত্যাহার করা না হলে আগামীকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কুমিল্লায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল আত্মসাৎ, ডিলার বিএনপি নেতার ৬ মাসের কারাদণ্ড
  • সাতক্ষীরায় সাংবাদিককে সাজা দেওয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন
  • কেন্দ্র সচিব পদে আ’লীগ নেতা, তিন পরীক্ষার পর অব্যাহতি
  • বদরগঞ্জে বিএনপির কর্মী লাভলু হত্যার আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ অব্যাহত
  • তালায় প্রকৌশলীকে মারধরের অভিযোগে সাংবাদিককে দণ্ড, প্রতিবাদ
  • খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিক্রির চেষ্টা, কৃষক দল নেতা বহিষ্কার
  • খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির দুই হাজার কেজি চাল জব্দ