সমন্বয়ক রাফি-রিজাউরকে ‘গ্যাং গ্রুপে’র সঙ্গ ছাড়ার আহ্বান
Published: 12th, January 2025 GMT
চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আবদুল হান্নান মাসউদ ও নির্বাহী কমিটির সদস্য রাসেল আহমেদকে জিম্মি করে হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা। তারা চট্টগ্রামের সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি ও রিজাউর রহমানকে ‘ডট গ্যাং’ নামক কিশোর গ্যাং গ্রুপের সঙ্গ ত্যাগ করার আহ্বান জানান। আজ রোববার বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে অভিযোগ করা হয়, রাফি ও রিজাউরের প্রশ্রয়ে কিশোর গ্যাং গ্রুপ ‘ডট গ্যাং’ শনিবার ওই হামলা চালায়। মানববন্ধনে সমন্বয়করা বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেউ বিশেষ সুবিধা নিতে কিশোর গ্যাংয়ের চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের পুনর্বাসন করার চেষ্টা করলে দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে। কিশোর গ্যাংয়ের কেউ চাঁদাবাজি, নারী উত্ত্যক্তসহ নানা অপকর্ম করে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের প্রতি দাবি জানান তারা।
জানা যায়, ছাত্র আন্দোলনে সারাদেশে নিহত, আহতসহ আন্দোলনের সামগ্রিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে আন্তর্জাতিক মানের ডকুমেন্টারি তৈরির কাজ করছে চট্টগ্রামের একটি প্রডাকশন হাউস। শনিবার ওই প্রতিষ্ঠানে মুখ্য সংগঠক হান্নান মাসুদ ও সমন্বয়ক রাসেলকে অবরুদ্ধ করে রাখে ডট গ্যাংয়ের সদস্যরা। এ সময় ওই প্রতিষ্ঠানের বেশকিছু যন্ত্রপাতি ও আসবাব ভাঙচুর করা হয়।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ডট গ্যাংয়ের মাধ্যমে বৈষম্যবিরোধী নারীদের সাইবার বুলিংয়ের শিকারে ফেলা হচ্ছে। এ জন্য তারা রাফি ও রিজাউরকে অভিযুক্ত করেন এবং গ্যাং সদস্যদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
শিক্ষার্থীরা বলেন, ডট গ্যাংয়ের সাদিক আরমানকে ব্যবহার করে রাফি ও রিজাউর চট্টগ্রামজুড়ে বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজি করছেন।
এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রামের সমন্বয়ক রিদোয়ান সিদ্দিকী, সাইফুর রুদ্র, সিয়াম ইলাহী, মিনহাজ রহমান, নিলা আফরোজ প্রমুখ বক্তব্য দেন।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
জবি শিক্ষার্থীদের উপর ছাত্রদল কর্মীর নেতৃত্বে হামলার অভিযোগ, প্রতিবাদে বিক্ষোভ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা এ বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করে দ্রুত বিচার দাবি করেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা হলেন, জবির রসায়ন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আকাশ আলী, তামান্না তাবাসসুম ও আবুল বাসার। অপরদিকে, হামলার নেতৃত্ব দেওয়া অভিযুক্ত ছাত্রদল কর্মী অনিক কুমার দাশ মার্কেটিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ।
এর আগে, গতকাল বুধবার (২৯ জানুয়ারি) জবির কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মার্কেটিং বিভাগের দুই শিক্ষার্থী জুতা পায়ে উঠলে রসায়ন বিভাগের দুই শিক্ষার্থী তার প্রতিবাদ করে। এতে তাদের ওপর হামলা চালায় মার্কেটিং বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী।
এ হামলার নেতৃত্ব দেন জবি ছাত্রদল কর্মী ও মার্কেটিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী অনিক কুমার দাশ। এতে আরো যুক্ত ছিলেন, মাহফুজুর রহমান চৌধুরী মাহী, আয়ান, আরিফ, রাতুল, আসিফসহ আরো ১৫ জন।
এ হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, গত ৫ আগস্ট পরবর্তী বাংলাদেশে আমরা আর কোন দমন-পীড়ন বরদাস্ত করব না। আর কাউকে ফ্যাসিস্ট হয়ে ওঠার সুযোগ দেওয়া হবে না। এর আগের হামলাগুলোর ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে আজ আমাদের এখানে দাঁড়াতে হত না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এসব ঘটনার দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা করুক। আমরা এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
রসায়ন বিভাগের ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থী ২০২০ -২০২১ সেশনের তামান্না তাবাসসুম বলেন, “আমরা প্রক্টরের কাছে গিয়েছিলাম। তারা আমাদের কোন সহযোগিতা করেনি। আমরা তাহলে কার কাছে যাব? আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।”
একই বিভাগের শিক্ষার্থী আকরাম হোসেন বলেন, “গতকালের ঘটনার পর আমরা প্রক্টরের কাছে যাওয়ার পর তিনি আমাদের বলেন, ২০০৫ সালের নীতিমালা পড়ার জন্য। এ বিষয়ে তারা কি পদক্ষেপ নেবে, সে ব্যাপারে তিনি আমাদের কিছু জানাতে পারেননি। বরং আমাদের বিভাগের শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। যদি এ ঘটনায় প্রশাসন কোন ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে আমরা প্রশাসন ও যে দলের প্রশ্রয়ে এ ঘটনা ঘটেছে, তাদের বিরুদ্ধে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন গড়ে তুলবে। সেই সঙ্গে আমরা ক্লাস বর্জনের ডাক দেব।”
আব্দুল কাহহার জামিল বলেন, “গতকালের ঘটনায় প্রক্টর স্যার আমাদের কোন খোঁজ নেননি। রাত ১০টার পর একজন সহকারী প্রক্টরকে পাঠান। তিনি চিকিৎসার জন্য কিছু টাকা দেন। কিন্তু প্রক্টর স্যারের সঙ্গে আমরা কথা বলতে গেলে তিনি দুর্ব্যবহার করেন। গত ১ বছরে আামদের বিভাগের শিক্ষার্থীরা তিনটি হামলার অভিযোগ করলেও সুষ্ঠু বিচার পাননি। যদি ওই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হত, তাহলে আজ আমাদের এখানে দাঁড়াতে হত না। আমরা এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”
তিনি বলেন, “বিচারের নামে টালবাহানা করা হয়। আমাদের প্রক্টর অফিস থেকে ভয় দেখিয়ে অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়। এছাড়া আমাদের নানা হুমকি দিয়ে ভয় দেখনো হয়। বলা হয়, যদি ক্যাম্পাসের বাইরে কেউ হামলা করে, তাহলে সে দায় প্রক্টর অফিস নেবে না।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, “সবকিছুর জন্য সময় দরকার। রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা যেভাবে বিচার চাচ্ছে, সেটা এত দ্রুত সম্ভব না। আগের একটা কমিটি আছে, সে কমিটির কাছেই আমি এটার তদন্ত হস্তান্তর করেছি।”
তিনি বলেন, “হ্যাঁ, আমি তাদের ২০০৫ সালের নীতিমালা পড়তে বলেছি। আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামীকাল ভর্তি পরীক্ষা আছে। সব মিলিয়ে ব্যস্ততার মধ্যে আছি।”
ঢাকা/লিমন/মেহেদী