কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) গণিত বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা অর্ণব সিংহ রায়কে মারধর করে পুলিশে সোপর্দ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা।

রবিবার (১২ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৫টায় তাকে পুলিশে সোপর্দ করেন তারা।

আটক অর্ণব সিংহ রায় নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের (কলেজ শাখা) সাবেক সভাপতি এবং কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের কর্মী ছিলেন। তিনি সদর দক্ষিণ থানায় মো.

শাখাওয়াত হোসেন বাদী হয়ে দায়ের করা একটি মামলায় এজাহারভুক্ত ১২ নম্বর আসামি।

জানা গেছে, অর্ণব সিংহ রায় রবিবার (১২ জানুয়ারি) সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা দিতে আসেন। পরীক্ষা শেষে অপেক্ষারত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের দেখে তিনি গণিত বিভাগের সভাপতির ওয়াশরুমে অবস্থান নেন। প্রক্টরের উপস্থিতিতে সেখান থেকে প্রক্টর অফিসে আনার সময় তাকে উদ্দেশ্য করে ডিম মারা হয়। পরে প্রক্টর অফিস থেকে মারধর করতে করতে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে অবস্থানরত পুলিশে সোপর্দ করা হয়। 

মার্কেটিং বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শাহাদাত তানভীর রাফি বলেন, “সে ছাত্রলীগের নেতা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছিল এবং বিপক্ষে গিয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মিছিল করেছিল। এছাড়া সে একাধিক মামলার আসামিও। তাই তাকে পুলিশের কাছে দেওয়া হয়েছে। এর আগেও কয়েকজনকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড মো. আবদুল হাকিম বলেন, “আমরা তার সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু যেভাবে শিক্ষার্থীরা একপ্রকার মব জাস্টিসের মতো তাকে নিয়ে গেল, সেখানে আমাদের কিছু করার ছিল না। যা হয়েছে, অপ্রত্যাশিত।”

মারধরের বিষয়ে তিনি বলেন, “আমরা ভিডিও দেখে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।”

কোটবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মো. বোরহান উদ্দিন বলেন, “সমন্বয়কদের মধ্য থেকে একজন ফোন দিয়ে আমাদের জানান, একজন আসামিকে আটকে রাখা হয়েছে। পরবর্তীতে আমরা যাচাই করতে দেখলাম একটি মামলায় তিনি ১২ নম্বর এজাহারভুক্ত আসামি। এরপর আমরা তাকে আটক করে নিয়ে আসি। বর্তমানে অভিযুক্ত ডিবি হেফাজতে আছেন।”

এ ব্যাপারে জানতে কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ওসি সাজ্জাদ করিম খানকে একাধিকবার মুঠোফোনে কল দিয়েও পাওয়া যায়নি।

ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী

উৎস: Risingbd

এছাড়াও পড়ুন:

পাকিস্তানে কেএফসিতে হামলা-সংঘর্ষে নিহত ১, গ্রেপ্তার ১৭৮

গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ এবং এতে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের প্রতিবাদে পাকিস্তানজুড়ে মার্কিন ফাস্টফুড চেইন কেএফসির শাখাগুলোর বিরুদ্ধে একাধিক বিক্ষোভ হয়েছে। বিক্ষোভ চলাকালে গুলিবিদ্ধ হয়ে কেএফসির এক কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া কেএফসির একাধিক শাখায় ক্ষুব্ধ জনতার ১০ টিরও বেশি হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় অন্তত ১৭৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। খবর রয়টার্স ও বিবিসির 

গত এক সপ্তাহে দেশজুড়ে কেএফসির অন্তত ২০টি শাখায় হামলার চেষ্টা হয়েছে বলে বিবিসিকে জানিয়েছেন পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তালাল চৌধুরী।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, লোহার রড হাতে জনতা কেএফসি দোকানে ঢুকে পড়ছে এবং দোকান জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। এরপর পুলিশ এসে বিক্ষোভকারীদের গ্রেপ্তার করে। করাচিতে দুটি দোকানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

একটি ভিডিওতে একজন লোক চিৎকার করে বলছেন, ‘তোমরা যেটা থেকে টাকা কামাচ্ছো, ওরা সেই টাকা দিয়ে গুলি কিনছে।’

কর্মকর্তারা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, করাচি, লাহোর ও ইসলামাবাদসহ পাকিস্তানের প্রধান প্রধান শহরে অন্তত ১১ টি ঘটনায় লাঠিসোটা হাতে বিক্ষোভকারীরা কেএফসির দোকানে ভাঙচুর চালায়। এতে জড়িত থাকার অভিযোগে ওই বিক্ষোভকারীদের আটক করে পুলিশ।

লাহোরে একটি দোকানে বন্দুকধারীদের গুলিতে এক কর্মচারী এ সপ্তাহে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন পুলিশ কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, হামলার সময় সেখানে কোনও বিক্ষোভ চলছিল না। ঘটনাটি রাজনৈতিক ভাবাবেগ থেকে ঘটেছে কিনা বা অন্য কোনও কারণ ছিল কিনা তা তদন্ত করে দেখছেন তারা।

লাহোর পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ফয়সাল কামরান জানান, শহরজুড়ে ২৭টি কেএফসি আউটলেটে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। শহরটিতে দুইটি হামলা সংঘটিত হয়েছে এবং পাঁচটি হামলা পুলিশ ঠেকাতে পেরেছে।

টিএলপির মুখপাত্র রেহান মহসিন খান বলেন, ‘আমরা মুসলিমদের ইসরায়েলি পণ্য বর্জনের আহ্বান জানিয়েছি, তবে কেএফসির সামনে প্রতিবাদের ডাক দেইনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘কোনও ব্যক্তি দলীয় পরিচয়ে এ ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকলেও, সেটি দলীয় নীতির অংশ নয়।’

পাকিস্তানে দীর্ঘদিন ধরেই কেএফসি মার্কিন সংস্কৃতির প্রতীক হিসেবে দেখা হয়ে আসছে, যার কারণে মানুষের যুক্তরাষ্ট্র-বিরোধী ভাবাবেগের কারণে বহুবার তা বিক্ষোভ ও হামলার শিকার হয়েছে।

সম্প্রতি গাজায় ইসরায়েলের অভিযানের বিরুদ্ধে পাকিস্তানসহ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোতে পশ্চিমা ব্র্যান্ডগুলো বর্জন ও প্রতিবাদ চলছে।

রয়টার্স লিখেছে, কেএফসির মূল প্রতিষ্ঠান ইয়াম ব্র্যান্ডস এখনও এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। তবে তাদের আরেক ব্র্যান্ড পিৎজা হাটও গাজা যুদ্ধের কারণে বর্জনের মুখে থাকায় ব্যবসায়িক ক্ষতিতে পড়েছে বলে জানায় সংস্থাটি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শিক্ষকদের বিচারক হিসেবে নিয়োগের সুপারিশ কতটা যৌক্তিক
  • প্রাণনাশের ভয় নিয়ে পালাতে হয়েছিল, দাবি হাথুরুসিংহের
  • খাল–নালায় পড়ে মৃত্যুর দায় নেয় না, তদন্তও করে না
  • ৩১ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র
  • নোয়াখালীতে ১২০ মিলিমিটার বৃষ্টি 
  • নাটোরের শিশুর লাশ উদ্ধারের মামলায় পাঁচ কিশোর আটক
  • কৃষি পরিবারের বউ হয়ে এসেছিলেন, হয়েছেন দেশসেরা কৃষক
  • বীথি: পর্ব ১৭
  • কুয়েট উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে প্রতীকী গদিতে আগুন জ্বালালেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা
  • পাকিস্তানে কেএফসিতে হামলা-সংঘর্ষে নিহত ১, গ্রেপ্তার ১৭৮