আবাসন সংকট নিরসনে প্রয়োজনে হোস্টেল ভাড়া করার দাবি আদায়ে কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নারী শিক্ষার্থীরা।

দাবি না মানা পর্যন্ত আগামী মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় ছাত্রীদের আবাসন সংকট সমাধানে উপাচার্যের বাসভবনে ‘ভিসির বাংলায় ঠাঁয় চাই’ শীর্ষক কর্মসূচি পালন করবেন তারা।

রবিবার (১২ জানুয়ারি) বিকাল ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তারা।

আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান ইমু লিখিত বক্তব্যে বলেন, “নতুন হল তৈরি না হওয়া পর্যন্ত ছাত্রীদের অস্থায়ী আবাসন হিসেবে ভবন ভাড়া করে হোস্টেল তৈরি করা, গণরুম বিলুপ্তিসহ সাত দফা দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে গত ২ জানুয়ারি মতবিনিময় সভা হয়। এর মাধ্যমে বেশকিছু প্রাপ্তি হয়েছে।”

তিনি বলেন, “রোকেয়া হল ছাড়া বাকি চারটি ছাত্রী হলে অনাবাসিক ছাত্রী প্রবেশের অনুমতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে, আর্থিকভাবে দুর্বল অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের একাংশকে মাসিক বৃত্তি দেওয়ার কার্যক্রম দ্রুত শুরু হওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, নতুন হল নির্মাণের স্থান নির্ধারণে 'রিভিউ কমিটি গঠন করা হবে বলে জানানো হয়েছে। এছাড়া ডাকসু নির্বাচিত প্রতিনিধি ব্যতীত হল নির্মাণ রিভিউ কমিটি বা অন্য কোন কমিটিতে কোন শিক্ষার্থী-প্রতিনিধি রাখা হবে না, সবগুলো হল সংস্কার হবে, শামসুন্নাহার হলে নতুন দোকান তৈরি করা হবে বলে জানানো হয়েছে।”

তিনি আরো বলেন, “তবে বেশকিছু অমীমাংসিত দাবি রয়েছে। সেগুলো হলো- ভবন ভাড়া করে ছাত্রীদের জন্য অস্থায়ী আবাসন হিসেবে হোস্টেল চালু করা, ছাত্রী হলগুলোতে বর্ধিত ভবন নির্মাণসহ নতুন দুইটি হল স্থাপন বাবদ আর্থিক পরিকল্পনা ঘোষণা করা ইত্যাদি।”

ইমু বলেন, “তবে নির্মাণকালীনে দীর্ঘ সময়ের জনা ছাত্রীদের হোস্টেলের আবেদন করা হলে বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ অনুযায়ি আইনি বৈধতা নেই উল্লেখ করে প্রশাসনিকভাবে অপারগতা প্রকাশ করা হয়। কিন্তু এমন কোন বিধান আমাদের চোখে পড়েনি। বরং অধ্যাদেশ ১৯৭৩ এর ২৪ (ডি) এবং ৪৫(১) ধারায় স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোন হোস্টেল তৈরি কিংবা বাতিলের এখতিয়ার একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের রয়েছে। ফলে, বিশ্ববিদ্যালয় চাইলেই সিন্ডিকেট সভার মাধ্যমে অস্থায়ীভাবে আবাসনের ব্যবস্থা করতে পারে।

ইমু আরও বলেন, “গণরুম বিলুপ্তির দাবি পুরোপুরি উপেক্ষা করে যাওয়া হয়েছে, নতুন হল মূল ক্যাম্পাসে নির্মাণের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়নি, বৃত্তি প্রদানের বিষয়ে বিস্তারিত জানানোসহ কোনো বিজ্ঞত্তি প্রকাশ করা হয়নি, শতভাগ আবাসিকীকরণের ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি এবং ডাবলিং প্রখা বন্ধ করার কোনো পরিকল্পনা জানানো হয়নি।”

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আনিয়া ফাহমিন, মাইশা তাসনিম মৃত্তিকা প্রমুখ।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

এছাড়াও পড়ুন:

ইতালির কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে দুইজনকে গুলি করে হত্যা

ইতালির কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে ফরিদপুরের দুই যুবককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এমনকি হত্যার পর পরিবারের সদস্যদের হোয়াটসঅ্যাপে তাদের ছবি পাঠানো হয়। 

নিহত দুই যুবক হলেন- ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের কুমারখালী গ্রামের মিন্টু হাওলাদারের ছেলে হৃদয় হাওলাদার (২৪) ও মজিবর হাওলাদারের ছেলে রাসেল হাওলাদার (২৬)। 
 
হৃদয়ের বাবা মিন্টু হাওলাদার বলেন, দু’মাস আগে স্থানীয় আবু তারা মাতুব্বর, আলমাছ ও আনোয়ারের মাধ্যমে ১৬ লাখ টাকা দিয়ে ছেলেকে বিদেশ পাঠাই। ছেলেকে প্রথমে দুবাই সেখান থেকে সৌদি আরব তারপর লিবিয়া নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে হৃদয়কে হত্যা করা হয়েছে।

হৃদয়ের বড় ভাই মোখলেছুর রহমান বলেন, ৪/৫ দিন ধরে হৃদয়ের কোন খোঁজ পাচ্ছিলাম না। দালালরা শুক্রবার দুপুরে আমার ভাইয়ের লাশের ছবি পাঠিয়েছে। ১৬ লাখ টাকা দেওয়ার পরও বিদেশ থেকে ফোন করে আরও টাকা দাবি করছিল পাচারচক্র। টাকা না দেওয়ায় ওরা আমার ভাইকে খুন করেছে। 

একই গ্রামের ফয়সাল হোসেন বলেন, রাসেল নামের আরও একজনকেও লিবিয়াতে হত্যা করা হয়েছে। ওরা একই গ্রামের বাসিন্দা। ওই মানবপাচার চক্র এভাবে মানুষকে জিম্মি করে টাকা আদায় করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছে। টাকা না দিলেই তাদের সাথে খারাপ কিছু ঘটানো হয়। কখনও নির্যাতন করে আবার কখনও হত্যা করে।

ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানার ওসি মো. মোকসেদুর রহমান বলেন, ভাঙ্গার দুটি ছেলেকে লিবিয়ায় গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে শুনেছি। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় এখনও লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়নি। ওই পরিবারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করছি। তাদের সঙ্গে  আলোচনা করে দালালচক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ