পটুয়াখালীর পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খোরশেদুল আলম ও প্লান্ট ম্যানেজার শাহ আবদুল মাওলাকে অপসারণসহ ৯ দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছে ভূমি অধিগ্রহনে ক্ষতিগ্রস্তরা। 

রবিবার (১২ জানুয়ারি) দুপুর বারোটায় কলাপাড়া প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। 

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্য রবিউল আউয়াল অন্তর, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মাহবুবুল আলম নাঈম, মেহেদী হাসান ইলিয়াস, শহিদুল ইসলাম, রেজাউলর প্যাদা ও বিলকিস বেগমসহ অনেকে।

২০১৭ সালে উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নে ১ হাজার একর জমির উপর নির্মাণ করা হয় পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র। ভূমি অধিগ্রহণের সময় ক্ষতিগ্রস্থদের বিদ্যুৎকেন্দ্রের কর্মকর্তাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না হওয়ায় তারা দীর্ঘদিন ধরে এমন কর্মসূচি পালন করে আসছে।

বক্তারা ভূমি অধিগ্রহনকৃত পরিবারকে তিন গুণ অর্থ প্রদান, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়ে যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরি প্রদান, দ্রুত সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্তদের আটকে থাকা জায়গার টাকা প্রদান ও স্বপ্নের ঠিকানায় বসবাসকারীদের জীবনমান উন্নয়নসহ ৯ দফার দাবি জানান। 

তাদের দাবি মানা না হলে বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রধান ফটকে অবস্থান কর্মসূচিসহ আরও কঠোর কর্মসূচি পালনের হুশিয়ারি দেন।

ধানখালী ইউনিয়নের মাছুয়াখালী গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্য মেহেদী হাসান ইলিয়াস বলেন, “পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের কর্মকর্তাদের দুর্নীতির কোনো শেষ নেই। নির্বাহী প্রকৌশলী জার্জিস তালুকদার জর্জ নিজেই বিদ্যুৎকেন্দ্রের মধ্যে অন্তত ৪০ থেকে ৫০টি মহিষ পালন করেন, গোপনে কয়লা বিক্রি করেন। কোন আইনে সরকারি অফিসে মহিষ পালনের নিয়ম আছে? আমরা আমাদের ন্যায্য অধিকারের দাবিতে দাঁড়িয়েছি। আমাদের দাবি মানা না হলে কঠোর কর্মসূচি পালন করা হবে।”

একই এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের আরেক সদস্য রবিউল আওয়াল অন্তর বলেন, “আমরা বার বার রাস্তায় দাঁড়িয়েছি। কিন্তু আমাদের দাবির বিষয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। বিশেষ করে বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুই কর্মকর্তা ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্লান্ট অন্তহীন দুর্নীতি করেছে। তদন্ত সাপেক্ষে তাদের অপসারণ ও গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।”

পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী (অ্যাডমিন) জার্জিস তালুকদার বলেন, “এটি একটি ছোট খাটো মহিষের খামারের মতো। এটি নিয়ে অভিযোগ করার মতো কিছু দেখছি না। তবে একজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে তো যে কোনো বিষয় নিয়েই করা যায়।”

পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্লান্ট ম্যানেজার শাহ আব্দুল মাওলা বলেন, “তাদের সকল দাবি দাওয়া মেনে নেওয়া হয়েছে। এখন তারা যেগুলো করছে তা উদ্দেশ্য প্রণোদিত। আর আমাদের বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট।”

ঢাকা/ইমরান/এস

.

উৎস: Risingbd

এছাড়াও পড়ুন:

জবি শিক্ষার্থীদের উপর ছাত্রদল কর্মীর নেতৃত্বে হামলার অভিযোগ, প্রতিবাদে বিক্ষোভ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা এ বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করে দ্রুত বিচার দাবি করেন।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা হলেন, জবির রসায়ন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আকাশ আলী, তামান্না তাবাসসুম ও আবুল বাসার। অপরদিকে, হামলার নেতৃত্ব দেওয়া অভিযুক্ত ছাত্রদল কর্মী অনিক কুমার দাশ মার্কেটিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ।

এর আগে, গতকাল বুধবার (২৯ জানুয়ারি) জবির কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মার্কেটিং বিভাগের দুই শিক্ষার্থী জুতা পায়ে উঠলে রসায়ন বিভাগের দুই শিক্ষার্থী তার প্রতিবাদ করে। এতে তাদের ওপর হামলা চালায় মার্কেটিং বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী।

এ হামলার নেতৃত্ব দেন জবি ছাত্রদল কর্মী ও মার্কেটিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী অনিক কুমার দাশ। এতে আরো যুক্ত ছিলেন, মাহফুজুর রহমান চৌধুরী মাহী, আয়ান, আরিফ, রাতুল, আসিফসহ আরো ১৫ জন।

এ হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, গত ৫ আগস্ট পরবর্তী বাংলাদেশে আমরা আর কোন দমন-পীড়ন বরদাস্ত করব না। আর কাউকে ফ্যাসিস্ট হয়ে ওঠার সুযোগ দেওয়া হবে না। এর আগের হামলাগুলোর ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে আজ আমাদের এখানে দাঁড়াতে হত না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এসব ঘটনার দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা করুক। আমরা এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

রসায়ন বিভাগের ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থী ২০২০ -২০২১ সেশনের তামান্না তাবাসসুম বলেন, “আমরা প্রক্টরের কাছে গিয়েছিলাম। তারা আমাদের কোন সহযোগিতা করেনি। আমরা তাহলে কার কাছে যাব? আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।”

একই বিভাগের শিক্ষার্থী আকরাম হোসেন বলেন, “গতকালের ঘটনার পর আমরা প্রক্টরের কাছে যাওয়ার পর তিনি আমাদের বলেন, ২০০৫ সালের নীতিমালা পড়ার জন্য। এ বিষয়ে তারা কি পদক্ষেপ নেবে, সে ব্যাপারে তিনি আমাদের কিছু জানাতে পারেননি। বরং আমাদের বিভাগের শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। যদি এ ঘটনায় প্রশাসন কোন ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে আমরা প্রশাসন ও যে দলের  প্রশ্রয়ে এ ঘটনা ঘটেছে, তাদের বিরুদ্ধে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন গড়ে তুলবে। সেই সঙ্গে আমরা ক্লাস বর্জনের ডাক দেব।”

আব্দুল কাহহার জামিল বলেন, “গতকালের ঘটনায় প্রক্টর স্যার আমাদের কোন খোঁজ নেননি। রাত ১০টার পর একজন সহকারী প্রক্টরকে পাঠান। তিনি চিকিৎসার জন্য কিছু টাকা দেন। কিন্তু প্রক্টর স্যারের সঙ্গে আমরা কথা বলতে গেলে তিনি দুর্ব্যবহার করেন। গত ১ বছরে আামদের বিভাগের শিক্ষার্থীরা তিনটি হামলার অভিযোগ করলেও সুষ্ঠু বিচার পাননি। যদি ওই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হত, তাহলে আজ আমাদের এখানে দাঁড়াতে হত না। আমরা এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”

তিনি বলেন, “বিচারের নামে টালবাহানা করা হয়। আমাদের প্রক্টর অফিস থেকে ভয় দেখিয়ে অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়। এছাড়া আমাদের নানা হুমকি দিয়ে ভয় দেখনো হয়। বলা হয়, যদি ক্যাম্পাসের বাইরে কেউ হামলা করে, তাহলে সে দায় প্রক্টর অফিস নেবে না।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, “সবকিছুর জন্য সময় দরকার। রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা যেভাবে বিচার চাচ্ছে, সেটা এত দ্রুত সম্ভব না। আগের একটা কমিটি আছে, সে কমিটির কাছেই আমি এটার তদন্ত হস্তান্তর করেছি।”

তিনি বলেন, “হ্যাঁ, আমি তাদের ২০০৫ সালের নীতিমালা পড়তে বলেছি। আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামীকাল ভর্তি পরীক্ষা আছে। সব মিলিয়ে ব্যস্ততার মধ্যে আছি।”

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সোনারগাঁয়ে পানাম ব্রিজ রক্ষার দাবিতে মানববন্ধন
  • ৫ দাবিতে নোবিপ্রবির ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
  • জবি শিক্ষার্থীদের উপর ছাত্রদল কর্মীর নেতৃত্বে হামলার অভিযোগ, প্রতিবাদে বিক্ষোভ
  • সেন্টমার্টিনে পর্যটক উন্মুক্ত রাখার দাবি
  • সাদ্দা‌মের ফাঁসির দাবিতে দে‌বিদ্বা‌রে বি‌ক্ষোভ