কুড়িগ্রামের চিলমারীতে কৃষকদের সরকারি প্রণোদনার ৫ প্যাকেট সবজি বীজ ও ১২০ কেজি সার কীটনাশকের দোকানে বিক্রির সময় আতোয়ার রহমান নামের এক উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে আটক করেছেন স্থানীয় লোকজন। রোববার বেলা দেড়টার দিকে উপজেলার রমনা মডেল ইউনিয়নের জোড়গাছ বাজারে এ ঘটনা ঘটে। তিনি ওই ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার দায়িত্বে আছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ সকালে উপজেলা কৃষি কার্যালয় থেকে কৃষকদের মধ্যে প্রণোদনার বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। দুপুরে প্রণোদনের পুষ্টি বাগানের সবজির বীজ ও সার তুলে জোড়গাছ বাজারের ‘মেসার্স ইকবাল ট্রেডার্স’ নামের একটি কীটনাশকের দোকানে বিক্রি করার জন্য নিয়ে আসেন আতোয়ার রহমান। পরে আশপাশের লোকজন বিষয়টি বুঝতে পেরে সার, বীজসহ তাঁকে আটক করেন।

দুপুরে জোড়গাছ বাজারে ওই দোকানে গিয়ে দেখা যায়, কীটনাশকের দোকানের ভেতরে পুষ্টি বাগানের জন্য ৫ প্যাকেট সবজির বীজ ও ৫ বস্তা (২৪ কেজির বস্তা) সার দেখতে পাওয়া যায়। পরে চিলমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানানো হলে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

স্থানীয় বাসিন্দা মাহমুদুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আতোয়ার রহমান বেলা দেড়টার দিকে কৃষি কার্যালয় থেকে অটোতে করে সার ও বীজ বিক্রি করার জন্য দোকানে নিয়ে আসেন। তাঁরা বিষয়টি বুঝতে পেরে তাঁকে হাতেনাতে আটক করেন। কৃষকের সার ও বীজ বিতরণে কারচুপি করে এভাবে দোকানে বিক্রি করা হচ্ছে। এ ঘটনায় ওই ব্যক্তি ছাড়াও আরও অনেকেই জড়িত থাকার সম্ভাবনা আছে। সঠিক তদন্ত করে তাঁকে আইনের আওতায় আনতে পারলে কৃষকের সার-বীজ সংকট কেটে যাবে বলে তিনি মনে করেন।

মেসার্স ইকবাল ট্রেডার্সের মালিক ফারুক ইসলাম বলেন, ‘আমার সারের দোকানে ওই কর্মকর্তা অটোতে করে সার এবং বীজ নিয়ে আসেন।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যেহেতু সরকারি সার-বীজ দোকানে নিয়ে এসেছে, অবশ্যই বিক্রির জন্যই এনেছিল। তবে তিনি আগে থেকে তাঁর সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেননি।

অভিযুক্ত আতোয়ার রহমান বলেন, ‘আমি নিয়ে আসিনি। পুষ্টি বাগানের বীজ ও সার কৃষকেরা কৃষি কার্যালয় থেকে তুলে এনে নিজেরাই ওই দোকানে রেখেছেন। তাঁরা আগামীকাল নিয়ে যাবেন।’

জানতে চাইলে চিলমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কুমার প্রণয় বিষণ দাস বলেন, স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পরে ওই দোকান থেকে সার ও বীজ জব্দ করে নিয়ে আসেন।

কুড়িগ্রাম খামারবাড়ির উপপরিচালক মো.

আবদুল্লাহ আল মামুন প্রথম আলোকে বলেন, বিকেলে চিলমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তাঁকে বিষয়টি জানান। কাল জেলা থেকে দুজন কৃষি কর্মকর্তা ঘটনাটি তদন্তের জন্য সেখানে যাবেন। কৃষকের প্রণোদনার সার-বীজ বিক্রির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা থাকলে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সামারিক শক্তিতে মিয়ানমারের চেয়ে ২ ধাপ এগিয়ে বাংলাদেশ

চলতি বছর সামরিক শক্তির দিক থেকে মিয়ানমারের চেয়ে দুই ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ। চলতি সপ্তাহে সামরিক শক্তি পর্যবেক্ষক প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার প্রকাশিত সূচকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সংস্থাটি তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এই র‌্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের সামরিক বাজেট। সেনাবাহিনীর আকার, নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনীর শক্তিকেও বিবেচনা করা হয়েছে সমীক্ষায়।

গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ারের সূচক অনুযায়ী, বিশ্বে সামরিক শক্তির ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, এরপরে পরে রয়েছে রাশিয়া, চীন, ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়া। পরমাণু শক্তিধর হলেও পাকিস্তানের অবস্থান ১২ নম্বরে। তালিকায় বাংলাদেশ রয়েছে ৩৫তম অবস্থানে। বাংলাদেশের আগে রয়েছে উত্তর কোরিয়া ও আর্জেন্টিনা। আর বাংলাদেশের প্রতিবেশী মিয়ানমার রয়েছে ৩৭তম অবস্থানে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটির বেশি। এর মধ্যে প্রায় ৬ কোটি ৬১ লাখ মানুষ সামরিক বাহিনীতে যুক্ত হওয়ার যোগ্য। বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীতে মোট সেনা সংখ্যা ১ লাখ ৬৩ হাজার। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে রয়েছে ১৭ হাজার ৪০০ সদস্য এবং নৌবাহিনীতে রয়েছে ২৫ হাজার ১০০ সেনা। 

অন্যদিকে, মিয়ানমারের মোট জনসংখ্যা ৫ কোটি ৭৫ লাখ। এর মধ্যে প্রায় ২ কোটি ২০ লাখ মানুষ সামরিক বাহিনীতে যুক্ত হওয়ার যোগ্য। মিয়ানমারের সক্রিয় সৈন্য সংখ্যা ১ লাখ ৫০ হাজার। মিয়ানমারের রিজার্ভ সৈন্য রয়েছে ২০ হাজার। দেশটির বিমানবাহিনীতে রয়েছে ১৫ হাজার সদস্য এবং নৌবাহিনীতে রয়েছে ১৬ হাজার সেনা। 

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ