বনলতা ও সুন্দরবন। সুন্দরবন নামটা শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে বাঘ, হরিণ, কুমির,বন,পানি। যান্ত্রিক কোলাহল থেকে, ইট-পাথরের জীবন থেকে ঘুরতে, মন প্রফুল করতে, ক্লান্তি দুর করতে অনেকেই এই শীতে নানা জায়গায় যাচ্ছেন। আপনার ঘুরার জায়গাটি হতে পারে মোংলায় (সুন্দরবনে) বনলতা ইকো রিসোর্ট।
ঢাকা থেকে মোংলার বাসে গিয়ে নামবেন লাউডোভ ফেরিঘাট, তারপর আপনার আর কিছু করতে হবে না, রিসোর্টের ব্যবস্হাপনায় আপনি যাবেন তাদের রিসোর্টে, থাকবেন সুন্দরবনের ভিতর, ঘুরবেন প্রাণখুলে, এবার আসুন তাদের প্যাকেজ ও সুযোগ সুবিধা নিয়ে আলোচনা করি। জনপ্রতি ২ হাজার ৪৯৯ টাকায় ঘুরে আসুন সুন্দরবনের কোলঘেঁষে এই মনোরম রিসোর্ট থেকে। এই প্যাকেজে থাকছে তিন বেলা খাবার, সুন্দরবনের কোলঘেঁষে এই মনোরম রিসোর্টে একদিন/এক রাত থাকার সুযোগ, ডিঙ্গি নৌকা নিয়ে সুন্দরবনের ক্যানেলে ভ্রমণ ও লাউডোপ ফেরিঘাট থেকে বাই রোডে রিসিব অ্যান্ড ড্রপ।প্রযুক্তির অগ্রগতির সাথে সাথে যান্ত্রিক শব্দ কোলাহলে হাপিয়ে উঠলে ঘুরে যেতে পারেন। যেটি আপনাকে মানসিক শান্তির সাথে সাথে একটি ভালো ভ্রমণ অভিজ্ঞতা দিবে।
বন্য পরিবেশ, জোয়ার-ভাটার খেলা, কুয়াশার হাতছানির মধ্যে অপরুপ সুন্দরবন একইসাথে কতটা রোমাঞ্চকর হতে পারে একটু ভেবে দেখুন তো। এটাই কিন্তু সময় প্রকৃতির রানী ম্যানগ্রোভ সুন্দরবনকে খুব কাছ থেকে উপলব্ধি করার। যদি চান পরিবার বন্ধু-বান্ধব কিংবা প্রিয়সীকে নিয়ে একান্তে নিরিবিলি প্রকৃতির সান্নিধ্যে আসতে।রুম বুকিং এর জন্য সরাসরি যোগাযোগ করুন-০১৭৩৫-৬৪৭৮০৭ (হোয়াটসঅ্যাপ) ০১৯৯৯-৭৫৪৩৯৯।
আপনি চাইলে আমাদের থেকে কাপল প্যাকেজ, সিঙ্গেল প্যাকেজ, কর্পোরেট প্যাকেজ কাস্টমাইজ করে নিতে পারবেন। আজই বুকিং করুন আপনার পছন্দের রুমটি/প্যাকেজটি, ইকো প্রিমিয়াম এসি রুমের প্যাকেজমূল্য জনপ্রতি ২ হাজার ৪৯৯ টাকা ( ১ রুমে ৪ জন শেয়ার)। জনপ্রতি ২ হাজার ৯৯৯ টাকা (১ রুমে ৩ জন শেয়ার)। জনপ্রতি ৩ হাজার ৪৯৯ টাকা ( ১ রুমে ২ জন শেয়ার)। বিল্ডিং এসি রুমের প্যাকেজ মূল্য জনপ্রতি ১ হাজার ৯৯৯ টাকা (১ রুমে ৪ জন শেয়ার)। জনপ্রতি ২ হাজার ৪৯৯ টাকা (১ রুমে ৩ জন শেয়ার)। জনপ্রতি ২ হাজার ৯৯৯ টাকা (১ রুমে ২ জন শেয়ার)। আমাদের প্যাকেজে আপনি যা পাচ্ছেন প্রিমিয়াম ১টি রুম। ওয়েলকাম ড্রিংকস। দুপুরের খাবার।
ক্যানেল ক্রুজিং ২ ঘণ্টা। বিকালের নাস্তা। সন্ধ্যায় চা-বিস্কুট। রাতের খাবার। সকালের খাবার।রিসিভ/ড্রপ (লাউডোব ফেরিঘাট থেকে) (সুপার প্রিমিয়াম ইকো রুম প্যাকেজ) ১ রুমে ২ জন ৪ হাজার ৯৯৯ টাকা জনপ্রতি। ১ রুমে ৩ জন ৩ হাজার ৯৯৯ টাকা জনপ্রতি। ১ রুমে ৪ জন-৩২৫০ টাকা জনপ্রতি। সুপার ইকো প্রিমিয়াম ডুপ্লেক্স প্যাকেজ। ১ রুমে ২ জন ৬ হাজার ৯৯৯ টাকা জনপ্রতি। ১ রুমে ৩ জন ৪ হাজার ৯৯৯ টাকা জনপ্রতি। ১ রুমে ৪ জন ৪ হাজার ৯৯৯ টাকা জনপ্রতি। ১ রুমে ৫ জন ৩ হাজার ৯৯৯ টাকা জনপ্রতি। ১ রুমে ৮ জন ৩ হাজার ৪৯৯ টাকা জনপ্রতি। আমাদের প্যাকেজে আপনি যা পাচ্ছেন প্রিমিয়াম ১টি রুম। ওয়েলকাম ড্রিংকস। দুপুরের খাবার। ক্যানেল ক্রুজিং ২ ঘণ্টা। বিকালের নাস্তা।
সন্ধ্যায় চা-বিস্কুট। রাতের খাবার। সকালের খাবার। রিসিভ/ড্রপ (লাউডোব ফেরিঘাট থেকে বাই রোডে) করমজল ট্যুর। আপনারা যেদিন চেক আউট করবেন, ঐদিন আপনাদের বানিশান্তা ঘাট থেকে বোটে করে করমজল নিয়ে যাওয়া হবে, এবং করমজল ভ্রমণ শেষে আপনাদেরকে মোংলা নামিয়ে দেওয়া হবে।সুন্দরবনের গাঘেঁষে মংলা থেকে বোটে করে বসেই একসাথে উপভোগ করতে পারবেন বাংলার অপরূপ বন, নদী ও গ্ৰাম্য পরিবেশ।
ঢাকা/সাজ্জাদ/এসবি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মনটা বাড়িতে পড়ে থাকলেও তাঁদের ঈদ কাটে বনে-বাদাড়ে
সারা দেশ যখন ঈদের আনন্দে ভাসছে, সবাই পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদ্যাপন করছেন, তখনো দায়িত্বের ডোরে বাঁধা একদল মানুষ। তাঁরা পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগ করে নিতে পারেন না, বাড়ির সবার সঙ্গে বসে ঈদের সেমাই খাওয়ারও সুযোগ হয় না। এমন মানুষের দলে আছেন সুন্দরবন রক্ষায় নিয়োজিত বন বিভাগের কর্মীরা। সুন্দরবনকে ভালো রাখতে তাঁরা নীরবে নিজেদের ঈদ উৎসর্গ করেন।
সুন্দরবনের বজবজা টহল ফাঁড়ির বনকর্মী মো. মফিজুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, ‘ভাই, মনটা পড়ে আছে পরিবারের লোকজনের কাছে আর দেহটা সুন্দরবনে। সবার ঈদ কাটে পরিবারে, আমাদের কাটে বনে-বাদাড়ে। আসলে চাকরির জন্য সবকিছু মেনে নিতে হয়। আজ ঈদের দিনেও টহল করছি। আমরা স্টাফরা মিলে একটি মুরগি জবাই করেছি। আর একটু সেমাই রান্না করে নিজেদের মতো করে ঈদ উদ্যাপন করছি।’
বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, প্রতিবছর ঈদের সময় চোরা শিকারি চক্র সুন্দরবনে হরিণসহ বন্য প্রাণী শিকারের অপতৎপরতা চালায়। তাই ঈদের সময় সুন্দরবনে বন বিভাগে কর্মরত সব কর্মকর্তা ও বনরক্ষীর ছুটি সীমিত করে কর্মস্থলে থেকে সার্বক্ষণিক টহলের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সোমবার ঈদের দিন সকালে সুন্দরবনের বিভিন্ন ফরেস্ট স্টেশন ও টহল ফাঁড়ির কয়েকজন কর্মকর্তা ও বনরক্ষীর সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা বলেন, তাঁদের ঈদ হচ্ছে সুন্দরবনের সুরক্ষা নিশ্চিত করা। তা ছাড়া সবাই একসঙ্গে ছুটিতে গেলে বনে নজরদারি করবে কে? পরিবারের সঙ্গে না থাকতে পারলেও বনের নিরাপত্তায় কাজ করছেন, এটাই তাঁদের জন্য বড় পাওয়া।
পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য গহিন সুন্দরবনের নীলকমল এলাকায় আছেন ফরেস্ট কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম। লোকালয় থেকে সেখানে পৌঁছাতে নৌযানে সাত থেকে আট ঘণ্টা লাগে। আটজন সহকর্মী নিয়ে সেখানেই ঈদ উদ্যাপন করছেন তিনি। বলেন, ‘আমার বাড়ি জামালপুরে। মা-বাবাসহ পরিবার সেখানেই থাকেন। আমার জঙ্গলে চাকরির গত পাঁচ বছরের অধিকাংশ ঈদ পরিবার ছাড়া জঙ্গলেই কেটেছে।’
ফরেস্ট কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, ঈদের সময়ে সুন্দরবনে অপরাধীদের তৎপরতা বেড়ে যায়। এ কারণে ঈদের সময়টায় যাতে কেউ সুন্দরবনের ক্ষতি করতে না পারে, সে জন্য সারাক্ষণ টহলে থাকতে হয়। গতকাল রোববার সারা রাত টহল দিয়েছেন। সুন্দরবনের গহিনে হলেও এখানে মুঠোফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান টেলিটকের নেটওয়ার্ক আছে। এ জন্য আপনার সঙ্গে কথা বলতে পারছি। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও কথা বলেছি।’
সুন্দরবনের শাকবাড়িয়া টহল ফাঁড়ির বনকর্মী মো. জুয়েল রানা বলেন, আজ পরিবার-প্রিয়জন নিয়ে সবাই যখন ঈদ আনন্দ উপভোগ করছেন, ঠিক তখন পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে তাঁরা নির্জন বনে অবস্থান করছেন। জঙ্গলের মধ্যে বসে সেমাই খেয়েছেন। এখন আবার টহলে বের হতে হবে। পরিবার ছাড়া ঈদ করা খুবই কষ্টের। তবে মানিয়ে নিতে হয়। পরিবারের সদস্যরাও এখন বিষয়টি মেনে নিয়েছেন।
জুয়েল রানা আরও বলেন, ‘দুর্গম ও ভয়ংকর বনাঞ্চলে আমাদের সব সময় জীবন বাজি রেখে দায়িত্ব পালন করতে হয়। তবে বেতন ছাড়া অন্য তেমন কোনো সুযোগ-সুবিধা নেই বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। রেশন–সুবিধাও পাই না আমরা।’
সুন্দরবনের কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশনের দায়িত্বরত কর্মকর্তা মো. আল-আমীন বলেন, তাঁর স্টেশনটি লোকালয়ের কাছাকাছি হওয়ায় ঈদের নামাজ পড়তে পেরেছেন। গহিন সুন্দরবনের মধ্যে পাতকোষ্টা, কাগাদোবেকি, গেওয়াখালী, আদাচাই, ভদ্রা, পাশাখালীসহ তাঁদের অনেক টহল ফাঁড়ি আছে। সেখানে মুঠোফোনের নেটওয়ার্কও নেই। ওই সব জায়গায় যাঁরা দায়িত্বে আছেন, তাঁরা ঈদের নামাজও পড়তে পারেন না। ঈদের কয়েক দিন আগে লোকালয়ে এসে খাবার পানি আর বাজারসদাই নিয়ে যান। পরিবার ছাড়া বনে-বাদাড়ে বসেই হয়তো তাঁরা আজ নিজেরাই সেমাই রান্না করে খাচ্ছেন।
সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এ জেড এম হাছানুর রহমান বলেন, ঈদের ছুটিতে সুন্দরবনের বনরক্ষীদের অধিকাংশই বাড়িতে চলে গেলে সুন্দরবনের অধিকাংশ এলাকা অরক্ষিত হয়ে পড়ে। ফলে হরিণশিকারিরা ঈদের ছুটির কয়েকটা দিনকে নিরাপদ সময় মনে করছে। এ জন্য এবার ঈদে সুন্দরবনে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। বনরক্ষীদের ছুটি সীমিত করা হয়েছে। বিশেষ জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে ছুটি দেওয়া হয়নি। অন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পরিবারের সঙ্গে ঈদ কাটানোর সুযোগ পেলেও বন বিভাগের অধিকাংশ কর্মী বনজ সম্পদ রক্ষার তাগিদে বনের গহিনে নির্জনে পরিবারবিহীন ঈদ করছেন।