ফরিদপুরে যুবক হত্যার ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তার ১
Published: 12th, January 2025 GMT
ফরিদপুর সদর উপজেলায় ওবায়দুর রহমান খান (৩২) নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় কানাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেনসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আজ রোববার সকালে ওবায়দুরের মা রেখা বেগম বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলাটি করেন।
মামলার পর এজাহারভুক্ত এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নিহত ওবায়দুর রহমান খান কানাইপুর ইউনিয়নের ঝাউখোলা গ্রামের বিল্লাল খানের ছেলে। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ১০ থেকে ১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) শৈলেন চাকমা বলেন, হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি রেজাউল করিম খানকে (৩৫) রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার নলিয়া বাজার থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এর আগে গত শুক্রবার বিকেলে কানাইপুর পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়ের সামনে মমতাজ ফিলিং স্টেশনে তেল নিতে যান ওবায়দুর। তখন স্থানীয় খায়রুজ্জামানের লোকজন তাঁকে অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলে করে অজ্ঞাত জায়গায় তুলে নিয়ে নির্যাতন করে মুমূর্ষু অবস্থায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখান থেকে ঢাকা নেওয়ার পথে রাত সাড়ে আটটার দিকে তিনি মারা যান। এ ঘটনার প্রতিবাদে ও জড়িত ব্যক্তিদের বিচার দাবিতে লাশ নিয়ে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন এলাকাবাসী। পরে পুলিশের আশ্বাসে বিকেল চারটার দিকে তাঁরা মহাসড়ক ছেড়ে দেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
হিজরতের ৫টি শিক্ষা
সাহাবিদের হিজরতের ঘটনাবলি কেবল ইতিহাসের অংশ নয়, বরং তা মুমিন জীবনের জন্য পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান। তাদের হিজরতের ঘটনা ও ত্যাগের আদর্শ থেকে কয়েকটি মৌলিক শিক্ষা উঠে আসে:
১. হিজরত প্রথমত আল্লাহর আদেশ পালনহিজরত কেবল কৌশলগত পরিকল্পনা ছিল না, বরং ছিল আল্লাহর পক্ষ থেকে আসা এক ইবাদতমূলক নির্দেশ। এই কারণে সাহাবিরা সবচেয়ে প্রিয় বস্তু—ঘরবাড়ি, সম্পদ, আত্মীয়স্বজন—সহজে ত্যাগ করতে পেরেছিলেন। (মুহাম্মদ সাইদ রমাদান আল-বুতি, ফিকহুস সিরাহ, পৃষ্ঠা: ১৫৬, দারুল ফিকর, দামেস্ক, ২০০৪)
২. ইমানের জন্য সর্বোচ্চ আত্মত্যাগহিজরত শেখায় যে একটি জাতির ভিত্তি স্থাপন এবং সত্য প্রতিষ্ঠা করার জন্য চরম মূল্য দিতে হয়। সুহাইব তাঁর সব সম্পদ, আবু সালামা তাঁর পরিবার এবং বনু জাহশ (রা.) জন্মভূমি ত্যাগ করে এই মূল্য পরিশোধ করেছিলেন। এই ত্যাগ বিনা মূল্যে অর্জিত হয়নি।
আরও পড়ুনমদিনায় হিজরত: ইসলামের ৬টি মাইলফলক০২ জুলাই ২০২৫৩. ইমানের সম্পর্ক অন্য সব সম্পর্ক থেকে ঊর্ধ্বেওমর (রা.) আইয়াশকে যখন তার মায়ের দোহাইয়ের ফিতনা থেকে সতর্ক করেছিলেন, তা প্রমাণ করে যে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি আনুগত্যের বন্ধন অন্য সব জাগতিক সম্পর্ক (গোত্র, পরিবার, রক্ত) থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী।
৪. ঐকান্তিক প্রচেষ্টার সঙ্গে আল্লাহর ওপর ভরসাহিজরত মোটেই বিশৃঙ্খল ছিল না। ওমর (রা.)-এর পরিকল্পনা, কাফেলাবদ্ধ হয়ে যাত্রা এবং কৌশল অবলম্বন—সবই প্রমাণ করে যে আল্লাহর ওপর নির্ভরতার পাশাপাশি মানবীয় প্রচেষ্টা ও সুচিন্তিত পরিকল্পনা গ্রহণ করাও আবশ্যক।
আরও পড়ুনমহানবী (সা.)–র হিজরত মদিনায় হলো যে কারণে২৯ জুন ২০২৫৫. আল্লাহর দয়ার বিশালতাএই ঘটনা আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে ফিতনা ও দুর্বলতা মানুষের জীবনে আসতে পারে। কিন্তু যখন তারা মক্কায় বন্দী হয়ে নিজেদের পাপী মনে করছিলেন, তখন আল্লাহ তাআলা এই আয়াতটি নাজিল করে আশার দরজা খুলে দেন, ‘বলো, “হে আমার বান্দাগণ, যারা নিজেদের ওপর বাড়াবাড়ি করেছ (পাপ করেছ), তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সব গুনাহ মাফ করে দেন।”’ (সুরা জুমার, আয়াত: ৫৩)
এই আয়াতটি ছিল তাঁদের জন্য এক ঐশী ক্ষমা ও নতুন সুযোগের বার্তা।
হিজরত কেবল একটি ঐতিহাসিক ঘটনা নয়; এটি একটি অক্ষয়–দর্শন—যেখানে ইমান, ধৈর্য এবং আত্মত্যাগের সমন্বয়ে একটি আদর্শ সমাজ গঠনের বীজ নিহিত ছিল। এই দর্শনই মুসলমানদের নতুন এক দিগন্তে পৌঁছে দেয়।
আরও পড়ুনআবিসিনিয়ায় নারী সাহাবিদের দ্বিতীয় হিজরত১৪ নভেম্বর ২০২৫