কুষ্টিয়ার মিরপুরে একটি বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হওয়াকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।  

রবিবার (১২ জানুয়ারি) বিকেলে উপজেলার আমলা ইউনিয়নের বুড়াপাড়া-মিটন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি হওয়াকে কেন্দ্র করে দুই দলের নেতাকর্মীরা সংঘর্ষে জড়ান। 

এলাকাবাসী জানান, বুড়াপাড়া-মিটন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হওয়ার জন্য ইউনিয়ন জামায়াতের আমির ও স্থানীয় বিএনপির নেতা তাদের নাম বিদ্যালয়ে জমা দেন। এরপর থেকেই এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছিল। আজ বিকেলে দুই দলের নেতাকর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে অন্তত ৩০ জন আহত হন। তারা মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

আরো পড়ুন:

ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন কলেজে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ

মুকসুদপুরে সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপির ২ পক্ষের মামলা, সংবাদ সম্মেলন

নাম প্রকাশে অনিচ্ছিুক স্থানীয় জামায়াতের এক নেতা বলেন, “ইউনিয়ন জামায়াতের আমির নাসিম রেজা মুকুল সভাপতি হওয়ার জন্য বিদ্যালয়ে তার নাম জমা দেন। স্থানীয় বিএনপি নেতা রাশেদ মাহমুদ নাসির তার নাম (জামায়াত নেতা) তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। আজ বিকেলে জামায়াতের পক্ষ থেকে স্থানীয় বিএনপির সঙ্গে মীমাংসার জন্য একটি সভার আয়োজন করা হয়েছিল। সভায় পরিকল্পিতভাবে বিএনপি নেতা রাশেদ মাহমুদ নাসিরের নেতৃত্বে হামলা হয়। এতে জামায়াতের অন্তত ৩০ থেকে ৩৫ জন নেতাকর্মী আহত হন।”

জামায়াতের কুষ্টিয়া জেলা আমির অধ্যাপক মাওলানা আবুল হাশেম বলেন, “বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট সমস্যা সমাধানের জন্য জামায়াতের নেতারা প্রশাসনের শরণাপন্ন হন। স্থানীয় বিএনপি নেতারা সমস্যা সমাধানের আশ্বাসও দেন। তবে সমস্যার সমাধান হয়নি। বিএনপির নেতারা আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে তাদের আহত করেছে। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অবিলম্বে দোষীদের আটক করে আইনের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”

এ বিষয়ে জানতে উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব রহমত আলী রব্বানকে তার ব্যবহৃত মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

মিরপুর থানার ওসি মমিনুল ইসলাম বলেন, “মিরপুরে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হাওয়াকে কেন্দ্র করে জামায়াত ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। কয়েকজন আহত হয়েছেন। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। পরবর্তীতে যে কোনো ধরনের সহিংসতা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।”

ঢাকা/কাঞ্চন/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

এছাড়াও পড়ুন:

এবার ১২ হাজার শিক্ষার্থীকে ইফতার করালো রাবি প্রশাসন

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) অধ্যায়নরত ১২ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য ইফতারের আয়োজন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

সোমবার (৩ মার্চ) দ্বিতীয় রোজায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে এ আয়োজন করা হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, আসরের নামাজের পর থেকেই শিক্ষার্থীরা দলে দলে কেন্দ্রীয় মসজিদে আসতে শুরু করেন। এ সময় মসজিদের ভেতরে এবং মসজিদ সংলগ্ন বাগানে তারা ইফতারির জন্য সারিবদ্ধভাবে বসেন। এ ছাড়াও নারীদের জন্য মসজিদের বাগানে আলাদাভাবে ইফতারির ব্যবস্থা করা হয়। এতে মসজিদ প্রাঙ্গণে তৈরি হয় এক উৎসবমুখর পরিবেশ।

আরো পড়ুন:

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গণইফতার আয়োজন করে অভিনব প্রতিবাদ

রাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা, ভোটগ্রহণ জুনে

ইফতারে অংশগ্রহণ করতে আসা ইনফরমেশন সাইন্স অ্যান্ড লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. রোকনুজ্জামান বলেন, “আজকের আয়োজন অনেক ভালো ছিল। এখানে সবার সঙ্গে ইফতার করতে এসে খুবই ভালো লাগছে। একটা উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিটা দিন মনে হচ্ছে ঈদের মতো। প্রশাসনের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।”

আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী নয়ন আহমেদ বলেন, “গতকালের তুলনায় আজকের আয়োজন অনেক ভালো। কাল সব এলোমেলো ছিল। কিন্তু আজকের আয়োজন গোছালো হয়েছে। এত মানুষের সঙ্গে আগে কখনো ইফতার করিনি। অন্যরকম একটা ভালো লাগা কাজ করছে। মনে হচ্ছে এখানে মেলা চলছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই এত সুন্দর আয়োজন করার জন্য।”

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ইফতারে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দিন খান (প্রশাসন), উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মোহা. ফরিদ উদ্দিন খান (শিক্ষা), রেজিস্ট্রার ইফতেখারুল আলম মাসউদ, জনসংযোগ প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার প্রমখ।

সার্বিক বিষয়ে জনসংযোগ প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার বলেন, “আমরা আজ প্রায় সাড়ে ১১ হাজার থেকে ১২ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য ইফতার আয়োজন করেছি। যা গতকালের তুলনায় তিনগুণ। আমরা আশা করছি আজ সব ঠিকঠাক মতো হবে। এজন্য সবার সাহায্য প্রয়োজন, যাতে কোন উশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি না হয়।”

প্রথমবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে মাসব্যাপী ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। রোজার প্রথমদিন রবিবার (২ মার্চ) ৪ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য ইফতারের আয়োজন করা হয়। কিন্তু আয়োজনের তুলনায় অধিক রোজাদার উপস্থিত হওয়ায় ইফতারে সঙ্কট দেখা দিলে শিক্ষার্থীদের ভাগাভাগি করে নিতে দেখা গেছে।

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ