সার-বীজ বিক্রির সময় কৃষি কর্মকর্তা হাতেনাতে ধরা
Published: 12th, January 2025 GMT
কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলায় সরকারি প্রণোদনার আওতায় কৃষকের মাঝে বিতরণের ৫ প্যাকেট সবজি বীজ ও ১২০ কেজি সার কীটনাশকের দোকানে বিক্রির সময় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে স্থানীয় জনগণ হাতেনাতে আটক করেছে।
রবিবার (১২ জানুয়ারি) দুপুরে দেড়টার দিকে উপজেলার রমনা মডেল ইউনিয়নের জোড়গাছ বাজারের মেসার্স ইকবাল ট্রেডার্স নামে কীটনাশকের দোকান থেকে সার ও সবজি বীজ জব্দ করা হয়।
অভিযুক্ত ওই কর্মকর্তার নাম আতোয়ার রহমান। তিনি রমনা মডেল ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার দায়িত্বে রয়েছেন। এর আগে সকালে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে প্রণোদনার বীজ ও সার বিতরণ করা হয়।
আরো পড়ুন:
কচু লতিতে ভাগ্য ফিরলো বরুড়াবাসীর
শীতকালীন সবজিতে ধামরাইয়ের কৃষকদের মুখে হাসি
এ দিন দুপুরে প্রণোদনের পুষ্টি বাগানের সবজির বীজ ও সার অফিস থেকে তুলে জোড়গাছ বাজারের কীটনাশকের দোকানে নিয়ে আসেন আতোয়ার রহমান। পরে আশপাশের লোকজন বিষয়টি বুঝতে পেরে সার ও বীজসহ তাকে আটক করে। আটকের পর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবগত করলে তিনি ঘটনাস্থলে আসেন।
সরেজমিন দেখা যায়, কীটনাশকের দোকানের ভিতরে পুষ্টি বাগানের জন্য ৫ প্যাকেট সবজির বীজ ও পাঁচ বস্তা (২৪ কেজির বস্তা) সার দেখতে পাওয়া যায়। এ সময় স্থানীয়রাও উপস্থিতি ছিলেন।
স্থানীয় জানান, দুপুর দেড়টার দিকে কৃষি অফিস থেকে অটোতে করে সার ও বীজ বিক্রি করার জন্য দোকানে নিয়ে আসা হয়। তখন কৃষকের সার কীভাবে দোকানে বিক্রি হয়, তা জানতে চান স্থানীয় কৃষকরা। তারা তদন্ত করে ওই কর্মকর্তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানান।
দোকান মালিক ফারুক ইসলাম বলেন, ‘‘আমার সারের দোকানে আতোয়ার রহমান অটোতে করে সার এবং বীজ নিয়ে আসেন।’’ বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে এনেছেন কি-না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘যেহেতু দোকানে নিয়ে এসেছেন, তাহলে অবশ্যই বিক্রির জন্য।’’
অভিযুক্ত কর্মকর্তা আতোয়ার রহমান বলেন, পুষ্টি বাগানের বীজ ও সার কৃষকেরা তুলে এনে দোকানে রেখেছেন। তারা আগামীকাল নিয়ে যাবে। সার বিক্রির প্রশ্নে তিনি সদুত্তর দিতে পারেননি।
চিলমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কুমার প্রণয় বিষণ দাস বলেন, ‘‘খবর শোনার পর আমি এখানে এসেছি। এ সার এবং বীজ কেন এখানে এবং কীভাবে এসেছে, সেটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
পরে তিনি সার ও বীজ জব্দ করে নিয়ে যান।
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সাতক্ষীরায় সাংবাদিককে সাজা দেওয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন
সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় কালের কণ্ঠ পত্রিকার সাংবাদিক টিপু সুলতানকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ‘অন্যায়ভাবে’ সাজা দেওয়া হয়েছে অভিযোগ করে এর প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন জেলার সাংবাদিকেরা। আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে সাতক্ষীরার সাংবাদিক সমাজের ব্যানারে এ মানববন্ধন হয়।
ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি মো. আবুল কাশেমের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন মানবাধিকারকর্মী মাধব দত্ত, চ্যানেল আইয়ের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি আবুল কালাম আজাদ, সময় টিভির প্রতিনিধি মমতাজ আহমেদ, আরটিভির প্রতিনিধি রামকৃষ্ণ চক্রবর্তী, বাসসের প্রতিনিধি আসাদুজ্জামান, দেশ টিভির প্রতিনিধি শরিফুল্লাহ কায়সার, ডিবিসি টেলিভিশনের প্রতিনিধি বেলাল হোসেন, দীপ্ত টিভির প্রতিনিধি রঘুনাথ খাঁ, মানবজমিনের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি এস এম বিপ্লব হোসেন। সভাপতিত্ব করেন প্রথম আলোর সাতক্ষীরার নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ ব্যানার্জি।
বক্তারা বলেন, সরকারি নির্মাণকাজের অনিয়মের অনুসন্ধান করতে গিয়ে কালের কণ্ঠ পত্রিকার তালা উপজেলা প্রতিনিধি টিপু সুলতানকে উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী এম এম মামুন আলম ছাতা দিয়ে মারধর করেন। বিষয়টি টিপু তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ রাসেলের কাছে অভিযোগ করেন। অভিযোগ শুনে ইউএনও ঘটনাস্থলে গিয়ে একতরফাভাবে তাঁদের নিজস্ব লোকজনের সাক্ষী নিয়ে সাংবাদিক টিপুকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ১০ দিনের দণ্ডাদেশ দেন। অথচ উপসহকারী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
আরও পড়ুনতালায় প্রকৌশলীকে মারধরের অভিযোগে সাংবাদিককে দণ্ড, প্রতিবাদ২১ ঘণ্টা আগেবক্তারা বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালত সাজা দিতে গেলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও সংশ্লিষ্ট নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে অপরাধ সংঘটিত হতে হবে। অথচ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও নির্বাহী কর্মকর্তা সেখানে ছিলেন না। তিনি সাংবাদিক টিপুর অভিযোগ শুনে সেখানে গিয়ে একতরফাভাবে সাজা প্রদান করেছেন। ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বক্তারা আরও বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে টিপুকে দেওয়া সাজা ও অভিযোগ প্রত্যাহার করতে হবে। পাশাপাশি নির্বাহী কর্মকর্তা স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থী কাজ করে সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ করার অপচেষ্টায় নেমেছেন। ওই নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপসহকারী প্রকৌশলীকে প্রত্যাহার করে ঘটনার তদন্ত করার দাবি জানানো হয়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে টিপুর বিরুদ্ধে দেওয়া সাজা ও অভিযোগ প্রত্যাহার করা না হলে আগামীকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।