দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে নিরীক্ষাকাজে এসে অডিটরদের ঘুষ লেনেদেনের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ার কথা জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। শিক্ষা বোর্ডে অভিযান শেষে আজ রোববার বিকেলে উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদের এই তথ্য জানিয়েছেন দুদক দিনাজপুর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ইসমাইল হোসেন।

এর আগে রোববার বেলা ১১টায় দুদকের একটি প্রতিনিধিদল শিক্ষা বোর্ডে যায়। বিকেল চারটা পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করে। দুদকের সহকারী পরিচালক ইসমাইল হোসেন ছাড়াও এ সময় উপস্থিত ছিলেন সহকারী পরিচালক খায়রুল বাশার ও উপসহকারী পরিচালক আলম মিয়া।

আরও পড়ুন৩ শিক্ষা বোর্ডে অডিটে গিয়ে ৩৯ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ, জমা হয় স্বজনের হিসাবে০৯ জানুয়ারি ২০২৫

গত বছরের ১৫ অক্টোবর থেকে ৩১ ডিসেম্বর শিক্ষা অডিট অধিদপ্তরের একটি প্রতিনিধিদল ৫টি শিক্ষা বোর্ডে নিরীক্ষা কার্যক্রম করে। এর মধ্যে ১৪ নভেম্বর থেকে ২৮ নভেম্বর নিরীক্ষা কার্যক্রম করে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে। এই বোর্ডে নিরীক্ষা চলাকালে নানা অনিয়ম ঢাকতে অডিট দলকে সাড়ে ২১ লাখ টাকা ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। সেই সূত্র ধরে খোঁজ নিতে গিয়ে ময়মনসিংহ ও রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডেও ১৮ লাখ টাকা ঘুষ গ্রহণসহ মোট ৩৯ লাখ টাকা ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ পাওয়া যায় ওই অডিট দলের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে গত ৯ জানুয়ারি প্রথম আলোর ৩ এর পৃষ্ঠায় ‘৩৯ লাখ টাকা ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

দুদকের সহকারী পরিচালক ইসমাইল হোসেন বলেন, পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর দুদক থেকে আদেশ পেয়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। ব্যাংকিং চ্যানেলে নিরীক্ষা দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বোর্ড কর্তৃপক্ষের ঘুষ লেনদেনের অভিযোগটির প্রাথমিক সত্যতা নিশ্চিত হওয়া গেছে। ক্রয়–সংক্রান্ত বিষয়, সম্মানী নিয়ে অনিয়মসহ আরও কিছু বিষয়ে অধিকতর তদন্তের স্বার্থে কিছু নথিপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানের পরে কয়েকজন কর্মচারী প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত আছেন। সেসব বিষয়েও কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। নয়জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। নথিপত্র পর্যালোচনা করে যত দ্রুত সম্ভব কমিশনে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। কমিশন পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ইতালির কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে দুইজনকে গুলি করে হত্যা

ইতালির কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে ফরিদপুরের দুই যুবককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এমনকি হত্যার পর পরিবারের সদস্যদের হোয়াটসঅ্যাপে তাদের ছবি পাঠানো হয়। 

নিহত দুই যুবক হলেন- ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের কুমারখালী গ্রামের মিন্টু হাওলাদারের ছেলে হৃদয় হাওলাদার (২৪) ও মজিবর হাওলাদারের ছেলে রাসেল হাওলাদার (২৬)। 
 
হৃদয়ের বাবা মিন্টু হাওলাদার বলেন, দু’মাস আগে স্থানীয় আবু তারা মাতুব্বর, আলমাছ ও আনোয়ারের মাধ্যমে ১৬ লাখ টাকা দিয়ে ছেলেকে বিদেশ পাঠাই। ছেলেকে প্রথমে দুবাই সেখান থেকে সৌদি আরব তারপর লিবিয়া নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে হৃদয়কে হত্যা করা হয়েছে।

হৃদয়ের বড় ভাই মোখলেছুর রহমান বলেন, ৪/৫ দিন ধরে হৃদয়ের কোন খোঁজ পাচ্ছিলাম না। দালালরা শুক্রবার দুপুরে আমার ভাইয়ের লাশের ছবি পাঠিয়েছে। ১৬ লাখ টাকা দেওয়ার পরও বিদেশ থেকে ফোন করে আরও টাকা দাবি করছিল পাচারচক্র। টাকা না দেওয়ায় ওরা আমার ভাইকে খুন করেছে। 

একই গ্রামের ফয়সাল হোসেন বলেন, রাসেল নামের আরও একজনকেও লিবিয়াতে হত্যা করা হয়েছে। ওরা একই গ্রামের বাসিন্দা। ওই মানবপাচার চক্র এভাবে মানুষকে জিম্মি করে টাকা আদায় করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছে। টাকা না দিলেই তাদের সাথে খারাপ কিছু ঘটানো হয়। কখনও নির্যাতন করে আবার কখনও হত্যা করে।

ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানার ওসি মো. মোকসেদুর রহমান বলেন, ভাঙ্গার দুটি ছেলেকে লিবিয়ায় গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে শুনেছি। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় এখনও লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়নি। ওই পরিবারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করছি। তাদের সঙ্গে  আলোচনা করে দালালচক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ