জুলাই বিপ্লব কেবল একটি আন্দোলন ছিল না, এটি বৈষম্যের বিরুদ্ধে গণজাগরণ। দেশকে ভালোবেসে ধর্ম, বর্ণ, দল নির্বিশেষে এই সংগ্রাম সমাজে একটি নতুন আশার সৃষ্টি করেছে। এর মাধ্যমে জনগণের মাঝে সাহস ও দৃঢ়তা বেড়েছে। চব্বিশের অর্জিত এই সফলতা পঁচিশ সালজুড়ে স্মরণ করতে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ক্যালেন্ডারের/বর্ষ পঞ্জিকার প্রতিটি পাতায় স্থান পেয়েছে ৩৬ শে জুলাইয়ের বিভিন্ন সময়ের ছবি।
বর্ষ পঞ্জিকার শুরুর পাতায় তুলে ধরা হয়েছে জুলাই বিপ্লবের শুরুর সংগ্রাম এবং শেষ করা হয়েছে স্বাধীনতার সূর্যোদয়ের চিত্র দিয়ে। সেখানে আছে শিক্ষার্থীদের ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের চিত্র, প্রতিবাদী চেতনার উন্মোচন, সারাদেশের দেয়াল অঙ্কন থেকে কিছু সেরা চিত্র স্থান পেয়েছে বর্ষ পঞ্জিকায়। আরও আছে নারী শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ। বুক ভরা সাহস ও প্রাণ ভরা দেশপ্রেম নিয়ে
চলেছে সংগ্রামের ৩৬ দিন। পাড়া-মহল্লা থেকে শুরু করে দেশের গুরুত্বপূর্ণ সড়কে চলেছে শিক্ষার্থীদের সংগ্রাম। বিভিন্ন মিডিয়াতে প্রচারিত হয়েছে সেই সংগ্রামের চিত্রগুলো। ঢাকার মেট্রোরেল, ফ্লাইওভার, ব্রিজ ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দেয়ালে গ্রাফিতি করেছিল শিক্ষার্থীরা। বর্ষ পঞ্জিকায় মে মাসে/ বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠের পাতায় রয়েছে শহীদ মুগ্ধর গ্রাফিতির চিত্র যেখানে লেখা ‘পানি
লাগবে কারো? পানি, পানি, পানি’। পরের পাতায় রয়েছে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার চিত্র। সঙ্গেই রয়েছে পুলিশের গাড়িতে শিক্ষার্থীর লাশ ঝুলানোর চিত্র।
জুলাই মাসের পাতায় রয়েছে রিকশায় করে শিক্ষার্থীর লাশ নেওয়ার চিত্র। বিপরীতে রয়েছে শরীরে শিহরণ জাগানো শহীদ আবু সাঈদের সেই ‘বুকের ভেতর অনেক ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর’ ভঙ্গিমার গ্রাফিতি। আগস্টের পাতায় রয়েছে ৫ আগস্টের সেরা ছবিটি। ২৪ শের স্বাধীনতার অর্জনে সেদিন বেরিয়ে এসেছিল ছাত্র-জনতা এবং পেশাজীবীরা।
জনসংযোগ ও প্রকাশনা দপ্তরের পরিচালক মোহাম্মদ তৌফিকুল ইসলাম জানান, ২০২৪ এর জুলাই বিপ্লব বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য ও স্মরণীয় অধ্যায়। এই বিপ্লবে শিক্ষার্থীরা প্রমাণ করেছে যে ঐক্য ও সাহসিক সংগ্রাম দিয়ে পুরো দেশকে বদলে দেওয়া সম্ভব। অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতো বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ ময়মনসিংহের ছাত্র-জনতা এবং পেশাজীবীরা এই আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। লাখো শহীদের 
ত্যাগ ও বীরত্বগাথা এক ফ্রেমে তুলে ধরা কখনোই সম্ভব নয়। তবুও, আমরা চেষ্টা করেছি জুলাই বিপ্লবের স্মরণীয় ঘটনাগুলোকে একটি ক্যালেন্ডারের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলতে, যাতে পুরো  বছরজুড়ে জুলাই বিপ্লব মানুষের স্মৃতিতে গেঁথে থাকে। 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ইতালির কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে দুইজনকে গুলি করে হত্যা

ইতালির কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে ফরিদপুরের দুই যুবককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এমনকি হত্যার পর পরিবারের সদস্যদের হোয়াটসঅ্যাপে তাদের ছবি পাঠানো হয়। 

নিহত দুই যুবক হলেন- ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের কুমারখালী গ্রামের মিন্টু হাওলাদারের ছেলে হৃদয় হাওলাদার (২৪) ও মজিবর হাওলাদারের ছেলে রাসেল হাওলাদার (২৬)। 
 
হৃদয়ের বাবা মিন্টু হাওলাদার বলেন, দু’মাস আগে স্থানীয় আবু তারা মাতুব্বর, আলমাছ ও আনোয়ারের মাধ্যমে ১৬ লাখ টাকা দিয়ে ছেলেকে বিদেশ পাঠাই। ছেলেকে প্রথমে দুবাই সেখান থেকে সৌদি আরব তারপর লিবিয়া নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে হৃদয়কে হত্যা করা হয়েছে।

হৃদয়ের বড় ভাই মোখলেছুর রহমান বলেন, ৪/৫ দিন ধরে হৃদয়ের কোন খোঁজ পাচ্ছিলাম না। দালালরা শুক্রবার দুপুরে আমার ভাইয়ের লাশের ছবি পাঠিয়েছে। ১৬ লাখ টাকা দেওয়ার পরও বিদেশ থেকে ফোন করে আরও টাকা দাবি করছিল পাচারচক্র। টাকা না দেওয়ায় ওরা আমার ভাইকে খুন করেছে। 

একই গ্রামের ফয়সাল হোসেন বলেন, রাসেল নামের আরও একজনকেও লিবিয়াতে হত্যা করা হয়েছে। ওরা একই গ্রামের বাসিন্দা। ওই মানবপাচার চক্র এভাবে মানুষকে জিম্মি করে টাকা আদায় করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছে। টাকা না দিলেই তাদের সাথে খারাপ কিছু ঘটানো হয়। কখনও নির্যাতন করে আবার কখনও হত্যা করে।

ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানার ওসি মো. মোকসেদুর রহমান বলেন, ভাঙ্গার দুটি ছেলেকে লিবিয়ায় গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে শুনেছি। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় এখনও লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়নি। ওই পরিবারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করছি। তাদের সঙ্গে  আলোচনা করে দালালচক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ