শুল্ক-কর বাড়লেও দেশের মানুষের ওপর প্রভাব পড়বে না: প্রেস সচিব
Published: 12th, January 2025 GMT
শতাধিক পণ্যে শুল্ক–কর (ভ্যাট–ট্যাক্স) বাড়ানো হলেও দেশের মানুষের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না বলে মনে করছে সরকার। বরং বাংলাদেশের অর্থনীতির স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটানোর জন্যই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর ফলে দেশের অর্থনীতির স্বাস্থ্যটা ভালো হবে। দেশের মানুষেরই উন্নয়ন হবে। এ ক্ষেত্রে সরকারের অজনপ্রিয় হওয়ার কোনো কারণ নেই।
রোববার রাজধানীর ফরেন একাডেমিতে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
তিনি বলেন, বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে ট্যাক্স আদায় সবচেয়ে কম। সরকার চায় ট্যাক্স–জিডিপি এমন জায়গায় থাক, যাতে বাংলাদেশের অর্থনীতির উন্নয়ন ঘটে। তাহলে সামনে দেশের মানুষেরও উন্নয়ন হবে। ম্যাক্রো ইকোনমি বাড়ানোর জন্য ট্যাক্স বাড়াতে হবে। এ ক্ষেত্রে আইএমএফের চাহিদার সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। বাংলাদেশেও তো ভালো অর্থনীতিবিদ আছেন। তাদের পরামর্শেই এটা করা হয়েছে। এটা করা না হলে ডলারের দাম ১২৫ টাকা থেকে বেড়ে ১৯০ টাকা হয়ে যাবে। বিদেশি বিনিয়োগ আসবে না। কারণ বিদেশি বিনিয়োগকারীরা দেখেন দেশের ট্যাক্স আদায়ের পরিমাণ কেমন। অর্থনৈতিক স্বাস্থ্যটা কতটা মজবুত। এ ক্ষেত্রে গণমাধ্যমেরও উচিত বিষয়টি নিয়ে জনগণকে বোঝানো।
শফিকুল আলম বলেন, খরচ কীভাবে কমানো যায়, সরকার সে জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে। আগের প্রধানমন্ত্রী তিনশ’ লোক নিয়ে বিদেশে যেতেন। এখন প্রধান উপদেষ্টার বহরে ৫০ জন যাচ্ছেন। তারও একটি বড় অংশ থাকছে নিরাপত্তার জন্য। আগে দেখা গেছে- একজন মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর জন্য কর্নফুলী টানেল করা হয়েছে। টানেল থেকে নেমে তার বিশ্রাম নেওয়ার জন্য সাড়ে চারশ’ কোটি টাকা খরচ করে সেভেন স্টার হোটেল বানানো হয়েছে।
পাচার করা অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে প্রেস সচিব বলেন, সেগুলো ফেরত আনার চেষ্টা চলছে। গতকালও পূর্বাচলের একটি প্লট নিয়ে দুদকের মামলা হয়েছে। এগুলো সরকারের কোষাগারে আনা যায় কিনা সেই চেষ্টা চলছে।
গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেখতে হবে বাজারে সরবরাহ চাহিদা মতো আছে কিনা। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যটা ভালো থাকলে মূল্যস্ফীতিও কমিয়ে আনা যাবে। যারা ভ্যাট–ট্যাক্সের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন তারা অনেক বুঝেই দিয়েছেন। মানুষের ভালোর জন্যই এটা করা হয়েছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
লোহাগাড়ায় দুর্ঘটনা: আহত তিনজনের অবস্থা গুরুতর
দুর্ঘটনায় প্রাণে বাঁচলেও ঝুঁকিমুক্ত নন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত তিনজনের কেউই। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আহতদের মধ্যে একজন শিশুও রয়েছে। বাকি দুইজনের মধ্যে একজন যুবক ও একজন তরুণী।
বুধবার চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে গুরুতর আঘাত পান তারা। ঘটনার পর উদ্ধার করে মুমূর্ষু অবস্থায় চমেক হাসপাতালে আনা হয় তাদের।
পরে তাদের মধ্যে শিশু ও তরুণীকে হাসপাতালের ২৮ নম্বর নিউরো সার্জারি বিভাগে ও যুবককে ২৬ নম্বর অর্থপেডিক ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। তবে দুপুরের পর যুবকের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে চট্টগ্রাম এভারকেয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বাকি দুইজনকে আইসিইউতে স্থানান্তরের পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। আহতদের মধ্যে তরুণীর এখনও জ্ঞান ফেরেনি। ভয়াবহ এ দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে তিনজন নারী, দুই জন শিশু ও পাঁচজন পুরুষ।
হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. সাইফুল সমকালকে বলেন, ‘আহত তিনজনের অবস্থায় এখনও শঙ্কামুক্ত নয়। এরইমধ্যে উন্নত চিকিৎসার জন্য আহত যুবককে এভারকেয়ারে স্থানান্তর করা হয়েছে। বাকি দুইজনের অবস্থাও ভালো নয়। তরুণীর এখনও জ্ঞান ফেরেনি। তার জ্ঞানের মাত্রার অবস্থা খুব খারাপ। ছোট শিশুটির পায়ের হাঁড়ও ভেঙেছে। তাই তাদেরকে হাসপাতালের আইসিইউতে স্থানান্তর করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। দ্রুত তাদের সেখানে নেওয়া হবে।’
চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. তসলিম উদ্দিন সমকালকে বলেন, ‘চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় বুধবার হাসপাতালে পাঁচজনকে আনা হয়। এরমধ্যে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। পরবর্তীতে বাকি তিনজনকে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিতে সব ধরণের প্রস্তুতি রেখেছি আমরা। এরইমধ্যে পর্যাপ্ত ডাক্তার, নার্সকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক।’