শতাধিক পণ্যে শুল্ক–কর (ভ্যাট–ট্যাক্স) বাড়ানো হলেও দেশের মানুষের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না বলে মনে করছে সরকার। বরং বাংলাদেশের অর্থনীতির স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটানোর জন্যই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর ফলে দেশের অর্থনীতির স্বাস্থ্যটা ভালো হবে। দেশের মানুষেরই উন্নয়ন হবে। এ ক্ষেত্রে সরকারের অজনপ্রিয় হওয়ার কোনো কারণ নেই।

রোববার রাজধানীর ফরেন একাডেমিতে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

তিনি বলেন, বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে ট্যাক্স আদায় সবচেয়ে কম। সরকার চায় ট্যাক্স–জিডিপি এমন জায়গায় থাক, যাতে বাংলাদেশের অর্থনীতির উন্নয়ন ঘটে। তাহলে সামনে দেশের মানুষেরও উন্নয়ন হবে। ম্যাক্রো ইকোনমি বাড়ানোর জন্য ট্যাক্স বাড়াতে হবে। এ ক্ষেত্রে আইএমএফের চাহিদার সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। বাংলাদেশেও তো ভালো অর্থনীতিবিদ আছেন। তাদের পরামর্শেই এটা করা হয়েছে। এটা করা না হলে ডলারের দাম ১২৫ টাকা থেকে বেড়ে ১৯০ টাকা হয়ে যাবে। বিদেশি বিনিয়োগ আসবে না। কারণ বিদেশি বিনিয়োগকারীরা দেখেন দেশের ট্যাক্স আদায়ের পরিমাণ কেমন। অর্থনৈতিক স্বাস্থ্যটা কতটা মজবুত। এ ক্ষেত্রে গণমাধ্যমেরও উচিত বিষয়টি নিয়ে জনগণকে বোঝানো।

শফিকুল আলম বলেন, খরচ কীভাবে কমানো যায়, সরকার সে জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে। আগের প্রধানমন্ত্রী তিনশ’ লোক নিয়ে বিদেশে যেতেন। এখন প্রধান উপদেষ্টার বহরে ৫০ জন যাচ্ছেন। তারও একটি বড় অংশ থাকছে নিরাপত্তার জন্য। আগে দেখা গেছে- একজন মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর জন্য কর্নফুলী টানেল করা হয়েছে। টানেল থেকে নেমে তার বিশ্রাম নেওয়ার জন্য সাড়ে চারশ’ কোটি টাকা খরচ করে সেভেন স্টার হোটেল বানানো হয়েছে। 

পাচার করা অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে প্রেস সচিব বলেন, সেগুলো ফেরত আনার চেষ্টা চলছে। গতকালও পূর্বাচলের একটি প্লট নিয়ে দুদকের মামলা হয়েছে। এগুলো সরকারের কোষাগারে আনা যায় কিনা সেই চেষ্টা চলছে।
 
গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেখতে হবে বাজারে সরবরাহ চাহিদা মতো আছে কিনা। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যটা ভালো থাকলে মূল্যস্ফীতিও কমিয়ে আনা যাবে। যারা ভ্যাট–ট্যাক্সের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন তারা অনেক বুঝেই দিয়েছেন। মানুষের ভালোর জন্যই এটা করা হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাতিলের দাবিতে শনিবার ঢাকায় গণসমাবেশ ইসলামী আন্দোলনের

নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাতিল ও ভারতে মুসলিম নির্যাতনের প্রতিবাদে রাজধানী ঢাকায় গণসমাবেশ ও গণমিছিলের কর্মসূচি পালন করবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। আগামী শনিবার বেলা তিনটায় রাজধানীতে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর ফটকে এই কর্মসূচি পালন করবে দলটি।

রাজধানীর পল্টনে ইসলামী আন্দোলনের কার্যালয়ে আজ মঙ্গলবার দলের নিয়মিত বৈঠকে কর্মসূচির এই সিদ্ধান্ত হয়। পরে দলটির পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে এ তথ্য জানানো হয়।

বৈঠকে ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমাদ অভিযোগ করেন, নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন তাদের প্রস্তাবে যে ঔদ্ধত্য দেখিয়েছে, তা কল্পনাও করা যায় না। তারা পারিবারিক আইন থেকে ধর্মকে বাতিল করার প্রস্তাব করেছে। এই কমিশন নারীদের কল্যাণের জন্য প্রস্তাব তৈরি করার জন্য গঠন করা হয়েছিল, কিন্তু তারা নারীদের জন্য অসম্মান ও অভিশপ্ত জীবনের প্রস্তাব করেছে।

মাওলানা ইউনুস আহমাদ বলেন, কোনো নারীই স্বেচ্ছায় কেবলই টাকার জন্য যৌনকর্মে জড়ায় না; বরং পাচার ও নিপীড়নের শিকার হয়ে তারা এ ক্ষেত্রে আটকে থাকতে বাধ্য হয়। তাদের এই অভিশপ্ত জীবন থেকে বের করে আনার প্রচেষ্টা থাকার কথা, অথচ সংস্কার কমিশন তাদের এই বাধ্যতামূলক কাজকে ‘পেশা’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রস্তাব দিয়ে বৈধতা দেওয়ার অপচেষ্টা করেছে।

আরও পড়ুন৩০০ আসন সংরক্ষিত রেখে সরাসরি ভোটের সুপারিশ৩১ মার্চ ২০২৫

অবিলম্বে এই কমিশনের প্রস্তাবকে সরকারিভাবে প্রত্যাখ্যান করে কমিশনকে বাতিল করার আহ্বান জানায় দলটি। বৈঠকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন ইসলামবিরুদ্ধ প্রস্তাব দিলেও প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে একে সাধুবাদ জানানো হয়েছে এবং তা বাস্তবায়নে অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়েছে। এটা জাতিকে হতাশ করেছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আগামী শনিবার বেলা তিনটায় নারীবিষয়ক কমিশনের প্রস্তাব বাতিল ও ভারতে মুসলিম নির্যাতনের প্রতিবাদে বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর ফটকে গণসমাবেশ ও গণমিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করা হলো।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলনের নেতা গাজী আতাউর রহমান, প্রকৌশলী আশরাফুল আলম, অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, মাওলানা ইমতিয়াজ আলম প্রমুখ।

আরও পড়ুননারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের তাগিদ ১৯ এপ্রিল ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ