বাংলাদেশে গণমাধ্যম শুধু রাজনৈতিক শক্তি ও সরকারের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয় না। ব্যবসায়ী গোষ্ঠী ও কোম্পানিগুলোর বিজ্ঞাপন ও প্রভাবের কারণেও তারা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে না। সে কারণে সরকার থেকে সব ধরনের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার পরও গণমাধ্যম স্বাধীনভাবে কাজ নাও করতে পারে। আজ রোববার ‘ডেভেলপমেন্ট মিডিয়া ফোরাম’–এর যাত্রা শুরু অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।

গণ–অভ্যুত্থানপরবর্তী নতুন বাংলাদেশ নির্মাণে গণমাধ্যমকে আরও শক্ত প্রশ্ন করার ক্ষমতা অর্জনের আহ্বান জানান অনুষ্ঠানের আলোচকেরা। তাঁরা বলেন, প্রভাবশালী ও ক্ষমতাবানদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকেও প্রশ্নের মুখে রাখতে হবে।

অক্সফাম ইন বাংলাদেশ–এর উদ্যোগে রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ফোরামটির উদ্বোধন করা হয়। সেখানে দেশের শতাধিক গণমাধ্যমকর্মী, উন্নয়নকর্মী ও অধ্যাপক উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের উন্নয়ন, গণমাধ্যম পরিস্থিতি এবং আগামীর বাংলাদেশে গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে কথা বলেন বক্তারা

প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘পরিবেশ, দুর্যোগ, জলবায়ু পরিবর্তসহ নানা বিষয় বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গণমাধ্যমে এই চ্যালেঞ্জ আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। আমাদের প্রশ্ন করতে হবে। উন্নয়নমূলক কাজ; বিশেষ করে প্রকল্পগুলো কতটা পরিবেশের নীতিমালা মেনে চলে, সেগুলো পরিবেশের ক্ষতি করছে কি না, মানবাধিকারে প্রভাব ফেলছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন করতে হবে।’

পিআইবির মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ বলেন, ‘বাংলাদেশে একসময় উন্নয়ন সাংবাদিকতা মানে দীর্ঘ স্বৈরতান্ত্রিক শাসকদের পক্ষের মতাদর্শ তৈরি করাকে বোঝানো হতো। সেতুর পিলার বন্দনা থেকে শুরু করে অবকাঠামো নির্মাণের পক্ষের যুক্তি হাজির করাই ছিল উন্নয়ন সাংবাদিকতা। এই ধারা থেকে বের হয়ে সাধারণ মানুষের জীবনযাপনের ইতিবাচক পরিবর্তন হচ্ছে কি না তার নিরিখে আমাদের উন্নয়ন সাংবাদিকতাকে দেখতে হবে। এগুলো করতে পারলে সেটি ফোরামের একটি বিরাট সাফল্য হবে।’

অক্সফামের উদ্যোগে ‘ডেভেলপমেন্ট মিডিয়া ফোরাম’-এর আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে অতিথিরা। আজ রোববার রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ইউক্রেনে জেলেনস্কির বিকল্প নেতা খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র!

ইউক্রেনে শান্তিচুক্তির জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পদত্যাগ করা লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের একজন নেতা প্রয়োজন, তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। তিনি শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন এবং এই যুদ্ধ থামাতে পারবেন।’ খবর- সিএনএন

গণমাধ্যমের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডার পর এ কথা বললেন তিনি। বাগবিতণ্ডার এ ঘটনাটি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। ওই ঘটনার পর ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে ঐতিহাসিক চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, সেটিও বাতিল হয়ে যায়। আর এর পরই ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ কোন পথে, তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।

এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। শুক্রবারের ওই ঘটনায় সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গড়া ওয়াশিংটন-কিয়েভ সম্পর্ক ভেঙে পড়েছে। এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে। 

যদিও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আবারও এক টেবিলে বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া-দুই পক্ষই আলোচনায় না বসলে যুদ্ধ থামবে না। হোয়াইট হাউসে শুক্রবার ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডার পর থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আর কথা হয়নি। যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে হবে। তবে তাদের প্রতি বৈরী মনোভাব রাখলে, মস্কোকে আলোচনায় যুক্ত করা সম্ভব হবে না। কোনো চুক্তি করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই মনোভাবই দেখিয়ে আসছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সবকিছু আবার শুরু হতে পারে। আশা করি, তিনি (জেলেনস্কি) এটা বুঝতে পারবেন যে আমরা আসলে আরও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর আগে, তাঁর দেশকে সাহায্যের চেষ্টা করছি।’
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ