গণমাধ্যমকে প্রভাবশালী ও ক্ষমতাবানদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে
Published: 12th, January 2025 GMT
বাংলাদেশে গণমাধ্যম শুধু রাজনৈতিক শক্তি ও সরকারের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয় না। ব্যবসায়ী গোষ্ঠী ও কোম্পানিগুলোর বিজ্ঞাপন ও প্রভাবের কারণেও তারা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে না। সে কারণে সরকার থেকে সব ধরনের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার পরও গণমাধ্যম স্বাধীনভাবে কাজ নাও করতে পারে। আজ রোববার ‘ডেভেলপমেন্ট মিডিয়া ফোরাম’–এর যাত্রা শুরু অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।
গণ–অভ্যুত্থানপরবর্তী নতুন বাংলাদেশ নির্মাণে গণমাধ্যমকে আরও শক্ত প্রশ্ন করার ক্ষমতা অর্জনের আহ্বান জানান অনুষ্ঠানের আলোচকেরা। তাঁরা বলেন, প্রভাবশালী ও ক্ষমতাবানদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকেও প্রশ্নের মুখে রাখতে হবে।
অক্সফাম ইন বাংলাদেশ–এর উদ্যোগে রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ফোরামটির উদ্বোধন করা হয়। সেখানে দেশের শতাধিক গণমাধ্যমকর্মী, উন্নয়নকর্মী ও অধ্যাপক উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের উন্নয়ন, গণমাধ্যম পরিস্থিতি এবং আগামীর বাংলাদেশে গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে কথা বলেন বক্তারা
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘পরিবেশ, দুর্যোগ, জলবায়ু পরিবর্তসহ নানা বিষয় বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গণমাধ্যমে এই চ্যালেঞ্জ আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। আমাদের প্রশ্ন করতে হবে। উন্নয়নমূলক কাজ; বিশেষ করে প্রকল্পগুলো কতটা পরিবেশের নীতিমালা মেনে চলে, সেগুলো পরিবেশের ক্ষতি করছে কি না, মানবাধিকারে প্রভাব ফেলছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন করতে হবে।’
পিআইবির মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ বলেন, ‘বাংলাদেশে একসময় উন্নয়ন সাংবাদিকতা মানে দীর্ঘ স্বৈরতান্ত্রিক শাসকদের পক্ষের মতাদর্শ তৈরি করাকে বোঝানো হতো। সেতুর পিলার বন্দনা থেকে শুরু করে অবকাঠামো নির্মাণের পক্ষের যুক্তি হাজির করাই ছিল উন্নয়ন সাংবাদিকতা। এই ধারা থেকে বের হয়ে সাধারণ মানুষের জীবনযাপনের ইতিবাচক পরিবর্তন হচ্ছে কি না তার নিরিখে আমাদের উন্নয়ন সাংবাদিকতাকে দেখতে হবে। এগুলো করতে পারলে সেটি ফোরামের একটি বিরাট সাফল্য হবে।’
অক্সফামের উদ্যোগে ‘ডেভেলপমেন্ট মিডিয়া ফোরাম’-এর আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে অতিথিরা। আজ রোববার রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রিকশায় ফাঁদ পেতে মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে ১০ লাখ টাকা ছিনতাই, চালকের জবানবন্দি
রাজশাহী নগরের ঘোড়ামারা এলাকায় চোখে মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে দিলীপ কুমার প্রামাণিক নামের এক দোকানের ব্যবস্থাপকের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় রিকশাকে ফাঁদ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। এ কাজের জন্য ছিনতাইকারী চক্রটি এক মাস ধরে ভুক্তভোগী ব্যক্তির ওপর নজরদারি চালিয়েছিল। এ জন্য তারা রিকশাচালককে প্রশিক্ষণও দেওয়া দিয়েছে। গ্রেপ্তার রিকশাচালকের জবানবন্দির বরাত দিয়ে পুলিশ এ তথ্য জানিয়েছে।
এ ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন গ্রেপ্তার রিকশাচালক মাসুম (৩০)। গত বুধবার রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট-২ আদালতের বিচারক মামুনুর রশিদের কাছে ১৬৪ ধারায় এ জবানবন্দি দেন।
আরও পড়ুনউত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বাবা খুন, লাশ রেখে এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্রে মেয়ে১৭ এপ্রিল ২০২৫মাসুমের জবানবন্দির বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, শুক্র ও শনিবার ব্যাংক বন্ধ থাকায় ওই দুই দিনের কেনাবেচার টাকা দিলীপের বাসায় থাকে বলে চক্রটি জানতে পারে। রোববার সকালে তিনি টাকা নিয়ে প্রতিষ্ঠানটিতে যান। বিষয়টি জানতে পেরে চক্রটি পরিকল্পনা সাজায়। তারপর কীভাবে রিকশা নিয়ে অপেক্ষা করতে হবে এবং কোন রাস্তায় যেতে হবে, এ নিয়ে মহড়াও করেছে। ঘটনার আগের রোববার তিনি রিকশা নিয়ে কুমারপাড়ার চালপট্টির ওই বাড়ির সামনে অবস্থান নিয়েছিলেন। কিন্তু সেদিন পরিকল্পনা সফল হয়নি।
বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাক আহম্মেদ বলেন, ওই রিকশাকে ফাঁদ হিসেবে ব্যবহার করেছে ছিনতাইকারীরা। পরিকল্পনামাফিক তারা ওই এলাকায় এক মাস ধরে নজরদারি করেছে। আগেও রিকশা নিয়ে ফাঁদ পেতেছিল চক্রটি, তবে সফল হতে পারেনি। পরে গত রোববার ঘটনাটি ঘটায়।
গত রোববার সকালে বোয়ালিয়া থানা এলাকার ঘোড়ামারা মোড়ে ছিনতাইয়ের শিকার হন দিলীপ কুমার প্রামাণিক। তিনি রিলায়েন্স অটো নামের একটি অটোরিকশার যন্ত্রাংশ বিক্রির দোকানের ব্যবস্থাপক।
আরও পড়ুনমেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদে বাবা খুন: প্রধান আসামি ও এক সহযোগী গ্রেপ্তার১৯ এপ্রিল ২০২৫পুলিশ ও দোকানের মালিক পক্ষ জানায়, আগের দিনের বিক্রির ১৩ লাখ টাকা নিয়ে দিলীপ কুমার রোববার সকালে শিরোইলে ঢাকা বাস টার্মিনালের দিকে যাচ্ছিলেন। পথে মাসুমের রিকশায় ঘোড়ামারা এলাকায় পৌঁছালে, রিকশাটি হঠাৎ একটি সরু গলির দিকে মোড় নেয়। ঠিক তখনই একটি মোটরসাইকেলে আসা দুই ব্যক্তি রিকশার গতি রোধ করেন। তাঁদের একজন দিলীপের চোখে মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে দেন। এ সময় ছিনতাইকারীরা তাঁর পিঠে থাকা টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নিতে গেলে তিনি বাধা দেন। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে তাঁর ডান হাতের কনুই ও বাঁ হাতের আঙুল কেটে যায়। ব্যাগটি ছিনিয়ে নিয়ে পালানোর সময় প্রায় আড়াই লাখ টাকা রাস্তায় পড়ে যায়, তবে বাকি টাকা নিয়ে ছিনতাইকারীরা পালিয়ে যায়।
আরও পড়ুনরাজশাহীতে মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদে বাবা খুনের মামলায় প্রধান আসামির সহযোগী গ্রেপ্তার১৮ এপ্রিল ২০২৫