অথচ কণ্ঠস্বরের কারণেই বাদ পড়েছিলেন অমরেশ পুরি
Published: 12th, January 2025 GMT
অমরেশ পুরি পর্দায় হাজির হওয়া মানেই একরাশ আতঙ্ক। হিন্দি ছবির খলনায়ক চরিত্র যেন অন্য রূপ পেয়েছিল তাঁর চেহারার ক্রুরতার জন্য। অথচ সেই চেহারার কারণেই ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে অমরেশ পুরি সুযোগ পাননি সিনেমায়! আজ ১২ জানুয়ারি অভিনেতার মৃত্যুবার্ষিকী। এ উপলক্ষে টাইমস অব ইন্ডিয়া অবলম্বনে জেনে নেওয়া যাক অভিনেতা সম্পর্কে কিছু তথ্য।
‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে’ সিনেমার শেষ দৃশ্যে পর্দায় মেয়ে কাজলকে নায়ক শাহরুখের হাতে সঁপে দিয়ে অমরেশ পুরির কণ্ঠে সেই সংলাপ আজও কানে লেগে আছে। রুক্ষ স্বর আর বুক কেঁপে ওঠার মতো চেহারা অমরেশ পুরির দীর্ঘ ক্যারিয়ারে সাফল্যের দুই রসদ। অথচ সেই চেহারা ও কণ্ঠকে একদিন গ্রহণ করেনি বলিউড!
অমরেশের নাতি বর্ধন পুরি প্রথম বিষয়টি প্রকাশ্যে এনেছিলেন। তিনি জানান, হিন্দি ছবিতে নায়ক হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন তাঁর দাদা। স্বপ্ন পূরণ করতে একটানা চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন। ২১ বছর বয়সে জীবনে প্রথম স্ক্রিন টেস্ট দিতে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু স্ক্রিন টেস্ট দেওয়ার আগেই অমরেশের চেহারা ও কণ্ঠস্বরের কারণে বাদ দিয়ে দেওয়া তাঁকে। পরে বেশ কয়েকবার অডিশন দিতে গিয়ে প্রত্যাখ্যাত হন তিনি। মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। বলিউডের এক প্রখ্যাত পরিচালক নাকি অমরেশ পুরিকে বলেছিলেন, ‘এমন চেহারা নিয়ে তুমি কখনো নায়ক হতে পারবে না।’
বারবার প্রত্যাখ্যান মানসিকভাবে দুর্বল করে দিলেও হাল ছেড়ে দেননি অমরেশ পুরি। বরং তিনি নিজের কাছে প্রতিজ্ঞা করেন, ঠিক যে কারণগুলোর জন্য তিনি স্বপ্নের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না, সেগুলোকেই সফল হওয়ার কারণ বানিয়ে ছাড়বেন।
আরও পড়ুনঅমরেশ পুরি সম্পর্কে এই ৫ তথ্য জানতেন কি২২ জুন ২০২৪শেষ পর্যন্ত রুপালি পর্দায় নায়ক হওয়ার স্বপ্নে বিভোর অমরেশ পুরির দুটি চোখ খুঁজে নেয় অন্য লক্ষ্য। বলিউডের চোখে তাঁর দুর্বলতাগুলোকে ধীরে ধীরে নিজের শক্তি বানিয়ে তোলেন। নায়ক হওয়ার বাসনা ছেড়ে, নাম লেখান খলনায়কের খাতায়। তারপর অবশ্য আর ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। হিন্দি ছবিতে খলনায়কের সংজ্ঞা বদলে দিয়েছিলেন তিনি।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ঠিকাদার বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে ২ প্রকৌশলীকে হুমকির অভিযোগ
খুলনা নগরীর খানজাহান আলী থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মোল্লা সোহাগের বিরুদ্ধে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) দুই প্রকৌশলীকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কুয়েটের একটি ভবনের ছাদের ওয়াটারপ্রুফিংয়ের কাজে ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে লাভ আরও বেশি নির্ধারণের কথা বলেছিলেন ওই ঠিকাদার। এ নিয়ে প্রকৌশলীদের তিনি হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ প্রেক্ষাপটে কুয়েটের নির্বাহী প্রকৌশলী (পুর) শেখ আবু হায়াত ও নির্বাহী প্রকৌশলী (পুর) মো. গোলাম কিবরিয়া সোমবার কুয়েট উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগ করে নিরাপত্তা চেয়েছেন।
সূত্র জানায়, কুয়েটের ১৩ নম্বর ভবনের ছাদের ওপর ওয়াটারপ্রুফিংয়ের কাজ নিয়েছেন মোল্লা সোহাগ। কাজটি কয়েকদিন আগে শুরু হয়। গত রোববার বিকেল ৩টার দিকে ঠিকাদার সোহাগ প্রথমে নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়ার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে কল দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী এ বি এম মামুনুর রশিদ এবং অন্য নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ আবু হায়াতকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও হুমকি দেন। গালাগাল করতে নিষেধ করলে তিনি গোলাম কিবরিয়াকেও গালাগাল ও হুমকি দেন। পরে তিনি একই পরিচয় দিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ আবু হায়াতকে ফোনে গালাগাল ও হুমকি দেন।
উপাচার্যের কাছে দুই নির্বাহী প্রকৌশলী লিখিত অভিযোগে বলেন, ওয়াটারপ্রুফিংয়ের কাজের দর প্রধান প্রকৌশলীর কার্যালয়ের প্রকৌশলীরা বাজারদরের সঙ্গে সরকারি নিয়মে ভ্যাট, আইটি ও ১০ শতাংশ প্রফিট বা লাভ (পূর্বনির্ধারিত) যুক্ত করে নির্ধারণ করেন। ঠিকাদার সোহাগ ১০ শতাংশ লাভ কেন যুক্ত করে দর নির্ধারণ করা হয়েছে, তাঁকে আরও বেশি লাভ দিতে হবে বলে ফোনে প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়াকে জানান। এ কথা বলার পর প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া অফিসে যোগাযোগ করতে বলেন। কিন্তু কোনো কথা না শুনে ফোনে প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া ও শেখ আবু হায়াতকে গালাগাল ও মারধরের হুমকি দেন সোহাগ। এ অবস্থায় তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ আবু হায়াত বলেন, রোববার বিকেল ৩টার কিছু আগে খানজাহান আলী থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক পরিচয়ে আমাকে ফোন দিয়ে বলে– ‘তুই চেয়ারের পরে বসে সবাইরে ১০ লাখ ২০ লাখ টাকার কাজ দিস। আমাকে দিছিস টেন পারসেন্ট লাভে।’ এই বলে আমাকে যাচ্ছেতাই বলে গালাগাল করেন। পাঁচ মিনিট পর ফোন দিয়ে আমাকে দেখে ছাড়বেন, আমার বাড়ি আক্রমণ করবেন, ফুলবাড়িগেটে গেলে আমাকে দেখে নেবেন– এসব বলে হিুমকি দেন।
নিজের সাংগঠনিক পরিচয় ও প্রকৌশলীকে ফোন দেওয়ার কথা স্বীকার করেন মোল্লা সোহাগ। তবে কোনো ধরনের ঠিকাদারি কাজের সঙ্গে তিনি জড়িত নন বলে দাবি করেন। মোল্লা সোহাগ বলেন, আমার নেতার অর্ডার আছে– আমি কোনো জায়গায় কোনো টেন্ডারেও যাই না, কোনো ঠিকাদারিতেও নেই। আমার কোনো কাজ কুয়েটে চলে না। আমার ট্রেড লাইসেন্সই নেই, কাজ পরের কথা। আমি তাদের (প্রকৌশলী) ফোন দিয়েছিলাম, কথা হয়েছে, তবে কোনো হুমকি-ধমকি দেওয়া হয়নি।
কোনো কাজ চলছে না, তাহলে প্রকৌশলীদের কার হয়ে ফোন দিয়েছিলেন– এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এটা আবু হায়াত ও গোলাম কিবরিয়াকে ফোন দিলে ভালোভাবে জানতে পারবেন।’