ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের চালক এক কিশোরকে কুপিয়ে ও গলা কেটে মুমূর্ষু অবস্থায় ধানখেতে ফেলে যায় দুর্বৃত্তরা। গতকাল শনিবার রাতে জেলার জামালগঞ্জ উপজেলার ফেনারবাক ইউনিয়নের উররাবিল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আজ রোববার সকালে হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

ওই কিশোরের নাম আকরাম হোসেন (১৫)। সে জেলার দিরাই উপজেলার সরমঙ্গল ইউনিয়নে ধনপুর গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে। রফিকুল পরিবার নিয়ে দুই বছর ধরে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের মোহাম্মদপুর এলাকায় বসবাস করতেন। বাবা ও ছেলে দুজনই শহরে ইজিবাইক চালাত।

আকরামের চাচাতো ভাই রায়হান মিয়া (২০) বলেন, শনিবার বিকেলে আকরাম ইজিবাইক নিয়ে শহরে বের হয়। রাত একটার দিকে জামালগঞ্জ থানার পুলিশ ফোনে জানায়, আকরামকে কে বা কারা কুপিয়েছে। তার অবস্থা গুরুতর। পরে পুলিশই একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে সুনামগঞ্জ পাঠায়। রাত তিনটার দিকে সুনামগঞ্জ থেকে তাকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। আজ রোববার সকালে সেখানে সে মারা যায়।

রায়হান মিয়া বলেন, ‘আমরা বুঝতে পারছি না সে রাতে এত দূরে কীভাবে গেল। যারা মেরেছে, তারা গাড়ি, টাকাপয়সা নেয়নি। শুধু মোবাইলটা পাওয়া যাচ্ছে না।’

আরেক প্রতিবেশী সুলতান মিয়া (৪৮) বলেন, লাশের মুখ ও বুকে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। গলাকাটা ছিল। এই বাচ্চা ছেলেরে কে বা কারা এমন নৃশংসভাবে হত্যা করল, বুঝতে পারছেন না।

জামালগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শ ম কামাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, শনিবার রাতে স্থানীয় লোকজন খবর দিলে পুলিশ গিয়ে সড়কের পাশে ধানখেত থেকে আকরাম হোসেনকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। ইজিবাইকটিও ধানখেতে ছিল। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

দুর্ঘটনায় আহত অভিনেত্রী খুশি, চোখের ওপর পড়েছে ১০ সেলাই

দুর্ঘটনার শিকার হয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন ছোটপর্দার অভিনেত্রী শাহনাজ খুশি। বুধবার সকালে রমনা পার্ক থেকে বাড়ি ফেরার সময় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার ধাক্কায় তিনি আহত হন। অভিনেত্রীর ছেলে সৌম্য জ্যোতি সমকালকে বিষয়টি জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, বুধবার সকালে আম্মু রমনা পার্কে হাটতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে বাসায় ফেরার সময় গলির মধ্যে একটি অটোরিকশা তাকে ধাক্কা দিলে আম্মু ছিটকে পড়ে যায় এবং তার ঠিক চোখের ওপর জখম হয়। পরে দ্রুত তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সিটি স্ক্যানসহ বিভিন্ন পরীক্ষা করা হয়েছে। এখন তিনি আপাতত ভালো আছেন।’

এদিকে কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দুর্ঘটনার বিষয়টি জানান শাহনাজ খুশি। সেখানে তিনি বলেন, ‘বেশি না, মাত্র ১০টা সেলাই পড়েছে। এ আর এমন কি বলেন? চোখটা অন্ধ হয় নাই, হয় নাই ব্রেইন হ্যামারেজের মত শেষ অবস্থা! সেটাই তো অনেক বেশি পাওয়া! এ তেমন কিছু না, চোখের উপরের সেনসেটিভ জায়গায় মাত্র ১০ টা সেলাই লেগেছে! আমি যে প্রাণে বেঁচে আছি এ জন্য মহান সৃষ্টিকর্তা কাছে শুকরিয়া আদায় করছি!’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘কিচ্ছু চাই না আমি, শুধু যে মায়েরা/বাবারা ছোট্ট বাচ্চাটার হাত ধরে রাস্তা পার হয়ে স্কুলে আসেন অথবা নানান প্রয়োজনে রাস্তায় যান, তাদের সতর্ক করতে পোস্টটা দিলাম। আমি হয়ত ভেঙেচুরে বেঁচে গেছি। কোন বাচ্চা এ আঘাত নিতে পারবে না! ব্যাটারি চালিত অসভ্য/বর্বর যানবাহনটি এবং তার অসভ্য চালক থেকে সর্বদা সতর্ক থাকবেন। যদিও আমি গলির ভেতরের রাস্তায়, প্রাতঃ ভ্রমণ শেষে অতি সর্তকতার সাথেই একেবারে কিনার দিয়ে হেঁটে ফিরছিলাম! ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে বীরদর্পে চলে গেছে! ওরা মেধাবী যান চালক, কারো জীবনের ক্ষতির তোয়াক্কা করে না! আপনার এবং আপনার সন্তানের দায়িত্ব একান্তই আপনার। আজ চারদিন পরও মাথার অর্ধেকে কোন বোধশক্তি নাই!

সবশেষে তিনি লিখেছেন, ‘জানি না স্বাভাবিক চেহারায় ফিরবো কিনা, সেটা যদিও ফিরি রক্তাক্ত সেই পথে পড়ে থাকা সকালের ট্রমা অনেককাল ভুলবো না! কাতর অবস্থায় বিছানায় পরে থেকে বারবার একটা প্রশ্ন মনে আসছে, এই যে যত্রতত্র কুপিয়ে জখম, ট্রেন-বাস, রিকশা কিংবা প্রাইভেট গাড়িতে দিনেরাতে ছিনতাই। কার কাছে চাইব আমাদের সন্তানদের নিরাপদ পথচলা।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ