নেত্রকোনায় পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শফিকুল ইসলাম (৪৮) হত্যা মামলা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) হস্তান্তর করা হয়েছে। আজ রোববার দুপুরে মামলাটি দুর্গাপুর থানা থেকে পিবিআই নেত্রকোনা কার্যালয়ে স্থানান্তর করা হয়।

বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন নেত্রকোনা পুলিশ সুপার মির্জা সায়েম মাহমুদ। তিনি বলেন, মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইয়ের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হস্তান্তর করা হয়েছে। পাশাপাশি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশের অভিযানও অব্যাহত আছে বলে জানান তিনি।

এদিকে ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া সাজিবুল ইসলাম (২৮) ও মো.

বাকী বিল্লাহ (৩০) নামের দুই যুবককে আজ রোববার বিকেলে আদালতে সোপর্দ করা হয়।

নিহত শফিকুল ইসলাম দুর্গাপুরের চণ্ডীগড় ইউনিয়নের নয়াগাঁও গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে। তিনি জামালপুর পুলিশ লাইনসের বেতার বিভাগে এসআই হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা, পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, শফিকুল ইসলাম ছুটি নিয়ে গত বুধবার বাড়িতে আসেন। পরদিন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনি দুর্গাপুর পৌর শহরের বাগিচাপাড়া এলাকার বাসা থেকে বের হন। সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার পর পানমহাল রোড এলাকা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় কয়েকজন দুর্বৃত্ত দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাঁর ওপর হামলা চালায়। ওই দিন রাত সাড়ে নয়টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করার কিছুক্ষণ পর তিনি মারা যান। এ ঘটনায় নিহতের বাবা গত শুক্রবার সকালে বাদী হয়ে মামলা করেন। এতে অজ্ঞাতনামা ছয়জনকে আসামি করা হয়। হত্যাসংক্রান্ত একটি সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে শফিকুল ইসলামকে তিনজন যুবক রামদা দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাচ্ছেন। ঘটনায় জড়িত অভিযোগে পিবিআই ময়মনসিংহ ও নেত্রকোনা কার্যালয় যৌথ অভিযান চালিয়ে গতকাল শনিবার বিকেলে দুই যুবককে দুর্গাপুরের দুটি স্থান থেকে গ্রেপ্তার করে। আজ রোববার বিকেলে তাঁদের আদালতে সোপর্দ করা হয়।

পিবিআই ময়মনসিংহ কার্যালয়ের পুলিশ সুপার মো. রকিবুল আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, ‘এসআই শফিকুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডে বেশ কয়েকজন জড়িত আছেন। তবে তদন্তের স্বার্থে এ মুহূর্তে এর বেশি কিছু বলা যাচ্ছে না। আমরা দুজনকে গ্রেপ্তার করেছি। আশা করছি অন্য আসামিদেরও দ্রুত গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হব। এ ছাড়া মামলাটি থানা-পুলিশের কাছ থেকে অধিগ্রহণ করা হয়েছে।’

নিহতের বাবা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি চাই, আমার ছেলে হত্যাকাণ্ডে যারাই জড়িত রয়েছে, সবাইকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে ফাঁসি দেওয়া হোক। তবেই আমার ছেলের আত্মা শান্তি পাবে।’

আরও পড়ুননেত্রকোনায় এসআই শফিকুলকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ২২২ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুন‘আমার স্বামী পুলিশের লোক হইয়াও যদি সঠিক বিচার না পায়, কী হইব আমরার’১১ জানুয়ারি ২০২৫আরও পড়ুননেত্রকোনায় ছুটিতে বাড়িতে আসা এসআইকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা০৯ জানুয়ারি ২০২৫

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

নীলফামারীতে পুলিশ-সেনা সদস্যদের যৌথ টহল অব্যাহত

নীলফামারীতে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং ঈদের পরও সড়কে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং পুলিশের যৌথ টহল ও চেকপোস্ট কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। 

আজ মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) ঈদের পরের দিনে সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথভাবে নীলফামারী সদরের উত্তরা ইপিজেড, সৈয়দপুর বাসটার্মিনাল, শুটকির মোড় ও পাঁচ মাথা মোড়ে চেকপোস্ট বসিয়ে সন্দেহভাজন ব্যক্তি, হেলমেট ও লাইসেন্সবিহিন মোটরসাইকেল আরোহী, নছিমন, ভটভটি, প্রাইভেটকার ও বাসে তল্লাশি কার্যক্রম পরিচালনা করে।

নীলফামারীতে সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ ফাহিম এহসান ও সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার ওমর ফারুক এবং সৈয়দপুরে সেনাবাহিনীর ওয়ারেন্ট অফিসার মোস্তফা মজুমদারের নেতৃত্বে এই কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। 

আরো পড়ুন:

প্রধান উপদেষ্টাকে ঈদ-নিরাপত্তার বিষয়ে জানিয়েছেন সেনাপ্রধান

সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে: তারেক রহমান

এ সময় নীলফামারীর ইপিজেড পয়েন্টে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) প্রশান্ত রায় ও সৈয়দপুর পয়েন্টে এসআই সুজন উপস্থিত ছিলেন।  

সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ ফাহিম এহসান জানান, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে নীলফামারীতে জনগণের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেনা সদস্যরা ঈদের পরও নিরলসভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে। যৌথ বাহিনীর চেকপোস্ট পরিচালনার মুল উদ্দেশ্য হলো সচেতনতা বৃদ্ধিসহ মানুষ যেন নিশ্চিন্তে ও নিরাপদে চলাফেরা করতে পারে এবং দুষ্কৃতিকারীদের তৎপরতা সীমিত রাখা যায়।   

সেনাবাহিনী সুত্র জানায়, গত ২ মার্চ থেকে সেনাবাহিনী ও পুলিশ বিভিন্ন ধরনের চেকপোস্ট ও তল্লাশি কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এ পর্যন্ত দুই উপজেলায় ২৫২টি মামলায় ৮ লাখ ৩৬ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এরমধ্যে নীলফামারীতে ১৪২টি মামলায় ৪ লাখ ৭০ হাজার ৬০০ টাকা এবং সৈয়দপুরে ১১০টি মামলায় ৩ লাখ ৬৫ হাজার ৯০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। 

সেনাবাহিনীর ওয়ারেন্ট অফিসার মোস্তফা মজুমদার জানান, কার্যক্রমের ফলে জনগণের মাঝে আরো তৎপরতা ও সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। চেকপোস্টের মাধ্যমে যানবাহনে লাইসেন্স না থাকায় ব্যবস্থা নেওয়া এবং হেলমেটবিহীন মোটরসাইকেল আরোহীদের সতর্ক করা হয়। 

এছাড়াও বাস, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস এবং সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের তল্লাশি করা হয়। 

ঢাকা/সিথুন/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আসামি ছিনিয়ে নিতে পুলিশের উপর হামলা, গ্রেপ্তার ১৬
  • নীলফামারীতে পুলিশ-সেনা সদস্যদের যৌথ টহল অব্যাহত