অর্থ বরাদ্দ পেলে এক বছরের মধ্যে বগুড়া বিমানবন্দরে বাণিজ্যিক উড়োজাহাজ চালু সম্ভব: বিমানবাহিনী প্রধান
Published: 12th, January 2025 GMT
রানওয়ে সম্প্রসারণ ও আনুষঙ্গিক উন্নয়নে অর্থ পেলে আগামী এক বছরের মধ্যে বগুড়া বিমানবন্দরে বাণিজ্যিক উড়োজাহাজ উড্ডয়নসেবা চালু করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান। বাণিজ্যিক বিমানসেবা চালুর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে আজ রোববার বগুড়া বিমানবন্দর এলাকা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
হাসান মাহমুদ খান বলেন, ‘বগুড়া বিমানবন্দরে বাণিজ্যিক বিমানসেবা চালুর জন্য রানওয়ে সম্প্রসারণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাজ। আমরা অনেকবার বোর্ড গঠন করেছি, অনেকবার প্রস্তাব দিয়েছি। কিন্তু তৎকালীন সরকার কোনো গুরুত্ব দেয়নি। আমরা বগুড়া বিমানবন্দরে বাণিজ্যিক সেবা চালুর জন্য নতুন করে সরকারকে প্রস্তাব দেব। রানওয়ে সম্প্রসারণে বাজেট পেলে স্বল্প পরিসরে বাণিজ্যিক সেবা চালু করতে কমপক্ষে এক বছর সময় লাগবে।’
বগুড়া বিমানবন্দরে বাণিজ্যিক উড়োজাহাজ উড্ডয়নসেবা চালুর জন্য চার ধাপে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান বিমানবাহিনীর প্রধান হাসান মাহমুদ খান। তিনি বলেন, ছোট বিমান চলাচলের জন্য ৬ হাজার ফুট রানওয়ে দরকার। বড় বিমান চালুর জন্য ৮ হাজার ফুট রানওয়ে লাগবে। এর চেয়ে বড় বিমান চলাচলের জন্য ১০ হাজার ফুট রানওয়ে লাগবে। এখন এই বিমানবন্দরে রানওয়ে আছে ৪ হাজার ৭০০ ফুট। কম তেল এবং কম যাত্রী নিয়ে বর্তমান রানওয়েতে বিমান ওঠানামা সম্ভব। তবে পুরোদমে বগুড়া বিমানবন্দরে বাণিজ্যিক বিমানসেবা চালু হলে দেড় থেকে দুই হাজার ফুট রানওয়ে সম্প্রসারণ করতে হবে। বিমানবন্দরের পূর্ব পাশে পাকা রাস্তা আছে। এ জন্য বিমানবন্দরে পশ্চিমে থাকা একটি গ্রামের মানুষকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে পুনর্বাসন করতে হবে।
বগুড়া বিমানবন্দরে রানওয়ে সম্প্রসারণের পাশাপাশি সক্ষমতা শক্তি বৃদ্ধি করতে হবে মন্তব্য করে এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান বলেন, ‘অভ্যন্তরীণ রুটে বিমানসেবা চালু করতে হলে রানওয়ে সম্প্রসারণ করতে হবে। এ জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমরা প্রস্তাব করব। অর্থ পেলে বিমানসেবা চালু সম্ভব। আর না পেলে নির্বাচিত সরকার দায়িত্বভার গ্রহণ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।’
বগুড়া জেলা প্রশাসনের একটি সূত্র জানায়, কয়েক বছর আগে বগুড়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিমানবন্দরটির রানওয়ে সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। পরে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের একটি প্রতিনিধিদল সরেজমিন পরিদর্শনে এসে বাণিজ্যিক বিমানসেবা চালুর জন্য রানওয়ে সম্প্রসারণের গুরুত্বের কথা বলে। কিন্তু পরবর্তী সময়ে এ উদ্যোগ আর এগোয়নি।
নব্বইয়ের দশকে বিএনপি সরকারের শেষ সময়ে বগুড়া জেলা শহরের এরুলিয়া এলাকায় বগুড়া-নওগাঁ মহাসড়কের পাশে ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় ১১০ একর জায়গার ওপর আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দর নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। আর কাজটি শুরু হয় ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে। ২০০০ সালে বিমানবন্দরটি তৈরির কাজ শেষ হলেও গত ২৪ বছরে যাত্রীবাহী বাণিজ্যিক কোনো বিমান আর ওঠানামা করেনি এ বিমানবন্দরে। পরে সেখানে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু করা হয়।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
এবার ১২ হাজার শিক্ষার্থীকে ইফতার করালো রাবি প্রশাসন
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) অধ্যায়নরত ১২ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য ইফতারের আয়োজন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সোমবার (৩ মার্চ) দ্বিতীয় রোজায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে এ আয়োজন করা হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, আসরের নামাজের পর থেকেই শিক্ষার্থীরা দলে দলে কেন্দ্রীয় মসজিদে আসতে শুরু করেন। এ সময় মসজিদের ভেতরে এবং মসজিদ সংলগ্ন বাগানে তারা ইফতারির জন্য সারিবদ্ধভাবে বসেন। এ ছাড়াও নারীদের জন্য মসজিদের বাগানে আলাদাভাবে ইফতারির ব্যবস্থা করা হয়। এতে মসজিদ প্রাঙ্গণে তৈরি হয় এক উৎসবমুখর পরিবেশ।
আরো পড়ুন:
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গণইফতার আয়োজন করে অভিনব প্রতিবাদ
রাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা, ভোটগ্রহণ জুনে
ইফতারে অংশগ্রহণ করতে আসা ইনফরমেশন সাইন্স অ্যান্ড লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. রোকনুজ্জামান বলেন, “আজকের আয়োজন অনেক ভালো ছিল। এখানে সবার সঙ্গে ইফতার করতে এসে খুবই ভালো লাগছে। একটা উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিটা দিন মনে হচ্ছে ঈদের মতো। প্রশাসনের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।”
আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী নয়ন আহমেদ বলেন, “গতকালের তুলনায় আজকের আয়োজন অনেক ভালো। কাল সব এলোমেলো ছিল। কিন্তু আজকের আয়োজন গোছালো হয়েছে। এত মানুষের সঙ্গে আগে কখনো ইফতার করিনি। অন্যরকম একটা ভালো লাগা কাজ করছে। মনে হচ্ছে এখানে মেলা চলছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই এত সুন্দর আয়োজন করার জন্য।”
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ইফতারে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দিন খান (প্রশাসন), উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মোহা. ফরিদ উদ্দিন খান (শিক্ষা), রেজিস্ট্রার ইফতেখারুল আলম মাসউদ, জনসংযোগ প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার প্রমখ।
সার্বিক বিষয়ে জনসংযোগ প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার বলেন, “আমরা আজ প্রায় সাড়ে ১১ হাজার থেকে ১২ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য ইফতার আয়োজন করেছি। যা গতকালের তুলনায় তিনগুণ। আমরা আশা করছি আজ সব ঠিকঠাক মতো হবে। এজন্য সবার সাহায্য প্রয়োজন, যাতে কোন উশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি না হয়।”
প্রথমবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে মাসব্যাপী ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। রোজার প্রথমদিন রবিবার (২ মার্চ) ৪ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য ইফতারের আয়োজন করা হয়। কিন্তু আয়োজনের তুলনায় অধিক রোজাদার উপস্থিত হওয়ায় ইফতারে সঙ্কট দেখা দিলে শিক্ষার্থীদের ভাগাভাগি করে নিতে দেখা গেছে।
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী