রাজধানীর পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনিয়মের মধ্য দিয়ে ১০ কাঠা করে ৬০ কাঠার ছয়টি প্লট নিজেদের নামে করিয়ে নেওয়ার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এ ছাড়া এ অনিয়মে সহযোগিতার অভিযোগে মামলায় আরও ১৪ জনকে আসামি করা হয়েছে।

আজ রোববার দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সমন্বিত কার্যালয় ঢাকা–১–এ মামলাটি করা হয়।

এর আগে দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন রাজধানীর সেগুনবাগিচা এলাকায় সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, ক্ষমতার অপব্যবহার করে শেখ হাসিনা নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নামে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের কূটনৈতিক এলাকায় ৬০ কাঠার ৬টি প্লট বরাদ্দ নিয়েছেন।

দুদক সূত্র বলছে, মামলায় শেখ হাসিনা ও তাঁর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদকে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান মো.

আনিছুর রহমান মিঞা, জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, রাজউকের সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, সাবেক সদস্য মেজর (অব.) ইঞ্জিনিয়ার সামসুদ্দিন আহমেদ চৌধুরীকেও আসামি করা হয়েছে।

এর আগে গত ২৬ ডিসেম্বর শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের নামে বরাদ্দ নেওয়া প্লটের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। সেদিন আক্তার হোসেন জানিয়েছিলেন, পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরের কূটনৈতিক জোনের ২০৩ নম্বর সড়কের আশপাশের এলাকায় শেখ হাসিনা, সজীব ওয়াজেদ, সায়মা ওয়াজেদ, শেখ রেহানা ও তাঁর ছেলে-মেয়ের নামে ১০ কাঠা করে ৬০ কাঠার ৬টি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

৭০ জনের আয়কর নথি চেয়ে এনবিআরে চিঠি দুদকের

অর্থ পাচার করে দুবাইয়ে সম্পত্তি করা ৭০ প্রবাসীর আয়কর নথিসহ অন্যান্য তথ্য চেয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যানের কাছে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত ১৬ এপ্রিল দুদকের উপপরিচালক রামপ্রসাদ মণ্ডলের সই করা চিঠিটি পাঠানো হয়। তবে চিঠির তথ্য জানাজানি হয় গতকাল বুধবার। 

দুদকের চিঠিতে বলা হয়, মোট ৪৫৯ বাংলাদেশির বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ সুইস ব্যাংকসহ বিদেশের বিভিন্ন ব্যাংকে পাচার করে পরে তা দিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের গোল্ডেন ভিসা সুবিধায় ৯৭২টি প্রপার্টি কেনার অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। এসব সম্পদের মূল্য প্রায় ৩১৫ মিলিয়ন ডলার।
এসব ব্যক্তির মধ্যে ৭০ জনের তথ্য ২৯ এপ্রিলের মধ্যে এনবিআরকে পাঠাতে বলেছে দুদক। চিঠিতে নাম, জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট নম্বর ও জন্মতারিখ দিয়ে এসব ব্যক্তির টিআইএন সনদের বিস্তারিত তথ্য চাওয়া হয়েছে। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, তাদের ‘সকল তথ্য সংক্রান্ত সব রেকর্ডপত্র সংগ্রহ ও পর্যালোচনা করা একান্ত প্রয়োজন’।

এর আগে ইইউ ট্যাক্স অবজারভেটরি জানিয়েছিল, ৪৫৯ বাংলাদেশি নাগরিক বাংলাদেশে তাদের তথ্য গোপন করে দুবাইয়ে সম্পত্তি কিনেছেন। ২০২০ সাল পর্যন্ত তাদের মালিকানায় সেখানে মোট ৯৭২টি সম্পত্তি কেনার তথ্য পাওয়া গেছে। এগুলোর মূল্য সাড়ে ৩১ কোটি ডলার।

দুদকের কর্মকর্তারা জানান, ২০২৩ সালে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের সূত্র ধরে উচ্চ আদালতের নির্দেশনায় অনুসন্ধানে নেমেছে কমিশন। এসব ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত করতে তিন সদস্যের অনুসন্ধান টিম গঠন করেছে সংস্থাটি।

যাদের তথ্য চেয়েছে দুদক

সংস্থাটি ৭০ জনের তালিকা দিলেও, তাতে মোট ৭৪ জনের নাম রয়েছে। তারা হলেন– আহসানুল করীম, আনজুমান আরা শহীদ, হেফজুল বারী মোহাম্মদ ইকবাল, হুমায়রা সেলিম, জুরান চন্দ্র ভৌমিক, মো. রাব্বী খান, মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা, মোহাম্মদ অলিউর রহমান, এস এ খান ইখতেখারুজ্জামান, সাইফুজ্জামান চৌধুরী, সৈয়দ ফাহিম আহমেদ, সৈয়দ হাসনাইন, সৈয়দ মাহমুদুল হক, সৈয়দ রুহুল হক, গোলাম মোহাম্মদ ভূঁইয়া, হাজি মোস্তফা ভূঁইয়া, মনোজ কান্তি পাল, মো. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী, মো. মাহবুবুল হক সরকার, মো. সেলিম রেজা, মোহাম্মদ ইলিয়াস বজলুর রহমান, এস ইউ আহমেদ, শেহতাজ মুন্সী খান, এ কে এম ফজলুর রহমান, আবু ইউসুফ মো. আবদুল্লাহ, চৌধুরী নাফিজ সরাফাত, গুলজার আলম চৌধুরী, হাসান আশিক তাইমুর ইসলাম, হাসান রেজা মহিদুল ইসলাম, খালেদ মাহমুদ, এম সাজ্জাদ আলম, মোহাম্মদ ইয়াসিন আলী, মোস্তফা আমির ফয়সাল, রিফাত আলী ভূঁইয়া, সালিমুল হক ঈসা/হাকিম মোহাম্মদ ঈসা, সৈয়দ এ কে আনোয়ারুজ্জামান/সৈয়দ কামরুজ্জামান, সৈয়দ সালমান মাসুদ, সৈয়দ সাইমুল হক, আবদুল হাই সরকার, আহমেদ সামীর পাশা, ফাহমিদা শবনম চৈতী, মো. আবুল কালাম, ফাতেমা বেগম কামাল, মোহাম্মদ আল রুমান খান, মায়নুল হক সিদ্দিকী, মুনিয়া আওয়ান, সাদিক হোসেন মো. শাকিল, আবদুল্লাহ মামুন মারুফ, মোহাম্মদ আরমান হোসেন, মোহাম্মদ শওকত হোসেন সিদ্দিকী, মোস্তফা জামাল নাসের, আহমেদ ইমরান চৌধুরী, বিল্লাল হোসেন, এম এ হাশেম, মোহাম্মদ মাইন উদ্দিন চৌধুরী, নাতাশা নূর মুমু, সৈয়দ মিজান মোহাম্মদ আবু হানিফ সিদ্দিকী, সায়েদা দুররাক সিনদা জারা, আহমেদ ইফজাল চৌধুরী, ফারহানা মোনেম, ফারজানা আনজুম খান, কে এইচ মশিউর রহমান, এম এ সালাম, মো. আলী হোসেন, মোহাম্মদ ইমদাদুল হক ভরসা, মোহাম্মদ ইমরান, মোহাম্মদ রোহেন কবীর, মনজিলা মোর্শেদ, মোহাম্মদ সানাউল্যাহ চৌধুরী, মোহাম্মদ সরফুল ইসলাম, সৈয়দ রফিকুল আলম ও আনিসুজ্জামান চৌধুরী।

সম্পর্কিত নিবন্ধ