পিরোজপুরে নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধীদের হাতাহাতি, ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান
Published: 12th, January 2025 GMT
পিরোজপুরে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের পক্ষে লিফলেট বিতরণের সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি নেতা-কর্মীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শহরের টাউন ক্লাব মাঠে এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় দুই পক্ষ একে অপরকে ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে স্লোগান দেন।
আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পিরোজপুর পুরোনো বাসস্ট্যান্ড এলাকায় জাতীয় নাগরিক কমিটির মুছাব্বির হোসেনের নেতৃত্বে লিফলেট বিতরণ করেন নেতা-কর্মীরা। অন্যদিকে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শহরের শহীদ মিনার চত্বর থেকে লিফলেট বিতরণ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পিরোজপুরের প্রতিনিধি জাবিদ হাসানসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী। উভয় পক্ষের নেতা-কর্মীরা কিছুক্ষণ পর একই সময়ে শহরের টাউন ক্লাব মাঠে প্রবেশ করেন। এ সময় দুই পক্ষ একে-অপরকে ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে স্লোগান দিতে শুরু করে। একপর্যায়ে তাঁদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
ঘটনার সময় জাতীয় নাগরিক কমিটির জেলা কমিটির সঙ্গে নাজিরপুর উপজেলা কমিটির সংগঠক সানজিদা আক্তার, ইন্দুরকানি উপজেলা কমিটির শহিদুল ইসলামসহ শতাধিক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে কিছু নেতা-কর্মী ছিলেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি মুইন উদ্দিন বলেন, ‘এখন যাঁরা নাগরিক কমিটির প্রতিনিধি দাবি করছেন, তাঁরা ৫ আগস্টের আগে সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তাঁরা এখন আওয়ামী লীগকে সুযোগ করে দিতে আবার রাস্তায় নামছেন।’
ছাত্র প্রতিনিধি আফরোজা আকতার বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি একই সূত্রে গাঁথা। সারা বাংলাদেশে দুটি সংগঠন একই সঙ্গে কর্মসূচি আসছে। কিন্তু পিরোজপুরে যারা জাতীয় নাগরিক কমিটির কমিটিতে আছেন, তাঁদের তাঁরা মেনে নিতে পারছেন না। এ জন্য তাঁরা আলাদা কর্মসূচি পালন করছেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘তাঁদের মন এত ছোট যে পাঁচ হাজার লিফলেট আসছে, এর মধ্যে মাত্র ৪০০ লিফলেট আমাদের দিয়েছেন। এসব কারণে তাঁদের সঙ্গে আমরা একসঙ্গে কর্মসূচি পালন করতে পারি না।’
এ বিষয়ে নাগরিক কমিটির মুছাব্বির হোসেন বলেন, ‘আমরা ৫ আগস্টের আগে থেকে রাস্তায় আন্দোলন করে আসছি। এখন যারা ছাত্র প্রতিনিধি দাবি করছে, তারা আগে কোথায় ছিল? আমরা আগস্টের শুরুর দিকে তাদের কোথাও দেখিনি। এখন তারা কমিটিতে নাম লেখানোর জন্য আমাদের বিভিন্ন সময় ডিস্টার্ব করে আসছে। আজকের আগে তারা বিভিন্ন সময় আমাদের বাধা দিয়েছে। তারা লোক হলো মাত্র ১০ জন, সবাই পদ চায়। তাদের মধ্যে গ্রুপ ছয়টি। তাদের চাওয়া হলো, পিরোজপুরে যেন নাগরিক কমিটির কমিটি না হয়।’
পিরোজপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুস সোবাহান বলেন, আজ লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি ছিল ছাত্রদের। সেখানে ছাত্রদের মধ্যে একটি বিষয় নিয়ে ভুল-বোঝাবুঝি তৈরি হয়। এখন পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ইতালির কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে দুইজনকে গুলি করে হত্যা
ইতালির কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে ফরিদপুরের দুই যুবককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এমনকি হত্যার পর পরিবারের সদস্যদের হোয়াটসঅ্যাপে তাদের ছবি পাঠানো হয়।
নিহত দুই যুবক হলেন- ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের কুমারখালী গ্রামের মিন্টু হাওলাদারের ছেলে হৃদয় হাওলাদার (২৪) ও মজিবর হাওলাদারের ছেলে রাসেল হাওলাদার (২৬)।
হৃদয়ের বাবা মিন্টু হাওলাদার বলেন, দু’মাস আগে স্থানীয় আবু তারা মাতুব্বর, আলমাছ ও আনোয়ারের মাধ্যমে ১৬ লাখ টাকা দিয়ে ছেলেকে বিদেশ পাঠাই। ছেলেকে প্রথমে দুবাই সেখান থেকে সৌদি আরব তারপর লিবিয়া নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে হৃদয়কে হত্যা করা হয়েছে।
হৃদয়ের বড় ভাই মোখলেছুর রহমান বলেন, ৪/৫ দিন ধরে হৃদয়ের কোন খোঁজ পাচ্ছিলাম না। দালালরা শুক্রবার দুপুরে আমার ভাইয়ের লাশের ছবি পাঠিয়েছে। ১৬ লাখ টাকা দেওয়ার পরও বিদেশ থেকে ফোন করে আরও টাকা দাবি করছিল পাচারচক্র। টাকা না দেওয়ায় ওরা আমার ভাইকে খুন করেছে।
একই গ্রামের ফয়সাল হোসেন বলেন, রাসেল নামের আরও একজনকেও লিবিয়াতে হত্যা করা হয়েছে। ওরা একই গ্রামের বাসিন্দা। ওই মানবপাচার চক্র এভাবে মানুষকে জিম্মি করে টাকা আদায় করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছে। টাকা না দিলেই তাদের সাথে খারাপ কিছু ঘটানো হয়। কখনও নির্যাতন করে আবার কখনও হত্যা করে।
ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানার ওসি মো. মোকসেদুর রহমান বলেন, ভাঙ্গার দুটি ছেলেকে লিবিয়ায় গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে শুনেছি। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় এখনও লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়নি। ওই পরিবারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করছি। তাদের সঙ্গে আলোচনা করে দালালচক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।