পিরোজপুরে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের পক্ষে লিফলেট বিতরণের সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি নেতা-কর্মীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শহরের টাউন ক্লাব মাঠে এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় দুই পক্ষ একে অপরকে ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে স্লোগান দেন।

আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পিরোজপুর পুরোনো বাসস্ট্যান্ড এলাকায় জাতীয় নাগরিক কমিটির মুছাব্বির হোসেনের নেতৃত্বে লিফলেট বিতরণ করেন নেতা-কর্মীরা। অন্যদিকে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শহরের শহীদ মিনার চত্বর থেকে লিফলেট বিতরণ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পিরোজপুরের প্রতিনিধি জাবিদ হাসানসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী। উভয় পক্ষের নেতা-কর্মীরা কিছুক্ষণ পর একই সময়ে শহরের টাউন ক্লাব মাঠে প্রবেশ করেন। এ সময় দুই পক্ষ একে-অপরকে ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে স্লোগান দিতে শুরু করে। একপর্যায়ে তাঁদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

ঘটনার সময় জাতীয় নাগরিক কমিটির জেলা কমিটির সঙ্গে নাজিরপুর উপজেলা কমিটির সংগঠক সানজিদা আক্তার, ইন্দুরকানি উপজেলা কমিটির শহিদুল ইসলামসহ শতাধিক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে কিছু নেতা-কর্মী ছিলেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি মুইন উদ্দিন বলেন, ‘এখন যাঁরা নাগরিক কমিটির প্রতিনিধি দাবি করছেন, তাঁরা ৫ আগস্টের আগে সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তাঁরা এখন আওয়ামী লীগকে সুযোগ করে দিতে আবার রাস্তায় নামছেন।’

ছাত্র প্রতিনিধি আফরোজা আকতার বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি একই সূত্রে গাঁথা। সারা বাংলাদেশে দুটি সংগঠন একই সঙ্গে কর্মসূচি আসছে। কিন্তু পিরোজপুরে যারা জাতীয় নাগরিক কমিটির কমিটিতে আছেন, তাঁদের তাঁরা মেনে নিতে পারছেন না। এ জন্য তাঁরা আলাদা কর্মসূচি পালন করছেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘তাঁদের মন এত ছোট যে পাঁচ হাজার লিফলেট আসছে, এর মধ্যে মাত্র ৪০০ লিফলেট আমাদের দিয়েছেন। এসব কারণে তাঁদের সঙ্গে আমরা একসঙ্গে কর্মসূচি পালন করতে পারি না।’

এ বিষয়ে নাগরিক কমিটির মুছাব্বির হোসেন বলেন, ‘আমরা ৫ আগস্টের আগে থেকে রাস্তায় আন্দোলন করে আসছি। এখন যারা ছাত্র প্রতিনিধি দাবি করছে, তারা আগে কোথায় ছিল? আমরা আগস্টের শুরুর দিকে তাদের কোথাও দেখিনি। এখন তারা কমিটিতে নাম লেখানোর জন্য আমাদের বিভিন্ন সময় ডিস্টার্ব করে আসছে। আজকের আগে তারা বিভিন্ন সময় আমাদের বাধা দিয়েছে। তারা লোক হলো মাত্র ১০ জন, সবাই পদ চায়। তাদের মধ্যে গ্রুপ ছয়টি। তাদের চাওয়া হলো, পিরোজপুরে যেন নাগরিক কমিটির কমিটি না হয়।’

পিরোজপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুস সোবাহান বলেন, আজ লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি ছিল ছাত্রদের। সেখানে ছাত্রদের মধ্যে একটি বিষয় নিয়ে ভুল-বোঝাবুঝি তৈরি হয়। এখন পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

আড়াইহাজারে গৃহবধূকে গলাকেটে হত্যা, স্বামী আটক

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে সুলেখা বেগম (৪৫) নামে গৃবধূকে গলাকেটে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী রউফ মিয়ার বিরুদ্ধে। তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছেন এলাকাবাসী। হত্যায় ব্যবহৃত শাবল ও ছুরি জব্দ করেছে পুলিশ।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) সকাল ১১টার দিকে উপজেলার হাইজাদী ইউনিয়নের নারান্দী গ্রামে ঘটনাটি ঘটে বলে জানান আড়াইহাজার থানার ওসি এনায়েত হোসেন।

নিহত সুলেখা বেগম উপজেলার কলাগাছিয়া নয়াপাড়া গ্রামের আব্দুল মিয়ার মেয়ে। অভিযুক্ত পাশ্ববর্তী নারান্দী গ্রামের মৃত চান মিয়ার ছেলে রউফ মিয়া।

আরো পড়ুন:

রাউজানে যুবদল কর্মীকে মাথায়-বুকে গুলি করে হত্যা

নরসিংদীতে ইউপি সদস্যকে কুপিয়ে হত্যা

এলাকাবাসী জানান, ২০ বছর আগে নারান্দী গ্রামের মৃত চান মিয়ার ছেলে রউফ মিয়ার সঙ্গে বিয়ে হয় সুলেখা বেগমের। কয়েক বছর ধরে এই দম্পতির মধ্যে পারিবারিক বিভিন্ন বিষয়ে কলহ চলছিল।

বুধবার সকালে বাড়িতে সুলেখা বেগম ঘুমিয়ে ছিলেন। এসময় রউফ মিয়া শাবল দিয়ে আঘাত করে সুলেখা বেগমকে অজ্ঞান করেন। পরে ছুরি দিয়ে স্ত্রীকে গলাকেটে হত্যা করেন তিনি।

আড়াইহাজার থানার ওসি এনায়েত হোসেন বলেন, “পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। অভিযুক্ত স্বামীকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।”

ঢাকা/অনিক/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ