ঢাকা পর্বে একটি ম্যাচই খেলেছে সিলেট স্ট্রাইকার্স। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সেই ম্যাচে ওপেনার রনি তালুকদারের ৩৬ বলে ৪১ রান ছাড়া তেমন কিছু করতে পারেননি সিলেটের আর কোনো ব্যাটসম্যান। তবে ঘরের মাঠে ফিরেই রান পেতে শুরু করেছে দলটির ব্যাটসম্যানরা। বিশেষ করে জাকির হাসান। জাকির রান পেতে শুরু করেছেন, সিলেটও ফিরেছে জয়ের ধারায়।

সিলেট পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই ফিফটি পেয়েছেন জাকির, ফিফটি পেয়েছেন রনিও। সেই ম্যাচে ৪ উইকেটে ২০৫ রান করেও অবশ্য ৮ উইকেটে হেরেছে সিলেট। ঘরের মাঠে দ্বিতীয় ম্যাচে আবার তেমন রান পাননি সিলেটের ব্যাটসম্যানরা, বরিশালের কাছে সিলেটও হেরেছে। পরের ম্যাচে জাকিরের ফিফটিতে (২৭ বলে ৫৮ রান) ঢাকাকে হারিয়েছে সিলেট। আজ আবার ফিফটি করেছেন জাকির। ৪৬ বলে ৩ চার ও ৬ ছক্কায় তাঁর অপরাজিত ৭৫ রানের ইনিংসের সৌজন্যেই খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে সিলেট জিতেছে ৮ রানে।

টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে রনি (৪৪ বলে ৫ চার ও ২ ছয়ে ৫৬ রান) ও জাকিরের ফিফটিতে ৫ উইকেটে ১৮২ রান তোলে সিলেট। ১৫ রানের মধ্যে সিলেট ২ উইকেট হারিয়ে ফেলার পর তৃতীয় উইকেট জুটিতে রনি ও জাকির মিলে ৬১ বলে তোলেন ১০৬ রান। এ জুটিই মূলক ম্যাচটি জিতিয়েছেন সিলেটকে।  

রান তাড়া করতে নেমে ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৭৪ রান তুলতে পারে খুলনা। রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি দলটির, ১৭ রানে প্রথম উইকেট হারায় তারা। খুলনা ২৪ রানে দ্বিতীয় আর ৪৭ রানে তৃতীয় উইকেট হারানোর পর গ্যালারি উল্লাসে ফেটে পড়ে। কিন্তু চতুর্থ উইকেটে উইলিয়াম বোসিস্টো ও অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজের ৩৩ বলে ৩৪ রানের জুটি কিছুটা হলেও সিলেটের সমর্থকদের উল্লাসে ভাটা আনে। কিন্তু ১৭ রানের মধ্যে এ দুজনই ফিরে গেলে ৫ উইকেটে ৯৮ রান হয়ে যায় খুলনা।

সিলেটের তখন ৪০ বলে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৮৫ রান। ম্যাচটা সামান্য হলেও সিলেটের দিকেই ঝুঁকে ছিল। সেটা খুলনার দিকে অনেকটাই নিয়ে গিয়েছিলেন মোহাম্মদ নেওয়াজ ও মাহিদুল ইসলাম। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ১৭ বলে ৩২ রান করেন তাঁরা। জুটি ভাঙে তানজিম হাসানের বলে নেওয়াজের আউটে। আউট হয়ে ফেরার সময় তানজিমের সঙ্গে একটু কথা-কাটাকাটিও হয় নেওয়াজের। এই তর্কের কারণ উইকেট পাওয়ার পর তানজিমের উদ্দাম উদ্‌যাপন। আর তানজিমের অমন উদ্‌যাপনের কারণ আউট হওয়ার আগে তাঁর এক ওভারে এক ছয় ও দুই চারে ১৭ রান নিয়েছিলেন নেওয়াজ।

নেওয়াজের আউটের পরও খুলনাকে জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন আবু হায়দার। শেষ ওভারে খুলনার জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ১৯ রান। মাহিদুল প্রথম বলে সিঙ্গেল নিলে স্ট্রাইক পান আবু হায়দার। টানা দুটি চার মারেন তিনি। খুলনার তখন ৩ বলে ১০ রানের। কিন্তু রুয়েল মিয়ার চতুর্থ বলে ছক্কা মারতে গিয়ে সীমানার কাছে ক্যাচ হয়ে ফেরেন আবু হায়দার। পরের বলে মাহিদুল হন রানআউট। শেষ বলে নাসুম ১ রান নিলে ৮ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে সিলেট।

সিলেটের এটা টানা দ্বিতীয় জয়। সব মিলিয়ে ৫ ম্যাচ খেলে দুই জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে সাত দলের মধ্যে ষষ্ঠ স্থানে আছে সিলেট। চার ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে খুলনা আছে চারে।
৬ ম্যাচের সব কটি জিতে ১২ পয়েন্ট নিয়ে সবার ওপরে রংপুর রাইডার্স। ৫ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে ফরচুন বরিশাল আছে দ্বিতীয় স্থানে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

আমার সম্মান নিয়ে কেউ খেলবে, এটা কখনো ছাড় দেই না

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) প্যামেন্ট ইস্যু ছাড়াও আলোচনার কেন্দ্রে আছে ফিক্সিংও। বেশ কিছু ক্রিকেটার সন্দেহের তালিকায় আছেন এমন সংবাদ মাঝপথ থেকে শোনা যাচ্ছে। এর মধ্যে একটি গণমাধ্যম ১০ ক্রিকেটারের নাম প্রকাশ করে একটি প্রতিবেদন করে। প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, তাদের ফিক্সিং সন্দেহে জেরা করা হচ্ছে।

তবে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) ও বিসিবির দূর্নীতি দমন সংস্থা (আকসু) কোনো ক্রিকেটারের তালিকা আনুষ্ঠানিকভাবে কোথাও প্রকাশ করেনি। সন্দেহের তালিকায় থাকা ক্রিকেটারদের মধ্যে একজন মোহাম্মদ মিথুন। যিনি এবার চিটাগং কিংসকে দিচ্ছেন নেতৃত্ব।

এমন সংবাদ দেখার পর মিথুন হতভম্ব হয়ে যান। এরপর শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন মিথুন। তাতে কড়াভাবে অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে আইনি পথে হাঁটার আভাসও দিয়েছেন চিটাগংয়ের অধিনায়ক।

আরো পড়ুন:

শরিফুলের ক্যারিয়ার সেরা বোলিং, ৫ রানে ৪ উইকেট

বিপিএলে খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক ইস্যুতে ‘সত্যানুসন্ধান কমিটি’ 

“বাসে ওঠার পরে আমি নিউজটা দেখি, আপনি যদি প্রতিক্রিয়া জানতে চান আমার কিন্তু একবারও মন খারাপ হয়নি বা আমার ভেতরে কোনো শঙ্কা কাজ করেনি। কারণ আমি জানি আমি কী। আমার ভেতরে কী আছে আমার থেকে ভালো কেউ জানে না।”

“বিষয় হচ্ছে আমি জানি আমি কী, আমার পরিবার, বন্ধুরা জানে কিন্তু দুনিয়া জানে না আমি কী। আপনার একটা নিউজের কারণে কিন্তু আমার সম্মানহানি হচ্ছে। আমার যে ১৫ বছরের সম্মান, সেই সম্মানটা নষ্ট হচ্ছে। আপনি যদি একটা ভিউয়ের জন্যে নিউজ করেন, আপনি হয়ত ৫০ হাজার টাকা ইনকাম করতে পারেন কিন্তু এটা আমার কাছে ৫০ কোটি টাকার থেকেও বেশি। আমার মানহানি মানে...কারণ এই বিষয়টাতে আমি কখনও ছাড় দিই না। আমার সম্মান নিয়ে কেউ খেলবে এটা নিয়ে আমি কোন ছাড় দিই না”

বিপিএলের প্রতিটি ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গে আইসিসি অ্যান্টি করাপশন ইউনিটের (আকসু) একজন করে প্রতিনিধি আছেন। চিটাগংয়ের সঙ্গে থাকা সেই প্রতিনিধি মিথুনের কাছে এসে তাকে আইনি পথে যাওয়ার পরামর্শ দেন।

“উনি (আকসু প্রতিনিধি) এসে আমাকে বলেছে ভাইয়া আমি খুব লজ্জিত অনুভব করছি। আপনি এটার বিরুদ্ধে অ্যাকশনে যান। ওনার যদি আমার প্রতি ওতটুকু বিশ্বাস না থাকত তাহলে উনি এ কথা বলতো না। আমার বিশ্বাস তো আমি জানি কী বিশ্বাস আছে। কিন্তু আমাদের দলের সঙ্গে যে প্রতিনিধি দেওয়া আছে ওনারও আমার প্রতি কতটুকু বিশ্বাস উনি নিজেই বলছে আপনার জন্য...আমি কিন্তু উনার কাছে যাইনি, উনি এসেছে আমার কাছে। আমি যদি অপরাধী হই বা আমার মাঝে যদি এমন কিছু উনি দেখে তাহলে অবশ্যই উনি এসে আমাকে এই কথা বলতো না।”

মিথুনের নেতৃত্বে চিটাগং কিংস নিশ্চিত করেছে প্লে-অফ। শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) নিজেদের শেষ ম্যাচ খেলতে নামবে ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে। ব্যাট হাতেও মিথুন সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ৩২.৩৭ গড়ে চিটাগংয়ের সেরা তিন ব্যাটারের মধ্যে তৃতীয় অবস্থানে আছেন তিনি।

ঢাকা/রিয়াদ/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ