চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্য কোটা বহালের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো মানববন্ধন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির কর্মকর্তা–কর্মচারীরা। আজ রোববার দুপুরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ মানববন্ধন হয়। এতে বক্তারা পোষ্য কোটা বহালের দাবি জানিয়েছেন।

একই দাবিতে বৃহস্পতিবারও মানববন্ধন করেছিলেন কর্মকর্তা–কর্মচারীরা। ওই দিন পোষ্য কোটা বহাল না রাখলে কঠোর আন্দোলনে যাওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তাঁরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের ব্যানারে আজ সকালে এ কর্মসূচি হচ্ছে। পোষ্য কোটা বহালের দাবিতে সম্প্রতি এই প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছেন তাঁরা। পাশাপাশি আন্দোলন পরিচালনায় ১৪ সদস্যর একটি সমন্বয়ক দলও গঠন করা হয়েছে।

মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো.

হাছান মিয়া বলেন, কমবেশি প্রতিটি সরকারি চাকরিতে কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাঁদের সন্তানদের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়ে থাকে। সেনাবাহিনী, রেলওয়ে—সব জায়গায় এটি রয়েছে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাঁদের কোনো বৈরিতা নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার তাঁরা সব চেষ্টা করছেন। তিনি আশা করেন, প্রশাসন ও শিক্ষার্থীরা পোষ্য কোটাবিরোধী মনোভাব থেকে সরে আসবেন।

প্রকৌশল দপ্তরের ডেপুটি রেজিস্ট্রার খালেদুর রহমান বলেন, ছাত্ররা পোষ্য কোটা বাতিলে অবস্থান নিচ্ছেন। ছাত্রদের সঙ্গে তাঁদের অবস্থান সাংঘর্ষিক নয়। ছাত্ররা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিয়ম নিয়ে কর্মসূচি পালন করলে তাঁরা সঙ্গে থাকবেন। কোটার আসন আর সাধারণ আসন এক নয়। আলাদা মেধাতালিকায় তাঁদের সন্তানেরা ভর্তি হয়ে থাকেন। তাঁরা মেধাহীন নন। পাস করার পর ভর্তি হচ্ছে।

এর আগে গত বুধবার দুপুরে পোষ্য কোটা বাতিলে দাবিতে অনশন শুরু করেছিলেন সাত শিক্ষার্থী। পরে তাঁরা দিবাগত রাত দেড়টার দিকে অনশন প্রত্যাহার করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের আশ্বাসে এ কর্মসূচি থেকে সরে আসেন তাঁরা। রোববারের মধ্যে পোষ্য কোটা বাতিল না করা হলে আবার অনশন করার ঘোষণাও দিয়েছেন তাঁরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পোষ্য কোটা বাতিলের আন্দোলন শুরু হয়েছিল ২৯ ডিসেম্বর। ওই দিন শিক্ষার্থীরা এই কোটা বাতিল, আবেদন ফি কমানো, চাকসু নির্বাচন দেওয়াসহ ৯ দাবিতে মানববন্ধন করেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কার আন্দোলনের ব্যানারে এ কর্মসূচি হয়। আন্দোলনের এক পর্যায়ে ২ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে প্রশাসন দাবি না মানায় গত রোববার আবার আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। পরে সোমবার শিক্ষার্থী, ছাত্রদল, ছাত্রশিবির ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের নিয়ে আবার বৈঠকে বসে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ বৈঠকে পোষ্য কোটা বাতিল না করে কমানোর সিদ্ধান্তের কথা শিক্ষার্থীদের জানানো হয়। পরে ছাত্রসংগঠনের প্রতিনিধিরা এতে সম্মতি দেন। তবে এ সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে মঙ্গলবার থেকে আবার আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীদের আরেকটি অংশ।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে অনশনে তিতুমীরের শিক্ষার্থীরা, রাস্তা অবরোধ

রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে দীর্ঘদিনের আন্দোলনের অংশ হিসেবে নতুন কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা। ২০ ঘণ্টা ধরে অনশন করছেন তারা। একই দাবিতে শিক্ষার্থীরা তিতুমীর কলেজের প্রধান ফটকের সামনে ও মহাখালীর আমতলী মোড়ে রাস্তা অবরোধ করেছেন।

তিতুমীরের ৫ শিক্ষার্থী বুধবার (২৯জানুয়ারি) বিকেল ৫টায় অনশন শুরু করেন। ‘তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবিতে আমরণ অনশন’ লেখা ব্যানার টাঙিয়ে কলেজের মূল ফটকের সামনে অনশনে বসেন তারা। তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরসহ সাতটি দাবি তাদের।

অনশনরত গণিত বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আমিনুল ইসলাম বলেছেন, “বুধবার বিকেল থেকে আমরা অনশন করছি। কিন্তু, এখনো আমাদের সাথে সরকারের কোনো প্রতিনিধি যোগাযোগ করেননি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাব। অনশনের চেয়ে বড়  কোনো কর্মসূচি হতে পারে না।”

আরেক শিক্ষার্থী বলেন, “রাষ্ট্রপক্ষের দ্বিচারিতাকে আমরা ধিক্কার জানাই। সাত কলেজসহ কোনো প্রকার কাঠামোতে আমরা যাব না। আমাদের দাবি— স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়।”

অনশনরত শিক্ষার্থীদের সাত দাবির মধ্যে আছে—রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠন করে ২০২৪-২০২৫ সেশনে ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা, শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত না হলে আবাসিক খরচ বহন করা, ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকেই আইন ও সাংবাদিকতা বিভাগ খোলা, একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন পিএইচডি ডিগ্রিধারী শিক্ষক নিয়োগ, শিক্ষার মান বাড়াতে আসন সংখ্যা সীমিত করা এবং আন্তর্জাতিক মানের গবেষণাগার নির্মাণে জমি ও আর্থিক বরাদ্দ নিশ্চিত করা।

অনশনে থাকা অন্য শিক্ষার্থীরা হলেন—তিতুমীর কলেজের গণিত বিভাগের এফ রায়হান, বেল্লাল হাসান, রাশেদুল ইসলাম রাশেদ ও রানা আহমেদ।

তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরে গত সোমবার মধ্যরাতে সরকারকে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা। তা না হলে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মহাখালীতে সড়ক ও রেলপথ অবরোধের ঘোষণা দিয়েছিলেন তারা।

তবে, বুধবার বিকালে অনশনরত শিক্ষার্থীরা জানিয়েছিলেন যে, তারা অবরোধ কর্মসূচি থেকে সরে এসেছেন।

তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে এর আগে নানা কর্মসূচি পালনের পর গত ৭ জানুয়ারি কলেজের প্রধান ফটকে ‘তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়’ লেখা ব্যানার টাঙিয়ে দেন আন্দোলনকারীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে গত ১৮ নভেম্বর মহাখালীর আমতলী, কাঁচাবাজার ও রেলক্রসিংয়ে শত শত শিক্ষার্থী জড়ো হয়ে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন। পরদিন ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে ‘ক্লোজডাউন তিতুমীর' কর্মসূচি দেন শিক্ষার্থীরা।

এরপর ৩ ডিসেম্বর তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

ঢাকা/উম্মে হাফছা/হাসান/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুমার নামাজের পর তিতুমীরের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ 
  • তিতুমীরের শিক্ষার্থীদের অনশন চলছে
  • অনশনে শিক্ষার্থীরা, তিতুমীরের কর্মকর্তারা
  • শেখ হাসিনার ফাঁসির দাবিতে চট্টগ্রামে অনশনে বৈষম্যবিরোধীরা
  • ৫ দাবিতে নোবিপ্রবির ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
  • জবি শিক্ষার্থীদের উপর ছাত্রদল কর্মীর নেতৃত্বে হামলার অভিযোগ, প্রতিবাদে বিক্ষোভ
  • সেন্টমার্টিনে পর্যটক উন্মুক্ত রাখার দাবি
  • অনশন: তিতুমীরের ৩ শিক্ষার্থী হাসপাতালে 
  • বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে অনশনে তিতুমীরের শিক্ষার্থীরা, রাস্তা অবরোধ
  • সাদ্দা‌মের ফাঁসির দাবিতে দে‌বিদ্বা‌রে বি‌ক্ষোভ